জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীদের আবাসন সংকট নিরসনে প্রতিশ্রুত সম্পূরক বৃত্তির সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ প্রকাশের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেল। অন্যদিকে একই দাবিতে প্রশাসনকে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়ে ৮ দিনের আল্টিমেটাম দিয়েছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির।
রোববার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে ছাত্রদল সমর্থিত ঐক্যবদ্ধ নির্ভীক জবিয়ান প্যানেল। একই দিনে উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি দিয়ে ৪ দফা দাবি পেশ করে রফিক ভবনের নিচে সংবাদ সম্মেলন করে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবির।
অবস্থান কর্মসূচিতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানুয়ারিতে বৃত্তি প্রদানের আশ্বাস দেওয়া হলেও তালিকা প্রকাশ বা বিতরণের প্রক্রিয়া চূড়ান্ত না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করে প্যানেলটির ভিপি পদপ্রার্থী এ কে এম রাকিব বলেন, প্রশাসন বলছে জানুয়ারিতে বৃত্তি দেবে। কিন্তু টাকা আসা মাত্রই তো আর হুট করে দেওয়া যায় না। এর জন্য পরিকল্পনা ও তালিকা প্রকাশ প্রয়োজন। জানুয়ারিতে বৃত্তি দিতে হলে এখনই বিষয়গুলো পরিষ্কার থাকা উচিত ছিল।’
তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, আজকের সিন্ডিকেট মিটিং থেকে যদি শিক্ষার্থীদের পক্ষে ফলপ্রসূ কোনো সিদ্ধান্ত না আসে, তবে আমাদের আন্দোলন আরও কঠোর হবে।
এদিকে, রফিক ভবনের নিচে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে জবি শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি রিয়াজুল ইসলাম প্রশাসনকে ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে বৃত্তির তালিকা প্রকাশের সময়সীমা বেঁধে দেন এবং তার আগে ৪ দফা দাবি সম্বলিত একটি স্মারকলিপি উপাচার্য বরাবর পেশ করেন।

রিয়াজুল ইসলাম বলেন, গত ১৭ মে থেকে আন্দোলনের পর সরকার বৃত্তির সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু আবেদনের দেড় মাস পেরিয়ে গেলেও তালিকা প্রকাশ করা হয়নি। আমরা স্পষ্ট ভাষায় জানাতে চাই, আজকের অর্থ কমিটির মিটিং থেকে শিক্ষার্থীদের স্বার্থবিরোধী কোনো সিদ্ধান্ত এলে যথাযথ জবাব দেওয়া হবে।’
জকসু নির্বাচন ও দ্বিতীয় ক্যাম্পাস প্রসঙ্গে তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন বারবার তারিখ পরিবর্তন করে শিক্ষার্থীদের একাডেমিক ক্যালেন্ডার ও পরীক্ষার সময়সূচি বিপর্যস্ত করছে। এছাড়া ৮ বছর ধরে দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজে দৃশ্যমান অগ্রগতি না হওয়ায় এর দ্বিতীয় ধাপের কাজও সেনাবাহিনীর মাধ্যমে সম্পন্ন করতে হবে।
ছাত্রশিবির চার দফা দাবি জানিয়েছে। তাদের দাবি হচ্ছে—আগামী ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে বৃত্তির চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ এবং জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে বৃত্তির টাকা প্রদান, ৩০ ডিসেম্বর যেকোনো পরিস্থিতিতে জকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত করা, ডিসেম্বর মাসের মধ্যেই দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের দ্বিতীয় ধাপের কাজ সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তর, এবং দ্রুত সময়ের মধ্যে দ্বিতীয় ক্যাম্পাসে অস্থায়ী আবাসন নির্মাণ।
প্রসঙ্গত, গত মে মাসে লং মার্চ টু যমুনা এবং সেপ্টেম্বরে আবাসন বৃত্তিসহ ৩ দফা দাবিতে অনশন কর্মসূচি ও শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীকে সম্পূরক আবাসন বৃত্তি দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছিল। তবে দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও কোনো সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ বা তালিকা প্রকাশ না হওয়ায় ক্যাম্পাসে উত্তেজনা বিরাজ করছে।

