মরিচঝাঁপি গণহত্যার ছায়া অবলম্বনে ‘ফেউ’

বিনোদন ডেস্ক
প্রকাশ : ১৩ জানুয়ারি ২০২৫, ১৫: ০১

১৯৭৯ সালের জানুয়ারি থেকে মে মাসে সুন্দরবনে মানবতাকে নৃশংসভাবে খুন করার মধ্য দিয়ে রচিত হয় মরিচঝাঁপি গণহত্যার ইতিহাস। পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ পরগনা জেলার দ্বীপ মরিচঝাঁপি। দেশ ভাগ ও মুক্তিযুদ্ধের সময় অনেক মানুষ শরণার্থী হয়ে ভারতে পাড়ি জমান। নানা ঘাতপ্রতিঘাত পেরিয়ে নিম্নবর্ণের (নমঃশূদ্র) হিন্দু ধর্মাবলম্বীর একটি অংশ এসে আশ্রয় নেয় মরিচঝাঁপিতে। সরকারি আশ্বাসেই সেখানে আবাস গড়ে তোলেন তারা। কিন্তু ভোটের আগের রাজনীতি রূপ পাল্টায় ভোটের পরে। শুরু হয় উদ্বাস্তু উচ্ছেদ।

বিজ্ঞাপন

শরণার্থী উচ্ছেদ করতে মরিচঝাঁপিতে খাবার ও পানি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। ঘরে আগুন দেওয়া, নৌকা ডোবানোসহ নির্বিচারে মানুষ হত্যার ঘটনা ঘটে। এতে করে তৎকালীন ভারতের রাজ্য সরকার নিন্দিত হলেও কিছু আসেযায়নি তাদের। ১৯৭৯ সালের ১৬ মে তারা মরিচঝাঁপিকে উদ্বাস্তু শূন্য করতে সক্ষম হয়। সরকারি হিসাবে সেখানে মোট নিহতের সংখ্যা মাত্র দুজন হলেও বিভিন্ন হিসাবে মৃতের সংখ্যা হাজার ছাড়ায়।

এই ইতিহাসের অনুপ্রেরণায় নির্মিত হয়েছে ওয়েব সিরিজ ‘ফেউ’। ওটিটি প্ল্যাটফর্ম চরকির জন্য এটি নির্মাণ করেছেন সুকর্ন সাহেদ ধীমান। পরিচালক বলেন, ‘সুন্দরবনে তো অনেক গল্প; বনবিবির গল্প, ডাকাতের গল্প, স্থানীয় মিথ। কিন্তু আমি খুঁজেছি ওই অঞ্চলের রাজনীতি। সেখান থেকেই গল্পটি নিয়ে কাজ করা।’

সুকর্ন সাহেদ ধীমান জানান, ২০১৬ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে তিনি এসব তথ্য সংগ্রহ করেছেন, এগিয়েছে গল্প বুননের কাজ। ধীমান বলেন, ‘২০২১ সালে আমার মনে হয় এটি দিয়ে আমি কিছু নির্মাণ করতে চাই। ২০২২ সালের ডিসেম্বরে গল্পটা লক করি। চিত্রনাট্যের ১৭টি ড্রাফট করার পর আমরা কাজ শুরু করতে পেরেছি।’

’ফেউ’-এর প্রেক্ষাপট ইতিহাসনির্ভর হলেও সিরিজটি ফিকশনাল। এর গল্প লিখেছেন সুকর্ন সাহেদ ধীমান, রোমেল রহমান আর চিত্রনাট্য করেছেন সুকর্ন সাহেদ ধীমান, সিদ্দিক আহমেদ। ইতিহাসের সঙ্গে নিজের দেখা চরিত্র, নিজের জানা ঘটনা, নিজের অঞ্চলের গল্প সিরিজে তুলে ধরেছেন বলে জানান নির্মাতা।

ধীমান বলেন, ‘আমরা একটি সত্য ঘটনার ছায়া অবলম্বন করেছি, অনুপ্রেরণা নিয়েছি। সেটা এই সিরিজের মূল কেন্দ্র। তবে সেই কেন্দ্রকে আবর্তিত করে যত কিছু, তার সবটাই আমার দেখা–জানা মোংলার মানুষ, তাদের জীবন ও রাজনীতি থেকে নেওয়া অভিজ্ঞতা।’

শনিবার রাতে প্রকাশ পেয়েছে সিরিজের অ্যানাউন্সমেন্ট টিজার। যার ক্যাপশনে লেখা, ‘কী ঘটেছিল ১৯৭৯ সালে? কী লুকানো হয়েছে আমাদের কাছ থেকে? চরকিতে শিগগিরই আসছে সত্য ঘটনা থেকে অনুপ্রাণিত চরকি অরিজিনাল সিরিজ ফেউ।’

অ্যানাউন্সমেন্ট টিজারে কোনো চরিত্র প্রকাশ করা হয়নি। তবে এটি যে শরণার্থীদের নিয়ে কোনো কাহিনি, তা স্পষ্ট। কারণ টিজারে একটি সংলাপ ব্যবহার করা হয়েছে। সেটি এমন, ‘রিফিউজিগো দ্যাশ-জাত বইলে কিছু আছে নাকি! আমরা তো মন্দিরের ঘণ্টার মতো। যে বাজায় খালি বাইজে যাই।’

পুরো টিজারে ছোট ছোট দৃশ্যে বোঝানো হয়েছে গল্পটির অঞ্চলগত বৈশিষ্ট্য। ছোট-বড় নৌকা, ঘন জঙ্গল, কিছু মানুষের ধস্তাধস্তি, উদযাপনের মতো দৃশ্যও আছে টিজারে। এসবের ব্যাখ্যা এখনই দিতে চাননি পরিচালক। জানিয়েছেন, ধীরে ধীরে পুরোটাই উন্মোচিত হবে দর্শকের সামনে। খুব শিগগিরই সিরিজটি প্রচার হবে বলে জানান এই নির্মাতা।

অসদাচারণের দায়ে টঙ্গী পাইলট স্কুলের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে শোকজ

জরুরি অবস্থা জারি করলেন পেরুর প্রেসিডেন্ট

গুম-খুনে জড়িত ১৫ সেনা কর্মকর্তা চাকরিচ্যুত। ট্রাইব্যুনালে হাজির। সাবজেলে প্রেরণ

এবার ১ টাকায় গরুর মাংস বিতরণের ঘোষণা সেই এমপি প্রার্থীর

অভিযুক্ত সেনা কর্মকর্তাদের বহন করা সেই প্রিজন ভ্যানে কী আছে

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত