“নাটক হৃদয় ছুঁয়ে যায়”, শিল্পকলায় আবেগঘন অভিব্যক্তি জবি উপাচার্যের

প্রতিনিধি, জবি
প্রকাশ : ২২ আগস্ট ২০২৫, ২০: ২৭

“প্রতিটি নাটক হৃদয় ছুঁয়ে যায়”— শিল্পকলা একাডেমির মঞ্চে নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষার্থীদের প্রযোজনা দেখে এমন আবেগঘন অভিব্যক্তি ব্যক্ত করলেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. রেজাউল করিম।

শুক্রবার বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালায় অনুষ্ঠিত সমাপনী প্রদর্শনীর পর তিনি বলেন, “এর আগেও আমি নাট্যকলা বিভাগের প্রযোজনা দেখেছি, সত্যিই তারা অসাধারণ। প্রতিটি নাটক একেকটা বক্তৃতা হয়ে আসে আমাদের কাছে।

বিজ্ঞাপন

আজকের আয়োজন আমাকে গভীরভাবে ছুঁয়ে গেছে। আমার সৌভাগ্য যে আমি এখানে আসতে পেরেছি। নাট্যকলা বিভাগের জন্য শুভকামনা থাকবে, তারা যেন আরও অনন্য সৃষ্টির আনন্দ আমাদের উপহার দিতে পারে।”

প্রাচীন গ্রিক নাট্যকার ইস্কিলাসের কালজয়ী ট্রাজেডি “তর্পণ বাহকেরা” মঞ্চায়নের মধ্য দিয়ে শেষ হয় নাট্যকলা বিভাগের আয়োজিত তিন দিনব্যাপী নাট্য প্রদর্শনী। ১৯ আগস্ট শুরু হওয়া এই আয়োজনের শেষ দিনে ছিল দর্শকদের উপচে পড়া ভিড়।

২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের প্রযোজনায় নাটকটির পরিকল্পনা ও নির্দেশনা দেন নাট্যকলা বিভাগের চেয়ারম্যান ক্যাথরিন পিউরীফিকেশন। বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো “তর্পণ বাহকেরা” শিল্পকলা একাডেমির মঞ্চে প্রদর্শিত হলো।

নাটকটির নির্দেশক ক্যাথরিন পিউরীফিকেশন বলেন, সাম্প্রতিক বৈশ্বিক রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে “তর্পণ বাহকেরা” নাটকটি অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক। এই নাটক একটি রাজপরিবারের হত্যাকাণ্ডের ঘটনাকে কেন্দ্র করে, যেখানে হত্যাকারীরা নিয়তির বিধানে নিজেদের পাপের শাস্তি ভোগ করে।

তিনি মনে করেন, বর্তমান সময়েও বিশ্বব্যাপী রাষ্ট্রগুলো আন্তঃদ্বন্দ্ব ও সংঘাতে জড়িয়ে পড়ছে, যা আমাদের সম্ভাবনাকে বারবার সংকুচিত করছে এবং সীমিত করছে আমাদের চিন্তা ও বোধের পরিসর।

তিনি আরও বলেন, এই অস্থির সময়ে মানুষের মধ্যে বিভাজন ও বিচ্ছিন্নতা তৈরি হচ্ছে, যা এক ধরনের আত্মজিজ্ঞাসার জন্ম দেয়—যার উত্তর সহজে খুঁজে পাওয়া যায় না। তাই তরুণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিয়ে তিনি শিল্পের অবয়বে এই উত্তর খুঁজেছেন। পৃথিবী আবার ছন্দে ফিরবে এবং শিল্পচর্চার মাধ্যমে মানুষ নতুন মানবিকতার আলোয় আলোকিত হবে।

নাটক শেষে এক দর্শক জানান, “নাটক হচ্ছে সমাজ ও রাষ্ট্রের প্রতিচ্ছবি। এই নাটক আমাদের শেখায়, হিংসা আর প্রতিশোধ কোনোদিনই শান্তি আনতে পারে না।”

তিন দিনব্যাপী এই আয়োজনে প্রতিদিন সন্ধ্যায় দর্শকদের বিপুল সমাগমে প্রমাণিত হয়েছে মঞ্চনাট্য আজও নতুন প্রজন্মের সৃজনশীলতার শক্তিশালী বাহন, যা শুধু বিনোদন নয়, সমাজ ও জীবনের গভীর বার্তাও বহন করে।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত