‘মা, তোমাকে নিয়ে আমি গর্বিত’

বিনোদন রিপোর্টার
প্রকাশ : ১২ জানুয়ারি ২০২৫, ১৫: ২৪

ঢাকা অ্যাটাকখ্যাত অভিনেত্রী নওশাবা আহমেদ ২০১৮ সালের ৫ আগস্ট আটক হন। আটক হওয়ার সময়ের একটি ছবি সম্প্রতি তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করেছেন। পোস্টের ক্যাপশনে তার ওপর হওয়া অবিচার ও সমালোচনা, তার মেয়ে প্রকৃতির কাছ থেকে সত্যটা লুকানোর চেষ্টা এবং অবশেষে সত্য উদ্‌ঘাটন হওয়ার পর মেয়ের প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে বর্ণনা করেছেন। তিনি এই ঘটনার মাধ্যমে জীবনের অস্থিরতা, সত্যের গুরুত্ব ও মানুষের প্রতিক্রিয়ার কথা ব্যক্ত করেছেন।

বিজ্ঞাপন

নওশাবা লিখেছেন, “কাল এক সহযোদ্ধা এই ছবিটি শেয়ার করেছিলেন তার ওয়ালে, ২০১৮ সালের ৫ আগস্ট! তার ক্যাপশন ছিল ‘নওশাবা, পাশে আছি!’ আমি যখন ভেতরে ছিলাম আমার প্রায় শুনতে হতো—‘নওশাবা, আপনাকে দেখি কেউই পছন্দ করে না তেমন গুটিকয়েক শিল্পী ছাড়া; আর যারা করে তারা বেশিরভাগ প্রবীণ শিল্পী!গুটিকয়েক ডিরেক্টর, আর প্রচুর সাংবাদিক! আপনার জন্য কোনো মানববন্ধনও হয় না, আফসোস!”

নওশাবা লেখেন, ‘আমি কষ্ট পেয়েছিলাম, কিন্তু এই কষ্টটাই সৃষ্টিকর্তার শক্তির একটি মোড়ক—এটা আমার বুঝতে সময় লাগলেও আলহামদুলিল্লাহ আমি সেটা উপলব্ধি করি।’

তার আটকের ছবি নিয়ে সামাজিক ও পারিবারিক সংগ্রামের কথা উল্লেখ করে তিনি লেখেন, “এই ছবিটা আমি ভুলতে চেয়েছি বারবার প্রতিদিন, আমার মেয়ে যাতে কোনোভাবে এই ছবি না দেখে, তার হয়তো ট্রমা হবে। পরিবার থেকেও বলা হতো, ‘মেয়েকে সব জানিয়ো না।’ কিন্তু ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে আমি মনস্থির করি, আমি প্রকৃতিকে নিজ থেকে কিছু বলব না, কিন্তু লুকাবও না! যে কারণে এতকিছুর পর দেশ থেকে পালালাম না, সেই কারণটা আমার মেয়ের জন্য নিশ্চয়ই লজ্জার কিছু হবে না!”

নওশাবা লেখেন, “গত বছর হুট করে প্রকৃতি আমাকে বলল, ‘আচ্ছা, মাম্মা, তুমি বলেছিলে দুষ্ট কাজ করলে পুলিশ ধরে, তুমি কি দুষ্টমি করেছিলে যে পুলিশ তোমাকে…?’ আমি ওর দিকে তাকিয়ে রইলাম। প্রকৃতি ওর বই গোছাতে গোছাতে আমাকে বলল, ‘আমি তোমার নাম লিখে গুগল করলাম। দেখি তুমি আর পুলিশ!”

এই অভিনেত্রী লেখেন, ‘আমি বললাম, আরেকটু বড় হও, আস্তে আস্তে সব বলব! আমার কিছু বলা লাগেনি, সে নিজের মতো করে জেনে-বুঝে নিয়েছে; আর মাঝে মাঝেই জড়িয়ে ধরে। অনেকক্ষণ পর সে বলল, ‘মা তোমাকে নিয়ে আমি গর্বিত।’ আমি আজ জ্বরের মধ্যে ভাবছিলাম, এই ছোট্ট জীবনে আমরা কত কিছু পেতে চাই, কিন্তু আসলে সবই সময়ের খেলা, আমি চাইলেও আজ চার দিন আগের মতো দৌড়ে বেড়াতে পারছি না। আবার যখন সুস্থ হব, এই অসহ্য ব্যথাময় জ্বরের দিনগুলো যাতে ভুলে না যাই, নিজের জন্য একটু ভাবি, রোজগারের দৌড়ে নিজের প্রাণশক্তি যেন না হারিয়ে ফেলি। এই যে ছোট ছোট উপলব্ধি, এটাই কষ্টরূপে ভবিষ্যতের শক্তি!”

আমার দেশের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিষয়:

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত