তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবিতে ইবিতে মশাল মিছিল

প্রতিনিধি, ইবি
প্রকাশ : ১৮ অক্টোবর ২০২৫, ০১: ২৭

তিস্তা মহাপরিকল্পনা দ্রুত বাস্তবায়নের দাবির সাথে একাত্মতা জানিয়ে মশাল মিছিল করেছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষার্থীরা।

বিজ্ঞাপন

শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের জিয়া মোড় থেকে এ মিছিলটি শুরু হয়। মশাল হাতে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে প্রধান ফটকের সামনে এসে সমাবেশে মিলিত হয়।

এ সময় তারা ‘ভারত যদি বন্ধু হয়, ন্যায্য পানির হিস্যা দাও’; ‘তিস্তা পাড়ের সাথে, ইবিয়ান আছে’; ‘ইন্টারিম হাসে, উত্তরবঙ্গ ফাঁসে’; ‘উত্তরবঙ্গের কান্না, আর না আর না’; ‘চুক্তি নিয়ে টালবাহানা, আর না আর না’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশের ৫৩ বছরের ইতিহাসে যতো সরকার এসেছে, প্রত্যেকটা সরকার উত্তরবঙ্গকে বৈষম্যের মধ্যে রেখেছে। বর্তমান সরকারের আগের যে ফ্যাসিস্ট সরকার তারা তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের উদ্দ্যেগ গ্রহণ করলেও কোনো এক অদৃশ্য শক্তির কারণে তারা সেই বাস্তবায়ন প্রকল্প থেকে সরে আসে। ৫ আগস্টের পর আমরা ভেবেছিলাম এই সরকার মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করবে। কিন্তু এই সরকার কোনো প্রকার উদ্দ্যেগ গ্রহণ করেনি।

শিক্ষার্থী গোলাম রব্বানী বলেন, আমরা গতবছর ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বন্যাকবলিত উত্তরবঙ্গের মানুষের আহাজারি দেখতে গিয়েছিলাম। শুধু গতবছর না প্রতিবছরই দেখি কিন্তু এর স্থায়ী সমাধান হয় না। এর একমাত্র সমাধান তিস্তা মহাপ্রকল্প বাস্তবায়ন হওয়া। এই দাবির প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার রংপুর বিভাগে যে মশাল মিছিল হয়েছে, তা বাংলাদেশের ইতিহাসে নজিরবিহীন। এরই ধারাবাহিকতায় আমরা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে আজ মশাল মিছিল করেছি। ইন্টেরিম সরকারের কাছে একটাই আহ্বান থাকবে আগামী মাস বা এই বছরের মধ্যেই তিস্তা মহাপ্রকল্প বাস্তবায়নের পদক্ষেপ নিতে হবে এবং কাজ শুরু করতে হবে।

সাবেক সমন্বয়ক ও আগ্রাসন বিরোধী শিক্ষার্থী জোটের সদস্য এস এম সুইট বলেন, ‘তিস্তা নদী রক্ষার আন্দোলন কোনো একক ব্যক্তির আন্দোলন বা ইশতেহারও নয়। এটি ৪৫ বছর ধরে চলে আসা তিস্তা পাড়ের হাজার হাজার মানুষের দুঃখ দূর্দশার আন্দোলন। সবসময়ই উত্তরবঙ্গকে বিভিন্নভাবে অবহেলা করা হয়েছে। বাংলার যেকোনো আন্দোলনেরই অগ্রনায়ক হিসেবে ছিলেন এই রংপুরের মানুষ। ফকির বিদ্রোহ, সাঁওতাল বিদ্রোহ থেকে শুরু করে জুলাই আন্দোলনেও আবু সাঈদের বীরত্বের পর আমরা যে সরকার পেলাম সেই সরকারও শুরুতে রংপুরে গিয়েছিলেন এবং বলেছিলেন রংপুরকে তিনি নিজের মতো করে দেখে রাখবেন। কিন্তু বাজেট প্রণয়নের ক্ষেত্রে রংপুরের প্রতি কীরূপ বৈষম্য করা হয়েছে, তা আমরা দেখেছি।’

তিনি আরো বলেন, ‘তিস্তা পাড়ের মানুষের জীবনযাত্রার মান এবং দেশের অন্যন্য অঞ্চলের জীবনযাত্রার মানে রয়েছে আকাশ পাতাল পার্থক্য। জুলাই পরবর্তী বাংলাদেশে এই বৈষম্য কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। আমরা বলে দিতে চাই আগামী নভেম্বরের মধ্যে যদি তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের কাজ শুরু না হয়, তাহলে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আমরা দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলবো। তিস্তাপাড়ের মানুষ, উত্তরবঙ্গের মানুষ যে শস্যে অবদান রাখছে, শ্রম দিচ্ছে, ভ্যাট দিচ্ছে তাদের ন্যয্য অধিকার না দিলে, ন্যয্য হিস্যা না দিলে যে সরকারই আসুক না কেন তারা তাদের মসনদে টিকতে পারবে না। এক আবু সাঈদের রক্তে জুলাই অভ্যুত্থান সংগঠিত হয়েছে, দরকার হলে তিস্তা রক্ষার আন্দোলনে হাজারো আবু সাঈদ তাদের বুজের তাজা রক্ত দিবে, তিস্তাপাড়ের জনগোষ্ঠির এবং রংপুর বিভাগের এবং পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠির পাশে তারা আছে এবং থাকবে।’

এছাড়া বাংলাদেশের অন্যান্য বিভাগগুলোর ন্যায় বৈষম্যহীন উত্তরবঙ্গ চান শিক্ষার্থীরা এবং সরকারকে নভেম্বরের মধ্যে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের উদ্দ্যেগ নেওয়ার দাবি জানান তারা।

আমার দেশের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিষয়:

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত