আমার দেশ জনপ্রিয় বাংলা নিউজ পেপার

রোজায় ডায়াবেটিক রোগীদের ঝুঁকি

ডা. মইনুদ্দিন আহমেদ
রোজায় ডায়াবেটিক রোগীদের ঝুঁকি

রমজান মাসে ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য রোজা রাখা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সারা বিশ্বে ৫০ মিলিয়নেরও বেশি মানুষ রোজা রাখেন এবং অধিকাংশ ডায়াবেটিক রোগীও এই মাসে রোজা রাখতে পারেন। তবে এটি নির্ভর করে ব্যক্তির শারীরিক অবস্থার ওপর। তাই রোজা শুরু হওয়ার আগে চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করা অত্যন্ত জরুরি। চিকিৎসক রোগীর ডায়াবেটিসের অবস্থা, জটিলতা ও অন্যান্য স্বাস্থ্যগত বিষয়গুলো বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেবেন।

বিজ্ঞাপন

রোজা রাখার বেশকিছু উপকারিতা রয়েছে, যেমন শরীরের বিপাকীয় কাজের উন্নতি, অতিরিক্ত ওজন কমানো এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করা। তবে ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য কিছু ঝুঁকিও থাকে। প্রধান ঝুঁকিগুলোর মধ্যে অন্যতম হাইপোগ্লাইসেমিয়া, অর্থাৎ রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা কমে যাওয়া। আরেকটি ঝুঁকি হলো হাইপারগ্লাইসেমিয়া, মানে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা বেড়ে যাওয়া ও পানিশূন্যতা সৃষ্টি হওয়া। হাইপোগ্লাইসেমিয়া হলে রোগীকে দ্রুত চিকিৎসা নিতে হবে, যেমন শর্করাযুক্ত খাবার বা পানীয় গ্রহণ করা।

রমজানে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা নিয়মিত পরীক্ষা করা উচিত। বিশেষ করে সাহরির পর এবং ইফতারের আগে গ্লুকোজ পরীক্ষা করা উচিত। যদি রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা ৩.৯ মিলিমোল/লিটারের নিচে নেমে যায়, তাহলে রোজা ভাঙতে হবে এবং ১৬.৬ মিলিমোল/লিটারের ওপরে গেলে রোজা ভাঙা উচিত।

খাদ্যাভ্যাসের দিক থেকে সাহরিতে জটিল শর্করা ও প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার, যেমন ভাত, রুটি, সবজি, মাংস ও ডিম গ্রহণ করা উচিত। ইফতারে পরিমাণে অতিরিক্ত মিষ্টি ও তেলযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলা উচিত। চিনির শরবত পরিহার করা উচিত।

শরীরচর্চার জন্য রোজা রাখা অবস্থায় অতিরিক্ত শারীরিক পরিশ্রম এড়িয়ে চলা উচিত। তবে ইফতার ও সাহরির মাঝে হালকা ব্যায়াম করা যেতে পারে। অতিরিক্ত নামাজ যেমন তারাবিহ ও তাহাজ্জুদও শরীরচর্চার অংশ হিসেবে ধরা যেতে পারে।

ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য ওষুধ বা ইনসুলিন গ্রহণের পদ্ধতি চিকিৎসকের নির্দেশনা অনুযায়ী নির্ধারণ করতে হবে। যারা নিয়মিত ইনসুলিন গ্রহণ করেন তাদের ডোজের সময় ও পরিমাণে পরিবর্তন আনতে হবে। সকালের ইনসুলিন পূর্ণ ডোজে ইফতারে আর রাতের ডোজ অর্ধেক পরিমাণে সাহরিতে নিতে হবে।

রমজান মাসটি মুসলিমদের জন্য ইবাদতের একটি মহিমান্বিত সময়। তাই ডায়াবেটিক রোগী বা সুস্থ যে কেউ যেন সুষ্ঠুভাবে রোজা রাখতে পারে, সেজন্য সঠিক প্রস্তুতি ও চিকিৎসকের পরামর্শ অপরিহার্য। মারাত্মক শারীরিক অসুবিধার কারণে যদি কেউ রোজা রাখতে না পারেন, তা হলে মন খারাপ করার কিছু নেই; কারণ আল্লাহ অন্তরের খবর জানেন।

লেখক : মেডিসিন ও লিভার বিশেষজ্ঞ

কুড়িগ্রাম সরকারি জেনারেল হাসপাতাল

Google News Icon

আমার দেশের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

রায়েরবাজারে দাফন করা অজ্ঞাত ১৮২ শহীদের লাশ উত্তোলন শুরু রোববার

‌নির্বাচনের প্রক্রিয়া যেন ব্যাহত না হয়, সে জন্য কাজ করছে বিএন‌পি: আলাল

যৌথবাহিনীর হাতে আটক বহিষ্কৃত যুবদল নেতার কারাগারে মৃত্যু

টিসিবির মাধ্যমে চিনি বিক্রি চলমান থাকবে: শিল্প উপদেষ্টা

স্বৈরাচার দেশে জুলুমতন্ত্র কায়েম করে সবকিছু লুটেপুটে নিয়েছে: জাহিদুল ইসলাম

এলাকার খবর
খুঁজুন