কয়েক দিন ধরে তীব্র তাপপ্রবাহে জনজীবন অতিষ্ঠ প্রায়। সাধারণত এপ্রিল থেকেই আমাদের দেশে তাপপ্রবাহ শুরু হয়। বনভূমি উজাড় করা এবং জলাশয় ধ্বংস করায় বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি পেয়েছে। আর তাই বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রচণ্ড তাপপ্রবাহ সৃষ্টি হয়েছে।
মানবদেহে তাপপ্রবাহের ক্ষতিকর প্রভাব
মানুষের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর তাপপ্রবাহের নানা ক্ষতিকর প্রভাব রয়েছে। তাপমাত্রা বৃদ্ধির তীব্রতা ভেদে দেহে যেসব লক্ষণ দেখা যেতে পারে ।
● শরীরে অবসাদ ও দুর্বলতা বোধ করা, তীব্র পানি পিপাসা, মাংসপেশিতে ব্যথা বা টান লাগা।
● মাথাব্যথা, বমি, মাথাঘোরা, শ্বাস-প্রশ্বাস দ্রুত হওয়া, অস্বাভাবিক আচরণ করা।
● ত্বক শুষ্ক হয়ে যাওয়া, শরীরের তাপমাত্রা দ্রুত বৃদ্ধি পেতে থাকা, রক্তচাপ কমে যাওয়া, শিরার গতি বেড়ে যাওয়া ও ক্ষীণ হয়ে যাওয়া, অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার কারণে যথাযথ ব্যবস্থা না নিলে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।
করণীয় কী
প্রথমত তাপপ্রবাহের ক্ষতি থেকে রক্ষা পেতে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে।
◆ বাইরে যত কম বের হওয়া যায়, চেষ্টা করতে হবে। বের হতে হলে ছাতা, সানগ্লাস, টুপি ব্যবহার করতে হবে। সঙ্গে পানি রাখা যেতে পারে পিপাসা নিবারণের জন্য।
◆ পোশাক হতে হবে তাপমাত্রা উপযোগী– ঢিলা, পাতলা, সাদা বা যেকোনো হালকা রঙের এবং সুতির।
◆ তরলজাতীয় খাবার বেশি বেশি পান করতে হবে– যেমন ফলের রস, খাবার স্যালাইন, পানি। সাদা পানি খুব বেশি পান না করা ভালো। কারণ ঘামে পানির সঙ্গে শরীর থেকে লবণও বের হয়ে যায়। চা-কফি, তৈলাক্ত খাবার যথাসম্ভব পরিহার করতে হবে।
প্রচণ্ড তাপপ্রবাহে অসুস্থ হলে
◆ রোগীকে দ্রুত ছায়াযুক্ত ঠান্ডা জায়গায় নিয়ে যেতে হবে।
◆ শরীরের ভারী, টাইট পোশাক খুলে ফেলতে হবে।
◆ ফ্যান বা এসির সাহায্যে দেহ ঠান্ডা করতে হবে। ঠান্ডা পানি বা বরফে শরীর মুছে দিতে হবে। গোসল করিয়ে দেওয়া যেতে পারে।
◆ খাবার স্যালাইন, ফলের রস বা পানি পান করাতে হবে।
◆ অসুস্থতা বেশি হলে নিকটস্থ হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে।
ক্রমবর্ধমান বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি ও তাপপ্রবাহ থেকে রক্ষা পেতে হলে বেশি বেশি গাছ লাগাতে হবে, বনভূমি ও জলাশয় সংরক্ষণ করতে হবে।
লেখক : বিভাগীয় প্রধান, মেডিসিন
গ্রিন লাইফ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল
গ্রিন রোড, ঢাকা

