ফ্রিজের আদ্যোপান্ত

আনিকা তাহমিনা
প্রকাশ : ২৫ মে ২০২৫, ১০: ০৫

কোরবানি ঈদ আসন্ন। এই ঈদে মাংস সংরক্ষণের জন্য দরকার হয় ফ্রিজের। আর এজন্য চাই ফ্রিজের বাড়তি যত্ন। একই সঙ্গে মাংস গরম করার জন্য দরকার হয় মাইক্রোওয়েভ ওভেনের। প্রতি বছর কোরবানির আগে কেউ কেউ নতুন ফ্রিজ কেনেন, মাইক্রোওয়েভ ওভেন কেনেন, কেউ কেনেন প্রেশার কুকার ও রাইস কুকার। কেউ ডিপ ফ্রিজ কেনেন, আবার কেউ পুরোনো ফ্রিজ পরিষ্কার করেন।

আত্মীয়স্বজন ও গরিব-দুঃখীকে দেওয়ার পর ফ্রিজে মাংস সংরক্ষণ করা হবে। তাই ফ্রিজ যতটা সম্ভব খালি করে রাখতে হবে। আগের জমানো খাবারগুলো রান্না করে ফেলুন। ফ্রিজ পরিষ্কারের কাজটাও সেরে নিন। আগেই ডিপ ফ্রিজ পরিষ্কার করে নিন। এসব কাজ কোরবানির ঈদের বেশ আগে থেকেই একটু একটু করে গুছিয়ে নিলে ঈদের দিন ঝামেলা হয় না।

বিজ্ঞাপন

ফ্রিজ পরিষ্কার করুন

* পরিষ্কার করার অন্তত আধা ঘণ্টা আগে ফ্রিজের সুইচ বন্ধ করে দিন। তাহলে ভেতরের জমাটবাঁধা বরফগুলো গলে যাবে এবং ফ্রিজে রাখা সব খাবার বাইরে বের করে ফেলুন।

* ফ্রিজের ট্রেগুলো খুলে ফেলুন। তারপর কুসুম গরম পানিতে ডিটারজেন্ট মিশিয়ে স্পঞ্জ দিয়ে ঘষে পরিষ্কার করুন। এক্ষেত্রে খুব কড়া কোনো ডিটারজেন্ট ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন এবং নরম স্পঞ্জ ব্যবহার করুন। পরিষ্কার করা হয়ে গেলে আলাদা করে আবার পানি দিয়ে ট্রেগুলো ধুয়ে ফেলুন। ধোয়ার পর তা বাতাসে শুকাতে দিন।

* ডিটারজেন্ট মেশানো পানিতে স্পঞ্জ ভিজিয়ে ফ্রিজের ভেতরের অংশও পরিষ্কার করে ফেলুন। তারপর নরম কাপড় দিয়ে ভেতরের অংশ মুছে ফেলুন।

* ফ্রিজের বাইরের অংশ পরিষ্কার করার জন্য ভিনেগার মেশানো পানি ব্যবহার করুন। সেই পানিতে তোয়ালে ভিজিয়ে বাইরের অংশ পরিষ্কার করে তারপর মুছে ফেলুন।

* ফ্রিজের দরজার সঙ্গে থাকা রাবারটি সাধারণত আঠালো হয়ে থাকে। তাই এক্ষেত্রে ভিনেগার মেশানো পানি ব্যবহার করুন এবং কাপড় ও ব্রাশের সাহায্যে পরিষ্কার করুন।

* সবশেষে যখন ফ্রিজের ভেতরটা পুরোপুরি শুকিয়ে যাবে এবং ট্রেগুলোও শুকিয়ে যাবে, তখন সেগুলো আবার সেট করে নিন। এরপর সুইচ চালু করে দিয়ে চেক করুন ফ্রিজ ঠান্ডা হচ্ছে কি না, বা সব ঠিকঠাক আছে কি না।

প্রয়োজনীয় সতর্কতা

* নরমাল ফ্রিজের তাপমাত্রা চার ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং ডিপ ফ্রিজের তাপমাত্রা মাইনাস ১৮ ডিগ্রির নিচে সেট করুন।

* খাবার এয়ারটাইট পাত্রে বা প্লাস্টিকের মোড়কে ঢেকে রাখুন। এটি গন্ধ ছড়িয়ে পড়া রোধ করবে।

* ফ্রিজের দরজা বারবার খুলবেন না। ঠান্ডা বাতাস বেরিয়ে যাওয়া রোধ করতে দরজা দ্রুত বন্ধ করুন।

* ফ্রিজে ওভারলোড করবেন না। এটি ঠান্ডা বাতাস চলাচল ব্যাহত করে এবং বিদ্যুতের খরচ বাড়ায়।

* ফ্রিজকে সরাসরি সূর্যের আলো থেকে দূরে রাখুন। এটি ফ্রিজের ভেতরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি করে।

নতুন ফ্রিজ কেনার ক্ষেত্রে

* নতুন ফ্রিজ কেনার আগে কিছু বিষয় অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে; যেমন ফ্রিজটি বিদ্যুৎসাশ্রয়ী কি না। বিদ্যুৎসাশ্রয়ী ফ্রিজগুলো মানে ভালো হয়, তাই দামও বেশি হয়। তবে দাম বেশি হলেও এমন ফ্রিজ কেনাই উচিত, কারণ এতে বিদ্যুৎ বিল কম আসবে।

* ফ্রিজের কমপ্রেশারের মান জেনে নিন, কারণ এর ওপর নির্ভর করছে ফ্রিজটি কত ভালো কুলিং করতে পারবে।

* ফ্রিজের আকারও একটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী আকার বেছে নিন। প্রয়োজন না হলে শখের বশে বড় ফ্রিজ কেনার দরকার নেই। কেননা বড় ফ্রিজে বিলও বেশি আসে।

* ফ্রিজের ধারণক্ষমতা সম্পর্কে জেনে নিন এবং ফ্রস্ট নাকি নন-ফ্রস্ট ফ্রিজ কিনতে চান, তা ভেবে নিন। ফ্রস্ট ফ্রিজে বরফ জমে এবং নন-ফ্রস্ট ফ্রিজে বরফ জমে না।

* অবশ্যই ভালো কোনো ব্র্যান্ডের ফ্রিজ কিনবেন। এতে ঠকার আশঙ্কা থাকবে না।

বিষয়:

ফ্রিজ
এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত