যুব দিবসের সেমিনারে মাহমুদুর রহমান

ভারতে পালিয়ে যাওয়া ফ্যাসিস্টদের প্রধান শত্রু তরুণরা

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ : ১৪ আগস্ট ২০২৫, ২০: ১২
আপডেট : ১৪ আগস্ট ২০২৫, ২১: ৩১

আমার দেশ সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান বলেছেন, ভারতে পালিয়ে যাওয়া ফ্যাসিস্টদের প্রধান শত্রু হচ্ছে এদেশের তরুণরা। তিনি বলেন, গত ১৬ বছর ধরে বাংলাদেশের তরুণদের ব্রেন ওয়াশ করা হয়েছে। তরুণদের চিন্তা বিকৃত করার চেষ্টা করা হয়েছে। ইতিহাস, কৃষ্টি কালচারকে পরিবর্তন করার চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু এই তরুণরা এতো কিছুর পরও বাংলাদেশে একটা বিপ্লব ঘটিয়েছে।

বৃহস্পতিবার কাকরাইলে বাংলাদেশ ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিশনে এক সেমিনারে মাহমুদুর রহমান একথা বলেন। আন্তর্জাতিক যুব দিবস উপলক্ষে ‘তারুণ্যের গণঅভ্যুত্থান: নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণে যুব তরুণদের ভূমিকা’ শীর্ষক সেমিনারটির আয়োজন করে যুব উন্নয়ন ফোরাম ঢাকা।

বিজ্ঞাপন

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মাহমুদুর রহমান বলেন, জুলাইযোদ্ধাদের নানাভাবে বিতর্কিত করা হবে। তাদের চরিত্র অ্যাসাসিনেশন করা হবে। তরুণরাও কিছু ভুলভ্রান্তি করেছে উল্লেখ করে আমার দেশ সম্পাদক বলেন, ‘আমি কিন্তু হতাশ নই। হতাশ না হওয়ার অন্যতম কারণ হচ্ছে- আমি যুবক, তরুণ-তরুণীদের মধ্যে যে দেশপ্রেম এবং সাহস দেখতে পেয়েছি এবং এটি দেখে আমার মনে হয়েছে- বাংলাদেশকে আর কোনো অভ্যন্তরীণ অথবা বহিঃশক্তি পদানত করতে পারবে না, ইনশাআল্লাহ।’

মাহমুদুর রহমান বলেন, জুলাই বিপ্লবে যারাই মাস্টারমাইন্ড সাজার চেষ্টা করুক না কেন, এই বিপ্লব করেছে তরুণেরা; আনাসের মতো কিশোরেরা। আনাস তার মায়ের কাছে চিঠিতে তার বিদায় বাণী লিখে চলে গেছেন বাংলাদেশকে ভারতীয় আগ্রাসন ও ফ্যাসিস্ট মুক্ত করতে। যে জাতি আনাসদের মতো কিশোরদের জন্ম দিয়েছে, তাদের ভয় করার কোনো কারণ নেই।

জুলাই বিপ্লবের ভ্যানগার্ড এই দেশের তরুণেরা উল্লেখ করে মাহমুদুর রহমান বলেন, ‘যারা বিতর্ক করার চেষ্টা করছেন তারা ইতিহাস অস্বীকার করছেন। ইতিহাসকে অস্বীকার করা যায় না। কিন্তু যারাই অস্বীকার করবে তারাই আস্তাকুঁড়ে পতিত হবে।’

তিনি আরও বলেন, টাইম ম্যাগাজিনে কান্ট্রি অব দ্যা ইয়ার হয়েছে বাংলাদেশ। কারণ এই বিপ্লবে তরুণরা কোনো ভায়োলেন্স না করে শান্তিপূর্ণ পদ্ধতিতে বিপ্লব করেছে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে এবং একটি বিশাল বিদেশি শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করে তরুণরা জয়লাভ করেছে। এই জন্য সারা পৃথিবীতে জুলাই বিপ্লব বিপ্লবের আইকনে পরিণত হয়েছে।

অনুষ্ঠানে বিগ্রেডিয়ার জেনারেল (অব.) হাসান নাসির বলেন, ‘দেশটাকে শুধু হাসিনা মুক্ত করেছি, কিন্তু ফ্যাসিস্টের সব সেটআপ রয়ে গেছে। এই মুহূর্তে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’ কার্যকর নয় বরং দেশের অস্থিতিশীলতার জন্য হাসিনার সার্বাইভালরাই কার্যকর। বিডিআর বিদ্রোহের বিচার এখনও হয়নি। এই হাসিনার আমলের বিচারবহির্ভূত হত্যার কোনো বিচার হয়নি। সুতরাং আমাদের আন্দোলন চালিয়ে যেতে হবে। বিপ্লবকে সফল করতে হলে সেনাবাহিনীর সংস্কার করতে হবে এবং এরপরই নির্বাচন হতে হবে।

ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি ও বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি মু. দেলোয়ার হোসেন বলেন, তরুণ-যুবকরাই হচ্ছে সমাজের মূল চালিকা শক্তি। যুগে যুগে তারাই বিজয় অর্জন করেছে। সুতরাং স্বপ্নের নতুন বাংলাদেশ গড়তে তরুণদেরই হাল ধরতে হবে। এই জুলাই আন্দোলনে যারা সরাসরি ভূমিকা রেখেছে, নেতৃত্ব দিয়েছে- তাদের নিরাপত্তা দিতে হবে। জুলাই সনদে আইনি ভিত্তি দিয়ে তাদের স্বীকৃতি দিতে হবে।

ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি শহিদুল ইসলাম বলেন, রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যে ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য যে অসুস্থ প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে, নতুন বাংলাদেশ গড়ার ক্ষেত্রে সেই অসুস্থ প্রতিযোগিতা হচ্ছে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। এদেশ থেকে পেশিশক্তি, কালো টাকার রাজনীতি পরিবর্তন না করলে প্রত্যাশিত নতুন বাংলাদেশ গড়া সম্ভব নয়।

মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক ড. আব্দুর রবের সভাপতিত্বে সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন সাবেক সেনা কর্মকর্তা হাসিনুর রহমান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জামায়াতের নায়েবে আমির অ্যাডভোকেট হেলালুদ্দিন, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল কামাল হোসাইন, বাংলাদেশের জাতীয় ফুটবল দলের খেলোয়াড় কায়সার হামিদ প্রমুখ।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত