দুই দফা দাবিতে ফের আন্দোলনে নামছেন বিসিএস নন ক্যাডার প্রার্থীরা

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ : ২৪ আগস্ট ২০২৫, ১৩: ০৪
ফাইল ছবি

দুই দফা দাবিতে ফের আন্দোলনে নামছেন ৪৩ ও ৪৪তম বিসিএসের নন-ক্যাডার প্রার্থীরা। রোববার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করবেন তারা। এছাড়া পরদিন সোমবার থেকে একই স্থানে অনশনে বসার পরিকল্পনা রয়েছে তাদের।

বিজ্ঞাপন

দুই দফা দাবি হলো—নন-ক্যাডার নিয়োগ (বিশেষ) বিধিমালা-২০২৩ সংশোধন ও অনুমোদন এবং প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষক নিয়োগে আলাদা বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের উদ্যোগ বাতিল তথা নন-ক্যাডার থেকে প্রধান শিক্ষক নিয়োগের নিয়ম বহাল রাখা। এর আগে ১৮ ও ১৯ আগস্ট তিন দফা দাবিতে পিএসসির সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন ৪৩তম বিসিএস নন-ক্যাডার প্রার্থীরা। তাদের দাবি না মানলে আরো কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়।

জানা গেছে, বিসিএস নন-ক্যাডার থেকে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নিয়োগ বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়ে সংশ্লিষ্ট মহলে চরম অস্থিরতা বিরাজ করছে। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আকস্মিক এই সিদ্ধান্তে প্রধান শিক্ষকের শূন্য পদ পূরণে বিলম্বসহ বিসিএস ক্যাডার বঞ্চিতদের বঞ্চনা আরো বাড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, প্রাইমারি প্রধান শিক্ষক পদে বিসিএস থেকে সরাসরি নিয়োগের ধারাবাহিকতা শুরু হয় ৩৪তম বিসিএস থেকে। সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) মাধ্যমে ক্যাডারবঞ্চিত নন-ক্যাডার প্রার্থীদের সুপারিশ কার্যকর করে মেধাবী প্রার্থীদের প্রধান শিক্ষক পদে অন্তর্ভুক্তির পথ সুগম করা হয়েছিল।

এর ধারাবাহিকতায় গত ২৭ এপ্রিল প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে ৪৩তম বিসিএস নন-ক্যাডার তালিকা থেকে নিয়োগের জন্য ১৯৯২টি শূন্যপদের অধিযাচন বিপিএসসিতে প্রেরণ করা হয়। এটি দ্রুত ও স্বচ্ছ নিয়োগ প্রক্রিয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ ছিল বলে সংশ্লিষ্টদের । কিন্তু ১৪ আগস্ট সেই পদসমূহ প্রত্যাহার করে আলাদা নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের জন্য পিএসসিতে পুনরায় চিঠি পাঠানো হয়। নতুন নির্দেশনায় প্রক্রিয়াধীন সব বিসিএস থেকে প্রধান শিক্ষকের পদ প্রত্যাহার করার কথা বলা হয়েছে। পদ প্রত্যাহারের বিষয়ে গত ১৭ আগস্ট জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকেও পিএসসিতে চিঠি দেওয়া হয়।

সে অনুযায়ী প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের উদ্যোগ নিয়েছে পিএসসি। শিগগিরই দুই হাজার ৫৮২ পদে প্রধান শিক্ষক নিয়োগের এই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে বলে পিএসসির জনসংযোগ কর্মকর্তা এস এম মতিউর রহমান জানিয়েছেন।

এদিকে ৪৩তম বিসিএসে নন-ক্যাডার প্রার্থীরা জানান, নিয়োগ (বিশেষ) বিধিমালা-২০২৩ সংশোধন ফাইলটি প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে পড়ে আছে। এটি দ্রুত অনুমোদনের জন্য সংশ্লিষ্টদের কোনো উদ্যোগ নেই। আর এই বিধি না থাকার কারণে সংকট সৃষ্টি হয়েছে।

সংশ্লিষ্টরা বলেন, প্রধান শিক্ষক নিয়োগের নতুন বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ ও পূর্ণাঙ্গ নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করলে দীর্ঘ প্রক্রিয়া, অতিরিক্ত পরীক্ষা আয়োজন এবং ব্যয় বৃদ্ধি পাবে। এতে প্রার্থীদের চাকরিতে অন্তর্ভুক্তি বিলম্বিত হবে এবং আগের মতো নিয়োগ বাণিজ্যের শঙ্কা তৈরি হবে। আগের বিসিএসগুলোর নজিরও প্রমাণ করে, নন-ক্যাডার প্রার্থীদের মাধ্যমে প্রধান শিক্ষক পদে সুপারিশ সময়োপযোগী ছিল। ৩৪তম বিসিএসে ৮৯৮ জন, ৩৬তম বিসিএসে ২৪ জন, ৪০তম বিসিএসে ৩৮৪ জন এবং ৪১তম বিসিএসে ২৭৬ জন প্রার্থী সফলভাবে নিয়োগ পেয়েছিলেন। তারা দক্ষতার সঙ্গে প্রাইমারি শিক্ষাকে এগিয়ে নিচ্ছেন। প্রধান শিক্ষক পদ বর্তমানে ১০ম গ্রেডে উন্নীত হওয়ায় প্রার্থীদের আগ্রহ আরো বৃদ্ধি পেয়েছে।

৪৩তম বিসিএস নন-ক্যাডার প্রার্থীদের প্রধান শিক্ষক পদে সরাসরি সুপারিশ করলে নতুন পরীক্ষা বা সার্কুলারের প্রয়োজন হবে না। ফলে সময়, ব্যয় ও প্রশাসনিক জটিলতা কমবে এবং শিক্ষার মানোন্নয়ন নিশ্চিত হবে।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত