আসন্ন ৩০ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে জাতিসংঘের উদ্যোগে অনুষ্ঠিতব্য ‘রোহিঙ্গা বিষয়ক আন্তর্জাতিক সম্মেলন’-কে কেন্দ্র করে সংকট সমাধানে একটি সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ চেয়েছে রোহিঙ্গারা। একই সঙ্গে তারা সম্মান, মর্যাদা ও নিরাপত্তার সঙ্গে নিজ দেশ মিয়ানমারে ফিরে যাওয়ার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কার্যকর সহযোগিতা কামনা করেছেন।
শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সকালে কক্সবাজারের উখিয়ার পালংখালী ইউনিয়নের থাইংখালী ১৩ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অনুষ্ঠিত এক সমাবেশে এসব দাবি জানান রোহিঙ্গা প্রতিনিধিরা। ‘রোহিঙ্গা ইলেক্টেড সিভিল সোসাইটি’ নামে একটি সংগঠন এই সমাবেশের আয়োজন করে। এই কর্মসূচিতে শতশত রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ অংশ নেন।
সমাবেশে রোহিঙ্গারা জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান, যেন মিয়ানমারে তাদের ফিরে যাওয়ার জন্য নিরাপদ, স্বেচ্ছামূলক ও সম্মানজনক পরিবেশ নিশ্চিত করা হয়। একই সঙ্গে ২০১৭ সালে মিয়ানমারে সংগঠিত গণহত্যার আন্তর্জাতিক বিচার দাবি করেন তারা।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, আমরা আর শরণার্থী হয়ে থাকতে চাই না। আমরা চাই, বিশ্ব সম্প্রদায় মিয়ানমার সরকারকে জবাবদিহির আওতায় আনুক এবং আমাদের নাগরিকত্ব, নিরাপত্তা ও অধিকার নিশ্চিত করে নিজ দেশে ফেরার পথ তৈরি করুক।
এ সময় তারা বাংলাদেশ সরকার এবং স্থানীয় জনগণের প্রতিও গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। দীর্ঘ আট বছরের বেশি সময় ধরে আশ্রয় দেওয়ার জন্য কৃতজ্ঞতা জানিয়ে রোহিঙ্গারা বলেন, বাংলাদেশ আমাদের বাঁচিয়ে রেখেছে, এখন আন্তর্জাতিক মহলকে আমাদের ফিরিয়ে নেয়ার দায়িত্ব নিতে হবে।
রোহিঙ্গারা আরো বলেন, নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিতব্য আসন্ন আন্তর্জাতিক সম্মেলন থেকে একটি কার্যকর, বাস্তবভিত্তিক ও দীর্ঘস্থায়ী সমাধানের রোডম্যাপ বেরিয়ে আসবে—যা কেবল রোহিঙ্গাদের জন্য নয়, বরং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্যও সহায়ক হবে।
উল্লেখ্য, বর্তমানে বাংলাদেশে ১৩ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থী হিসেবে বসবাস করছে, যাদের মধ্যে অধিকাংশই ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট রাখাইন রাজ্যে সেনাবাহিনীর নৃশংস অভিযানের মুখে দেশ ছেড়ে পালিয়ে আসে।

