মুসলিম নিকাহ্ রেজিস্ট্রার কল্যাণ পরিষদের ১৭ দফা দাবি

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ : ০২ জুলাই ২০২৫, ২১: ১৮

নিকাহ্ রেজিস্ট্রার নিয়োগের যোগ্যতা হিসেবে কামিল পাশ নির্ধারণ ও অবসরকালীন ৩০ লাখ টাকা অনুদান প্রদানে আইন প্রণয়ন সহ ১৭ দফা দাবি জানিয়েছে মুসলিম নিকাহ্ রেজিস্ট্রার কল্যাণ পরিষদ।

বিজ্ঞাপন

বুধবার রাজধানীর তোপখানা রোডে শিশুকল্যাণ পরিষদে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পেশ ও এসব দাবি তুলে ধরেন সংগঠনটির সভাপতি কাজী ছাব্বীর।

দাবির মধ্যে আরো রয়েছে-বিয়ে ও তালাক রেজিস্ট্রির ক্ষেত্রে কনের এলাকার নিকাহ্ রেজিস্ট্রারের কার্যালয়ে/অফিস কেন্দ্রিক বিয়ে ও তালাক রেজিস্ট্রেশন বাধ্যতামূলক করে বিধান করা; ইউনিয়ন হতে পৌরসভা, পৌরসভার শ্রেণী-গ, খ, ক-তে উন্নীত হয়ে ক্যাটাগরি পরিবর্তন বা পৌরসভা হতে সিটি কর্পোরেশনে উন্নীত করে বিকেন্দ্রীকরণ হলেও আইনে যাহাই থাকুক না কেন নিকাহ্ রেজিস্ট্রারের নিয়োগকালীন অধিক্ষেত্র অবসরের সময় পর্যন্ত বহাল থাকবে মর্মে বিধান করা।

মুসলিম বিয়ে ও তালাক (নিবন্ধন) বিধিমালা ১৯৭৫-এর বিধি ৫ এর ৩ এবং বিধিমালা ২০১৩’র এস.আর.ও নং-৩৩০-আইন/২০১৩ এর (৬ক) যোগ্যতা থাকা সাপেক্ষে পুত্র সন্তানকে নিয়োগের অগ্রাধিকারের বিধানকে সংশোধন করে পুত্র সন্তানকে সরাসরি নিয়োগে আইন প্রণয়ন করা। গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত বিশেষ বিধান জারি করে শূন্য অধিক্ষেত্রগুলোতে দ্রুত নিকাহ্ রেজিস্ট্রার নিয়োগের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা।

মুসলিম বিয়ে ও তালাক (নিবন্ধন) বিধিমালা ১৯৭৫-এর বিধি ৩ এর আদলে নিকাহ্ রেজিস্ট্রার নিয়োগ উপদেষ্টা বোর্ডে ২ জন নিকাহ্ রেজিস্ট্রার প্রতিনিধি রাখার বিধান করা; নতুন নিকাহ্ রেজিস্ট্রার নিয়োগের ক্ষেত্রে অন্য কোন পেশায় স্ব-বেতনে নিয়োজিত থাকিলে নিকাহ্ রেজিস্ট্রার পদে আবেদনে অযোগ্য হইবেন মর্মে বিধান করা; নিকাহ্ রেজিস্ট্রার পদে আবেদনের ক্ষেত্রে বয়সসীমা (৪৫) পয়তাল্লিশের পরিবর্তে সরকারি নিয়ম অনুযায়ী অনূর্ধ্ব (৩২) বত্রিশ বছরের বিধান করা।

আরো দাবি হলো-নিকাহ্ রেজিস্ট্রার সংগঠন সমূহের নেতৃবৃন্দের সমন্বয়ে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় কর্তৃক বছরে অন্তত একবার বিভাগ ভিত্তিক দক্ষ প্রশিক্ষক দ্বারা নিকাহ্ রেজিস্ট্রারদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণে প্রচলিত বিধান বাস্তবায়ন করা; বিয়ে রেজিস্ট্রেশন ফি প্রতি হাজারে ২০ টাকা এবং তালাকের নিবন্ধন ফি তিন হাজার টাকা নির্ধারণপূর্বক বিধান করা; বিবাহ ও তালাক নিবন্ধনে নির্ধারিত “ফি আদায় করিতে পারিবেন” এর স্থলে সংশোধন পূর্বক “সরকারের নির্ধারিত ফি পরিশোধ করিবেন” মর্মে বিধান করা। পাশাপাশি দেনমোহরের পরিমাণ যাহাই হোক না কেন বিবাহ নিবন্ধনের সর্বনিম্ন ফি দুই হাজাটাকার কম হইবে না মর্মে বিধান করা; সরকারের রাষ্ট্রীয়/জাতীয় তথ্য সম্ভারে নিকাহ্ রেজিস্ট্রারদের পদ অন্তর্ভুক্ত করা।

এছাড়া কাজী ওবায়দুল হক বনাম রাষ্ট্র, [৫৫ ডি.এল.আর ও ৫১ ডি.এল.আর (১৯৯৯) ২৫] এর সিদ্ধান্ত মতে নিকাহ্ রেজিস্ট্রারদেরকে পাবলিক সার্ভেন্ট ঘোষণা দিয়ে ১৯৭৪-এর আইন সংশোধন করা; বৈবাহিক ও তালাক বিষয়ে নোটারী পাবলিকের হলফনামা বিষয়ক যাবতীয় কার্যাবলী বেআইনি ঘোষণা করা এবং জাল/নকল নিকাহ্নামা সৃজনকারী এবং ভুয়া নিকাহ্ রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করে বিধান করা; সংশ্লিষ্ট পক্ষের অনুরোধক্রমে পক্ষ কর্তৃক স্বাক্ষরিত তালাকের নোটিশ প্রেরণে নিকাহ্ রেজিস্ট্রারকে ক্ষমতা অর্পণ করে বিধান করা এবং ২০২২ সালের ২৯ ডিসেম্বর প্রকাশিত প্রজ্ঞাপন এস.আর.ও নং-৩৭৭-আইন/২০২২ খ্রি. (১) বিধি ৬-এর উপবিধি (৮)-এর (ক) দফা এবং (২) বিধি ৭ এর উপবিধি (১) এর (ক) দফা বাতিল করে ২০০৯ এর বিধান পুনর্বহাল করা।

অবিলম্বে এসব দাবি পূরণে সরকারের প্রতি জোরালো দাবি জানান মুসলিম নিকাহ্ রেজিস্ট্রার কল্যাণ পরিষদ নেতারা।

সংগঠনের নির্বাহী সভাপতি কাজী মাওলানা মো. মনিরুজ্জামানের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক কাজী মেহেদী হাসান নোমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি মো. খাদেমুল ইসলাম, যুগ্ম সম্পাদক হাবিবুর রহমান মিঠু, আবু মুসা, সালেহ আহাম্মদ, সাংগঠনিক সম্পাদক মাহমুদুল হাসান ফুয়াদ, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক এ,বি,এম বাকী বিল্লাহ, মহিউদ্দিন আহমেদ, দপ্তর সম্পাদক আনোয়ারুল হক, প্রচার সম্পাদক মহিউদ্দিন তাজিম, অর্থ সম্পাদক ফুয়াদুল ইসলাম ফুয়াদসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের নিকাহ্ রেজিস্ট্রারগণ উপস্থিত ছিলেন।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত