আমার দেশ সাংবাদিকের ওপর হামলা

মুক্তমত চর্চার পরিবেশ নিশ্চিত করুন

আমার দেশ অনলাইন
প্রকাশ : ২১ অক্টোবর ২০২৫, ১১: ৩৮
আপডেট : ২১ অক্টোবর ২০২৫, ১১: ৪০
বিএনপির গুলশান অফিস, ইনসেটে হামলার শিকার জাহিদ

মাফিয়া শাসক শেখ হাসিনার আমলে দেশে গণমাধ্যমের কণ্ঠরোধ করা হয়েছিল। গণমাধ্যমের স্বাধীনতা বলতে কিছু ছিল না। বিরোধী মত দমন ও গণমাধ্যমের কণ্ঠরোধের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল বিভিন্ন পত্রিকা, টেলিভিশন চ্যানেল এবং অনেক অনলাইন প্ল্যাটফর্ম। হামলা, মামলা, জেল-জুলুমের শিকারসহ দেশ ছাড়তে বাধ্য হন অনেক সাংবাদিক।

ফ্যাসিবাদ থেকে মুক্তির জন্য দেড় হাজারের বেশি মানুষ রাজপথে জীবন দিলেও ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা থেকে ভবিষ্যতে এই দেশের মানুষ আদৌ মুক্ত হতে পারবে কি নাÑতা নিয়ে গভীর সংশয় দেখা দিয়েছে। সর্বশেষ বিএনপির গুলশান অফিসে আমার দেশ সাংবাদিকের ওপর হামলার ঘটনা মুক্তমত চর্চার ক্ষেত্রে স্পষ্ট হুমকি হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে গত রোববার বিএনপির গুলশান অফিসে হামলার শিকার হন আমার দেশ-এর একজন সাংবাদিক। বিএনপি নেতাকর্মীরা তার ওপর হামলা চালান। হামলায় তিনি গুরুতর আহত হন। এ সময় তার মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়ে আছাড় দিয়ে ভেঙে ফেলা হয়। হামলায় আহত আমার দেশ-এর সাংবাদিককে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।

রোববার সিলেট বিভাগের মনোনয়নপ্রত্যাশীদের ডাকা হয় বিএনপি অফিসে। একপর্যায়ে সেখানে পিএনপির দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনা মোবাইলে ধারণ করছিলেন আমার দেশ-এর এক সাংবাদিক। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন বিএনপি নেতাকর্মীরা। এরপর বিএনপির মিডিয়া সেলের সঙ্গে সম্পৃক্ত ‘আমরা বিএনপি পেজের’ একজন ক্যামেরাপারসনের নেতৃত্বে একদল লোক হামলা চালান আমার দেশ-এর সাংবাদিকের ওপর। তারা তাকে অফিসের দোতলার সিঁড়িতে নিয়ে এলোপাতাড়ি কিল-ঘুসি ও লাথি মারেন। একপর্যায়ে তাকে মারতে মারতে মূল ফটকের বাইরে রাস্তায় নিয়ে আসেন তারা। তার ওপর হামলার সময় হামলাকারীরা বলতে থাকেনÑ‘আমার দেশ বিএনপির বিরুদ্ধে রিপোর্ট করে। এখানে বিএনপির দোষ খুঁজতে রিপোর্টার পাঠিয়েছে।’

হামলার সময় এরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন আমার দেশ-এর বিরুদ্ধে। এ থেকে এটি পরিষ্কার, এ হামলা নির্দিষ্ট একজন সাংবাদিকের ওপর নয়; বরং সামগ্রিকভাবে আমার দেশ-এর বিরুদ্ধে। ফলে এ ঘটনাকে খাটো করে দেখার কোনো উপায় নেই। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ ঘটনায় আক্রান্ত সাংবাদিকদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করে দলের পক্ষ থেকে বিবৃতি দিয়েছেন। আমরা মনে করি, শুধু এই বিবৃতি দিয়ে দুঃখ প্রকাশই যথেষ্ট নয়। দায়ীদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া না হলে ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা আরো ঘটতে থাকবে। আশা করি, বিএনপি যদি মুক্তমত চর্চায় বিশ্বাসী হয়, তাহলে ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে দায়ীদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত