ত্রয়োদশ সংসদের ভোটের নিরাপত্তায় ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় এক হাজার ৫৫০ কোটি টাকা। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে পরামর্শ করে নির্বাচন কমিশন (ইসি) সম্ভাব্য এ ব্যয় নির্ধারণ করে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও সশস্ত্র বাহিনী বিভাগসহ মোট ৯টি খাতে এ ব্যয় হবে। তবে ভোটের পরিস্থিতি ও নিরাপত্তা বাহিনীর সংখ্যা কমবেশি হলে বরাদ্দ পরিবর্তন হতে পারে। গত সংসদ থেকে এবার প্রায় ৪০০ কোটি টাকা বেশি ব্যয় বরাদ্দ রাখা হয়েছে।
আমার দেশকে বিষয়টি নিশ্চিত করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও ইসির নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে, সারা দেশে এবার ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ৪২ হাজার ৭৬৬টি। এসব কেন্দ্র ও কক্ষের নিরাপত্তায় বিভিন্ন বাহিনীর সদস্যদের মোতায়েন করবে নির্বাচন কমিশন। অতীতের মতো এবারও ভোটের আগে-পরে পাঁচদিনের জন্যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে মাঠে রাখা হবে। কোনো কোনো বাহিনীকে আটদিনও রাখা হতে পারে। সে ক্ষেত্রে বরাদ্দ আরো বাড়তে পারে।
ইসিসংশ্লিষ্টরা জানান, এবার নির্বাচনে আট ধরনের ফোর্স মোতায়েন রাখা হবে। এর মধ্যে সশস্ত্র বাহিনীর (সেনা, নৌ ও বিমান) সদস্য, পুলিশ, র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব), চৌকিদার-দফাদার-গ্রাম পুলিশ ও ইউনিয়ন সচিব, আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্য, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি), বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড ও ফায়ার সার্ভিস। এসব বাহিনীর মধ্যে আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্যরা তিনদিন বেশি অর্থাৎ, আটদিন নির্বাচনের দায়িত্ব পালন করবেন।
বিভিন্ন বাহিনীর জন্য বরাদ্দ হওয়া তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, সবচেয়ে বেশি বরাদ্দ রাখা হয়েছে আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্যদের জন্য। ব্যালট পাহারাসহ ভোটকেন্দ্র পাহারায় এ বাহিনী গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন। তাদের জন্য বরাদ্দ প্রায় ৪৭৩ কোটি ৩৫ লাখ টাকা, যা গতবারের চেয়ে ১০০ কোটি বেশি।
বরাদ্দের দিক থেকে দ্বিতীয় অবস্থানে পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা। তাদের জন্য বরাদ্দ ২৮৯ কোটি ৫০ লাখ টাকা। গতবার বরাদ্দ ছিল ২৬৭ কোটি ৪২ লাখ টাকা। নির্বাচনি ব্যয় বরাদ্দে তৃতীয় অবস্থানে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। এ বাহিনীর জন্য বরাদ্দ ২৬৯ কোটি টাকা। গত সংসদে তাদের বরাদ্দ ছিল মাত্র ৮৭ কোটি টাকা। এর পর বিজিবির জন্য বরাদ্দ ২৩৮ কোটি ২৮ লাখ ৮১ হাজার ৩১
এছাড়া অন্যান্য বাহিনীর মধ্যে র্যাব, কোস্ট গার্ড, বাংলাদেশ নৌবাহিনী, বিমান বাহিনী, চৌকিদার-দফাদার-গ্রামপুলিশ ও ইউনিয়ন সচিব ও ফায়ার সার্ভিসের জন্য বরাদ্দ যথাক্রমেÑ৬৮ কোটি ৬২ লাখ টাকা, ৬৬ কোটি ৬২ লাখ টাকা, ৭৭ হাজার টাকা, ৩১ কোটি আট লাখ টাকা, ৪২ কোটি ৩৬ লাখ টাকা, ২৭ কোটি ৪০ লাখ টাকা এবং ৩৯ লাখ টাকা।
এছাড়া সশস্ত্র বাহিনীর জন্য পৃথক পাঁচ কোটি ৫৫ লাখ টাকা এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জন্য ১১ লাখ টাকাসহ মোট আইনশৃঙ্খলা নিরাপত্তায় বরাদ্দ এক হাজার ৫১২ কোটি ৩৪ লাখ টাকা, যা দ্বাদশ সংসদে ছিল এক হাজার ১৩৬ কোটি টাকা। সব মিলিয়ে গতবারের চেয়ে এবার নিরাপত্তা খাতে ব্যয় বেড়েছে ৪০০ কোটি টাকা।

