আজকের প্রজন্মকেও অতীত থেকে শিক্ষা নিতে হবে : ঢাবি উপাচার্য

প্রতিনিধি, ঢাবি
প্রকাশ : ২৩ আগস্ট ২০২৫, ১৪: ৫১

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় জাতীয় ইতিহাসের প্রতিটি ক্রান্তিকালে অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছে। আজকের প্রজন্মকেও অতীত থেকে শিক্ষা নিতে হবে এবং অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে হবে বলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য।

তিনি আরও জানান, চলমান ডাকসু নির্বাচন আয়োজন যেকোনো বিবেচনায় চ্যালেঞ্জিং হলেও জাতি এ নির্বাচনকে অত্যন্ত গুরুত্বসহকারে দেখছে।

বিজ্ঞাপন

প্রতিবছরের ধারাবাহিকতায় ২৩ আগস্ট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ‘কালো দিবস’ পালিত হয়েছে । ২০০৭ সালের ২০ থেকে ২৩ আগস্ট সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ওপর চালানো হামলা ও দমন-পীড়নের স্মরণে প্রতিবছর এ দিবস পালন করা হয়। ২০০৮ সাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার দিনটিকে “কালো দিবস” হিসেবে পালন করে আসছে।

এ উপলক্ষে শনিবার সকাল ১১টায় ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের (টিএসসি) মিলনায়তনে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।

আলোচনা সভায় উপাচার্য বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় জাতীয় ইতিহাসের প্রতিটি ক্রান্তিকালে অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছে। আজকের প্রজন্মকেও অতীত থেকে শিক্ষা নিতে হবে এবং অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে হবে।

তিনি আরও জানান, চলমান ডাকসু নির্বাচন আয়োজন যেকোনো বিবেচনায় চ্যালেঞ্জিং হলেও জাতি এ নির্বাচনকে অত্যন্ত গুরুত্বসহকারে দেখছে।

কালো দিবসের প্রেক্ষাপট

২০০৭ সালের ২০ আগস্ট বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ এবং লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থীদের মধ্যে একটি প্রীতি ফুটবল ম্যাচ চলাকালে সেনা সদস্যদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের তর্কাতর্কি হয়। এর জেরে সেনা সদস্যরা শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালান। প্রতিবাদ জানাতে গিয়ে লোকপ্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক মোবাশ্বের মোনেম সেনা সদস্যদের হাতে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত হন।

এ খবর ক্যাম্পাসে ছড়িয়ে পড়লে ছাত্ররা বিক্ষোভে ফেটে পড়ে এবং সেনা সদস্যদের ক্ষমা চাইতে বাধ্য করার দাবি তোলে। সেনাবাহিনী তাতে সাড়া না দেওয়ায় আন্দোলন তীব্র আকার ধারণ করে। ২১ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। নীলক্ষেত, টিএসসি, কার্জন হলসহ আশেপাশের এলাকায় শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশ টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। এতে শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন। আন্দোলনের মুখে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে সেনা ক্যাম্প সরিয়ে নিতে বাধ্য হয় সেনাবাহিনী।

এবারের কালো দিবস পালনের সময় বিশ্ববিদ্যালয়জুড়ে ডাকসু নির্বাচন নিয়ে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে। বক্তব্যে উপাচার্য নিয়াজ আহমেদ খান বলেন, ডাকসু নির্বাচন আয়োজনের জন্য নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী সব প্রক্রিয়া চলছে। প্রার্থীদের সঙ্গে একাধিকবার আলোচনা করা হয়েছে। কেউ যদি নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা করে, তবে দায়িত্ব ছেড়ে দিয়ে সেটি জাতির সামনে তুলে ধরব।

ইতোমধ্যে ডাকসু নির্বাচনে মোট ৫০৯ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এর মধ্যে ৪৬২ জনের মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। প্রার্থীরা আগামী ২৫ আগস্ট পর্যন্ত মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করতে পারবেন। ২৬ আগস্ট প্রকাশিত হবে চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা এবং নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ৯ সেপ্টেম্বর।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত