চব্বিশ হলো একাত্তরের ধারাবাহিকতা: নাহিদ ইসলাম

আমার দেশ অনলাইন
প্রকাশ : ০৮ আগস্ট ২০২৫, ১৮: ১৬
আপডেট : ০৮ আগস্ট ২০২৫, ১৮: ১৯

জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, চব্বিশ হলো একাত্তরের ধারাবাহিকতা । একাত্তর থাকবে ইতিহাসে, রাষ্ট্রের ভিত্তি ও নীতি হিসেবে তা সম্মানিত হবে।

বিজ্ঞাপন

শুক্রবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ‘একাত্তর ও চব্বিশ’ শিরোনামে দেয়া দেওয়া এক স্ট্যাটাসে তিনি এ মন্তব্য করেন।

নাহিদ ইসলাম লেখেন, আমরা আগেও বলেছি—চব্বিশ আসলে একাত্তরেরই ধারাবাহিকতা। ১৯৭১ সালের যে আকাঙ্ক্ষা ছিল—সমতা, মর্যাদা ও ন্যায়বিচার—তা নতুন করে নিশ্চিত হয়েছে ২০২৪ সালের বৈষম্যবিরোধী ও গণতান্ত্রিক অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে।

তিনি লেখেন, ‘মুজিববাদ’ ১৯৭১-কে ভারতীয় বয়ানের সঙ্গে মেলানোর চেষ্টা করেছিল, যা জাতীয় স্বার্থ ও সার্বভৌমত্বকে ক্ষুণ্ন করেছে। কিন্তু ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থান সেই বয়ান ভেঙে দিয়ে দেশকে একনায়কতন্ত্র, ফ্যাসিবাদ ও আধিপত্যবাদ থেকে মুক্তির জন্য ঐক্যবদ্ধ করেছে।

‘চব্বিশের পর জন্ম নিয়েছে নতুন রাজনৈতিক বাস্তবতা ও নতুন প্রজন্ম—যারা এই লড়াইয়ে অংশ নিয়ে বিজয়ী হয়েছে’ উল্লেখ করে তিনি আরও লেখেন, আমরা একাত্তর থেকে অগ্রসর হয়ে এসে পৌঁছেছি চব্বিশে। এখন যারা ‘একাত্তরের পক্ষে বা বিপক্ষে’— এ পুরোনো রাজনৈতিক বিভাজন ফিরিয়ে আনতে চাইছে, তারা দেশকে সেকেলে কাঠামোয় টেনে নিচ্ছে।

তিনি লেখেন, কিন্তু আমরা চব্বিশ থেকে নতুন শুরু চাই—যেখানে এ অভ্যুত্থান থেকে উদ্ভূত মূল্যবোধ ও আকাঙ্ক্ষার ওপর ভিত্তি করে একটি নতুন রাজনৈতিক সংস্কৃতি গড়ে উঠবে। মুজিববাদসহ সব ধরনের স্বৈরাচারী ও ফ্যাসিবাদী শক্তিকে পরাস্ত করা এখন রাষ্ট্র ও সমাজকে ঐক্যবদ্ধ ও গণতান্ত্রিক করার অন্যতম দায়িত্ব।

‘একাত্তর থাকবে ইতিহাসে, রাষ্ট্রের ভিত্তি ও নীতি হিসেবে তা সম্মানিত হবে, কিন্তু আর রাজনৈতিক বৈধতার একমাত্র মাপকাঠি হবে না’ তিনি পোস্টে উল্লেখ করেন। তিনি লেখেন, যেমন ১৯৪৭-এর ঐতিহাসিক গুরুত্ব রয়েছে, তবে তা রাজনৈতিক হাতিয়ার নয়, তেমনি একাত্তর থাকবে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণীয়, কিন্তু রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহারযোগ্য হবে না।

তিনি আরও বলেন, এর মানে এই নয় যে আমরা অতীতের ঘটনা নিয়ে আলোচনা করব না—বরং নতুন রাজনৈতিক বাস্তবতায় ঐতিহাসিক প্রশ্নগুলোর সুষ্ঠু সমাধান সম্ভব হবে। রাজনীতি এখন হতে হবে চব্বিশের মূল্যবোধ ও আদর্শের ওপর ভিত্তি করে।

সাবেক এ উপদেষ্টা বলেন, যারা আবার একাত্তরে ফিরে যেতে চায়, তারা চব্বিশের রাজনৈতিক বাস্তবতাকেই অস্বীকার করছে। ২০২৪ সালের অভ্যুত্থান অনেক রাজনৈতিক দল ও শক্তির জন্য ছিল এক ধরনের প্রায়শ্চিত্ত, যাদের সক্রিয় অংশগ্রহণের মাধ্যমে তা সম্ভব হয়েছে। কিন্তু পুরোনো আদর্শিক দ্বন্দ্বে ফিরে গেলে সেই প্রায়শ্চিত্তের মূল্য হারিয়ে যাবে। পুরোনো দ্বৈত রাজনৈতিক কাঠামো পুনরুজ্জীবিত হওয়ার সুযোগ নেই—এটাই এখন আমাদের দায়িত্ব।

২০২৪ সালের আন্দোলনের প্রকৃতি তুলে ধরে তিনি লেখেন, এটি কোনো প্রতিশোধের লড়াই ছিল না; বরং জাতীয় ঐক্য ও সংহতির একটি মঞ্চ। এর চেতনা ভবিষ্যত গঠনে—যা গড়ে উঠবে ঐক্যমত, সহানুভূতি ও সমবায়ের ভিত্তিতে, প্রতিশোধের রাজনীতির নয়।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত