আদানিকে আংশিক পেমেন্ট দেওয়া হচ্ছে: ফাওজুল কবির

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ : ১০ নভেম্বর ২০২৫, ২২: ১২
ফাইল ছবি

ভারতীয় কোম্পানি আদানির বকেয়া বাবদ আংশিক পেমেন্ট দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. ফাওজুল কবির খান।

সোমবার গণমাধ্যমকে তিনি এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

বিজ্ঞাপন

বকেয়া বিল পেমেন্টের দাবিতে দেওয়া আদানির আল্টিমেটাম শেষ হয়েছে আজ সোমবার (১০ নভেম্বর)। বকেয়া ৪৯৬ মিলিয়ন ডলার না পেলে ১১ নভেম্বর থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছে কোম্পানিটি।

বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. ফাওজুল কবির খান বলেছেন, আদানির সঙ্গে কিছু বিষয় নিয়ে মতপার্থক্য রয়েছে। আদানির দুর্নীতির বিষয়ে হাইকোর্টে একটি রিট হয়েছে। আমরা অন প্রটেস্ট আংশিক পেমেন্ট দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, বকেয়া বাবদ ১’শ মিলিয়ন ডলার পেমেন্ট দেওয়ার বিষয়ে আদানিকে জানানো হয়েছে। ইতোমধ্যেই ব্যাংকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে পেমেন্ট দেওয়ার জন্য। ব্যাংক এক দফায় দেবে না, চলতি মাসের মধ্যে কয়েক দফায় ১’শ মিলিয়ন ডলার পেমেন্ট প্রদান করবে।

আংশিক পেমেন্টের বিষয়ে আদানি কি প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে ওই কর্মকর্তা বলেছেন, এটা বোঝা যাবে ১১ নভেম্বর। এখনই এ বিষয়ে কোনো কিছু বলা যাচ্ছে না।

নভেম্বর মাসের শুরুতে বকেয়া পেমেন্টের জন্য চিঠি দিয়ে আল্টিমেটাম দেয় আদানি পাওয়ার লিমিটেড। এতে বকেয়া ৪৯৬ মিলিয়ন ডলার ১০ নভেম্বরের মধ্যে পরিশোধ করতে বলা হয়। চিঠিতে বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তির ধারা ১৩.২ (১) এবং (২) উদ্ধৃত করে, আদানি পাওয়ার বলেছে, বিপিডিবি বকেয়া পরিশোধ করতে ব্যর্থ হওয়ায় কোম্পানিটি বিদ্যুৎ সরবরাহ স্থগিত করার অধিকার পেয়েছে। যদি ১০ নভেম্বরে মধ্যে সমস্ত বকেয়া পরিশোধ না করা হয়, তাহলে ১১ নভেম্বর থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্থগিত করা ছাড়া আমাদের আর কোনো বিকল্প থাকবে না।

আদানি তার চিঠিতে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকলেও, স্থগিতের ঠিক আগে নির্ভরযোগ্য ক্ষমতার ওপর ভিত্তি করে ক্যাপাসিটি পেমেন্ট পাওয়ার অধিকার তাদের থাকবে বলে উল্লেখ করেছে।

বকেয়ার পরিমাণ নিয়ে বাংলাদেশ এবং আদানির মধ্যে মতপার্থক্য রয়েছে। আদানি ৪৯৬ মিলিয়ন ডলার বকেয়া দাবি করলেও বাংলাদেশ বলছে ২৬২ মিলিয়ন ডলার। এরমধ্যে কয়লার দাম এবং বিলম্ব জরিমানা ইস্যু জড়িত। আদানি কয়লার আন্তর্জাতিক দর অনুযায়ী দাবি করলেও বাংলাদেশ ইন্দোনেশিয়ার ইনডেক্স অনুযায়ী দর কষে যাচ্ছে। এখানে বিশাল পার্থক্য রয়েছে।

ভারতের ঝাড়খণ্ড রাজ্যের গোড্ডায় অবস্থিত আদানি গ্রুপের ওই বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি থেকে ১৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি করে বাংলাদেশ। যা চাঁপাইনবাবগঞ্জের রহনপুর হয়ে বাংলাদেশে আসে। আদানির বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রথম ইউনিট থেকে গড়ে ৭৫০ মেগাওয়াট করে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হয় ২০২৩ সালের মার্চে। দ্বিতীয় ইউনিট থেকে উৎপাদন শুরু হয় জুনে।

২০১৭ সালে আদানি গ্রুপের সঙ্গে বিদ্যুৎ ক্রয়চুক্তি করে পিডিবি। চুক্তি অনুসারে আদানি গ্রুপের কোম্পানি আদানি পাওয়ারের বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি থেকে ২৫ বছর বিদ্যুৎ কিনে নেবে পিডিবি। বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি বাংলাদেশ বিদ্যুৎ সরবরাহের লক্ষ্যে নির্মাণ করা হয় তবে গত বছর ভারতেও সরবরাহের বিকল্প তৈরি করা হয়েছে।

আমার দেশের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত