কমছে গ্যাসের উৎপাদন, তীব্র সংকটের আশঙ্কা

বিশেষ প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৯ জুলাই ২০২৫, ১৯: ৩৪
আপডেট : ২৯ জুলাই ২০২৫, ২৩: ১০

‘দ্রুত গ্যাসের উৎপাদন কমছে। জরুরি পদক্ষেপ না নিলে আগামী ছয় মাসের মধ্যে দেশে জ্বালানি সংকট তীব্র হতে পারে।’ পেট্রোবাংলা আয়োজিত সেমিনারে এমন আশঙ্কার কথা বলেছেন জ্বালানি বিশেষজ্ঞ, গণমাধ্যম প্রতিনিধি ও সংশ্লিষ্ট খাতের প্রকৌশলীরা।

পেট্রোবাংলা জানিয়েছে, বর্তমান সরকার বিপুল পরিমাণ বিদেশি দেনা শোধ করেছে। এখন গ্যাস উত্তোলন ও ল্যান্ডবেজড এলএনজি টার্মিনাল স্থাপরকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। শিগগিরই এসবের অগ্রগতি দৃশ্যমান হবে।

বিজ্ঞাপন

মঙ্গলবার রাজধানীর কাওরান বাজারে পেট্রোবাংলার সম্মেলন কক্ষে ‘জ্বালানি খাতের নিরাপত্তা ও চ্যালেঞ্জে মিডিয়ার ভূমিকা’ শীর্ষক এ সেমিনার হয়। এতে ফোরাম ফর এনার্জি রিপোর্টার্স বাংলাদেশের সদস্যরা অংশ নেন।

সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. ইজাজ হোসেন। সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান প্রকৌশলী রেজানুর রহমান। আলোচনা করেন পেট্রোবাংলার পরিচালক (অপারেশন অ্যান্ড মাইন্স) প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম, পেট্রোবাংলা পরিচালক (অর্থ) মো. মিজানুর রহমান, পেট্রোবাংলার পরিচালক আব্দুল মান্নান পাটোয়ারী, পেট্রোবাংলার পরিচালক (প্রশাসন) আলতাফ হোসেন, ফোরাম ফর এনার্জি রিপোর্টার্স বাংলাদেশের চেয়ারম্যান শামীম জাহাঙ্গীরসহ পেট্রোবাংলা ও বিভিন্ন বিতরণ কোম্পানির শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তারা।

ড, ইজাজ হোসেন বলেন, প্রয়োজন অনুযায়ী আমাদের কূপ অনুসন্ধান কার্যক্রম করা যায়নি। যে কারণে আজকে গ্যাসের সংকট তৈরি হয়েছে। প্রতিদিনই গ্যাসের উৎপাদন কমছে। যেকোন দিন আরও বড়ধরণের ঘটনা ঘটতে পারে। কূপ খনন আরও বাড়ানো উচিত, না হলে আমদানি করে গ্যাস সংকট মোকাবিলা করা কঠিন। গভীর সমুদ্রে মনোযোগ দেওয়া উচিত বলে অভিমত এ জ্বালানি বিশেষজ্ঞের।

পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান এখন আন্তর্জাতিক বাজারে এলএনজির দাম কম। আর কিছুদিন পরেই ইউরোপে শীতের প্রকোপ বেড়ে গেলে দাম বেড়ে যাবে। আমাদের ল্যান্ডবেজড টার্মিনাল থাকলে এখন কমদামে কিনে মজুদ করা যেতো। তাহলে শীতের সময়ে বেশিদামে এলএনজি আমদানি করতে হতো না।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে চেয়ারম্যান বলেন, ক্যাপটিভ বিদ্যুতে গ্যাস সরবরাহ নিরুৎসাহিত করার সিদ্ধান্ত রয়েছে। আমরা আর দশ মেগাওয়াটের বেশি কোন প্রকল্পে গ্যাস সংযোগ দিবো না। শিল্পে গ্যাস সংযোগ ৩টি শ্রেণিতে ভাগ করা হয়েছে। এক হচ্ছে গ্যাস সংযোগ পেলে দ্রুত সময়ের মধ্যে উৎপাদনে যেতে পারবে।

অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দেশীয় গ্যাসের অনুসন্ধান ও উৎপাদন কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে। ৫০ কূপ খনন প্রকল্পের পাশাপাশি ১০০ কূপ খনন প্রকল্পের কার্যক্রম দ্রুত এগিয়ে চলছে।।আমরা আশাকরছি এর মাধ্যমে ভবিষ্যতে দেশীয় গ্যাসের উৎপাদন অনেক বাড়বে।

প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম বলেন, ১০০ কূপ প্রকল্পের আওতায় ৬৯টি অনুসন্ধান ও উন্নয়ন কূপ খনন করা হবে। এর মাধ্যমে দৈনিক গ্যাস উৎপাদন আরও ৯৮৫ মিলিয়ন বাড়বে। আর ৩১ ওয়ার্কওভার থেকে ৪০০ থেকে ৫০০ মিলিয়ন উৎপাদন বাড়বে। ১০০ কূপ থেকে ১৯ টি কূপ অগ্রাধিকার ভিত্তিতে চুড়ান্ত করা হয়েছে। ২০২৬ সালের মধ্যে শেষ হলে ওই ১৯টি কূপ থেকে ২৭৭ মিলিয়ন গ্যাস উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত