জাতীয় কর্মশালায় শিক্ষাবিদরা

শিক্ষা-প্রশিক্ষণের সর্বস্তরে ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা বাধ্যতামূলক করতে হবে

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ : ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৯: ১০

চরম সংকট আবর্তে ইসলাম শিক্ষা: উত্তরণ কর্মকৌশল বিষয়ক জাতীয় কর্মশালায় বক্তারা বলেছেন, নৈতিক অবক্ষয় রোধ, ধর্মীয় নৈতিক সমাজ ও রাষ্ট্র পরিগঠন ও নৈতিকতায় উজ্জীবিত করতে শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের সর্বস্তরে ধর্মীয় নৈতিক শিক্ষা আবশ্যিকভাবেই কারিকুলাম ও সিলেবাসে অন্তর্ভুক্ত রাখতে হবে।

শুক্রবার সকালে বাংলাদেশ ইসলামিক স্টাডিজ ফোরামের উদ্যোগে ঢাকা কলেজ অডিটরিয়ামে আয়োজিত কর্মশালায় বক্তারা এ মন্তব্য করেছেন ।

বিজ্ঞাপন

তারা বলেন, ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষে উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ে ভর্তি নীতিমালায় ‘ইসলাম শিক্ষা’বিষয়টি এবারও ঐচ্ছিক বা চতুর্থ বিষয় হিসেবে রাখা হয়েছে। যা বিগত পতিত সেক্যুলার ফেসিস্টদেরই পুনরাবৃত্তি এবং জুলাই বিপ্লবের শহীদের রক্তের সঙ্গে বেইমানি। ইসলাম প্রিয় দেশবাসী, অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের প্রাণের দাবি- উচ্চমাধ্যমিকের সব শাখায় ‘ইসলাম শিক্ষা’অন্তর্ভুক্ত করে আবশ্যিক হিসেবে পড়ার ব্যবস্থা করতে হবে। অথবা ২০১২ সালের আগে অবস্থায় ফিরিয়ে দিতে হবে।

বক্তারা আরও বলেন, বাংলাদেশ একটি ধর্মপ্রাণ মানুষের দেশ। এই দেশের রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম। সংখ্যা গরিষ্ঠ মুসলিম নাগরিকের ধর্ম ইসলাম। অন্যান্য ধর্মের নাগরিকরাও ধর্মপ্রাণ। কিন্তু রাষ্ট্রের নাগরিক ও নতুন প্রজন্মের জন্য জাতীয় শিক্ষা নীতি ও ব্যবস্থায় শিক্ষার কোনো স্তরেই ‘ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা’ গুরুত্ব ও আবশ্যিকভাবে পঠন পাঠনের ব্যবস্থা নেই। নাগরিকরা ধর্মশিক্ষা নানা সোর্স থেকে শেখে। ফলে অশিক্ষা কুশিক্ষা কুসংস্কারে আচ্ছন্ন হয়ে ধর্মান্ধতা ও উগ্রতার উন্মেষ ঘটে। বৃহত্তর জনগোষ্ঠী ধর্ম ও নৈতিকতায় অজ্ঞ থেকে সমাজ এবং রাষ্ট্রের সর্বক্ষেত্রে অনৈতিকতা ও অবক্ষয়ের সয়লাব ঘটায়।

কর্মশালা থেকে সাত দফা দাবি জানানো হয়। দাবিগুলো হলো-প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণি হতে প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্তরের সব শাখায় ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা বাধ্যতামূলক ও সিলেবাসের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। স্নাতক পাস কোর্স, স্নাতক অনার্স ও স্নাতকোত্তর স্তরের সকল বিষয়, সাবজেক্ট, ডিসিপ্লিন এবং প্রোগ্রামে ‘ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা’ ন্যূনতম ১০০ নম্বরের ১টি বিষয় আবশ্যিকভাবে সিলেবাসে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।

্সব কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসলামিক স্টাডিজ বিষয় ও বিভাগ খুলতে হবে। বিজ্ঞান প্রযুক্তি মেডিকেল প্যারা মেডিকেল কারিগরি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রত্যেক ডিসিপ্লিনে ১০০ নম্বরের ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা আবশ্যিক করতে হবে। প্রশাসন, বিচারবিভাগ, শিক্ষা-প্রশিক্ষণ ইন-সার্ভিস প্রশিক্ষণ এবং সামরিক নৌবাহিনী বিমান বাহিনী পুলিশ বাহিনীসহ সব ক্ষেত্রে ন্যূনতম ১০০ নম্বরের ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা আবশ্যিক করতে হবে। মধ্যপ্রাচ্যের জব মার্কেট পেতে এবং ধর্মীয় ও আন্তর্জাতিক ভাষা হিসেবে আরবি ভাষা শিক্ষা গুরুত্বসহ সিলেবাসের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব সুরক্ষা এবং সুঠাম কর্মক্ষম জাতি পরিগঠনের লক্ষ্যে প্রাথমিক সামরিক শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ শিক্ষায় আবশ্যিক করতে হবে।

অধ্যাপক ড. শাহ মুহাম্মদ আব্দুর রাহীমের সভাপতিত্বে ও সহকারী অধ্যাপক মো. রুহুল আমিনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত কর্মশালায় প্রধান অতিথি ছিলেন ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. আবু জাফর খাঁন। বিশেষ অতিথি ছিলেন অধ্যক্ষ-উপাধ্যক্ষ ফোরামের মহাসচিব মো. আবদুর রহমান, অধ্যাপক ড. মো. জহিরুল ইসলাম, অধ্যাপক ড. মো. সাইদুল হক, অধ্যাপক মো. আতাউর রহমান, ড. আব্দুস ছবুর মাতব্বর, অধ্যাপক ফেরদাউস আরা খানম, অধ্যাপক মোয়াজ্জেম হোসেন, ড. আতিকুল ইসলামসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। কর্মশালায় লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন অধ্যাপক ড. শাহ মুহাম্মদ আব্দুর রাহীম।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত