অত্যাধুনিক হোস্টেল পাচ্ছেন সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা

দীর্ঘদিনের দাবির পর অবশেষে অত্যাধুনিক হোস্টেল পাচ্ছেন স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা। যেখানে ১৫ তলা বিশিষ্ট ছাত্র হোস্টেল নির্মাণে ব্যয় হবে ১০১ কোটি ৭৭ লাখ টাকা। এতে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধার সঙ্গে আবাসিক কক্ষ থাকবে ৩১২টি, আসন থাকবে ৯৩৬টি। আর দুটি ১২তলা বিশিষ্ট্য ছাত্রী হোস্টেল তৈরিতে ব্যয় হবে ৪৬ কোটি ৫৩ লাখ টাকা। এখানে ১৪৪টি কক্ষে আসন থাকছে ৫০৪টি।

বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) এসব হোস্টেলের নির্মাণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম। দেশের ১০টি মেডিকেল কলেজের ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য আধুনিক সুবিধা সম্বলিত ১৯টি হোস্টেল নির্মাণ কাজ সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ দিয়ে শুরু হলো।

স্বাস্থ্য উপদেষ্টা বলেন, আমাদের শিক্ষার্থীরা পুরনো ভাঙা হোস্টেলে থেকেছে। কখন ভেঙ্গে পড়ে এমন শঙ্কায় ছিল তারা। এরকম ঝুঁকি নিয়ে তো আর পড়ালেখা করা যায় না। তাদের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল, নতুন হোস্টেলের। এটা শুধু দাবি নয়, তাদের অধিকারও। আমাদের ছেলে-মেয়েরা সুন্দর জায়গা থেকে পড়াশোনা করুক এটা আমরা চাই। এই হোস্টেল হয়ে উঠুক তাদের নিরাপদ জায়গা। আনন্দের জায়গা। এখানে তাদের সৃজনশীল কর্মকাণ্ড বিকশিত হোক। আউটডোর কিংবা ইনডোর নানা শারীরিক চর্চা বা খেলাধুলা হোক। আমাদের ছেলে মেয়েরা এক সময় দেয়াল পত্রিকা, ম্যাগাজিন প্রকাশ করত, ডিবেট ক্লাব ছিল। আমি আশা করব, তারা নিজেদের সৃজনশীল কাজে জড়িত করবে।’

এ সময় মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ ও হৃদরোগীদের জন্য বিনামূল্যে নেদারল্যান্ডস থেকে ১৭ কোটি টাকার জরুরি ওষুধ ব্যবস্থাপনা করা রাজশাহী মেডিকেল কলেজের (রামেকের) শিক্ষানবিশ চিকিৎসক শীর্ষ শ্রেয়ানের প্রশংসা করেন তিনি। নূরজাহান বেগম বলেন, ‘শিক্ষানবিশ চিকিৎসক শীর্ষ শ্রেয়ানের গবেষণা ও প্রচেষ্টার কারণে নেদারল্যান্ডস থেকে দুই হাজার ৫০০ ভায়াল অ্যাল্টেপ্লেস ইনজেকশন এসেছে। এরই মধ্যে এসব জীবন রক্ষাকারী ওষুধ প্রয়োগ শুরু হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘মানুষের জীবন রক্ষায় তার (শীর্ষ শ্রেয়ান) উদ্যোগের কথা আমি পত্র-পত্রিকার মাধ্যমে জেনেছি। তার মধ্যে মানুষের প্রতি মমত্ববোধ-দরদ আছে। যার কারণে সে উদ্বুদ্ধ হয়েছে। আমি চাই, আমাদের প্রতিটি ছেলে-মেয়ের মধ্যে এই মানবিকতা তৈরি হোক।

এ সময় স্বাস্থ্য শিক্ষা সচিব ডা. মো. সারোয়ার বারী বলেন, আমি নিজেও এই কলেজের শিক্ষার্থী ছিলাম। এখানে আবাসন সংকট অত্যন্ত প্রকট। আজকের এই কাজের উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের আবাসন সমস্যার সমাধান হবে। আধুনিক হোস্টেল তৈরি হবে। এখানে শুধু আবাসন নয়, এক্সট্রা কারিকুলাম অ্যাক্টিভিটি, জিমনেশিয়ামসহ প্রয়োজনীয় সকল ধরনের সুযোগ সুবিধা থাকবে। আশা করি, এর মধ্যে দিয়ে আমাদের ছাত্র-ছাত্রীদের পড়াশোনা করার ভালো পরিবেশ তৈরি হবে।

এ সময় স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. নাজমুল হোসেন, স্বাস্থ্য সেবা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবু জাফরসহ স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ, হাসপাতালের পরিচালকসহ সরকারের পদস্থ কর্মকর্তা এবং বিভিন্ন পর্যায়ের চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।