ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান হাদির ওপর হামলার ঘটনায় নিন্দা ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে গণতান্ত্রিক সংস্কার জোট। এ জোটের নেতারা মনে করেন, হাদীর ওপর হামলা প্রমাণ করে যে দেশে নির্বাচন ও সংস্কার যাত্রা বানচালের চক্রান্ত চলছে।
শুক্রবার রাতে জোটের পক্ষে বাংলাদেশ রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দিদার ভূঁইয়ার পাঠানো সংবাদ বিবৃতিতে এসব কথা বলা হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, তফশিল ঘোষণার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ঢাকা ৮ আসনের প্রার্থী ও জুলাই যোদ্ধা ওসমান হাদীর ওপর হত্যার উদ্দেশ্যে সশস্ত্র হামলা হয়েছে। তার জীবন এখন সংকটাপন্ন। এ ঘটনা দেশের বিবেককে যেমন একটা বড় ধাক্কা দিয়েছে, তেমনি দেশের সার্বিক আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি যে ভয়াবহভাবে নাজুক সেটা প্রকাশ করেছে। গণতান্ত্রিক সংস্কার জোটের অন্তর্গত তিনটি দলের সদস্যরা ওসমান হাদির দ্রুত সুস্থতা কামনা করে এ হামলার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
যৌথ বিবৃতিতে জোটের মুখপাত্র ও জাতীয় নাগরিক পার্টি- এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সভাপতি এডভোকেট হাসনাত কাইয়ূম এবং আমার বাংলাদেশ পার্টির (এবি পার্টি) চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, গত ১৬ মাসে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির কাঙ্ক্ষিত কোনো উল্লেখযোগ্য উন্নতি হয় নাই। এমনকি সরকারের মধ্যে সেই প্রচেষ্টাও কোনো দৃশ্যমান পর্যায়ে ছিল না। পরিস্থিতি আতঙ্কজনক পর্যায়ে পৌঁছেছে। জুলাই যোদ্ধা ও ঢাকা ৮ আসনের প্রার্থী ওসমান হাদীর ওপর যেভাবে টার্গেট করে হামলা করা হয়েছে, তা প্রমাণ করে যে কেবল প্রশিক্ষিত শ্যুটারদের পক্ষেই এই কাজ করা সম্ভব।
তিন দলের এ জোটের নেতারা সাম্প্রতিক কিছু ঘটনার কথা উল্লেখ করে বলেন, এর আগে বরিশাল, নোয়াখালীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সামনেই নির্বাচনি প্রার্থীদের নাজেহাল, হামলা এমনকি গুলি বর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। সেসব ঘটনা প্রতিরোধে বা বিচারে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী সম্পূর্ণ ব্যর্থ ছিল। এবার ওসমান হাদীর ওপর হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ন্যূনতম সক্ষমতা, গোয়েন্দাবাহিনীগুলোর ন্যূনতম তৎপরতা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নূন্যতম দায়িত্বশীলতা ও জবাবদিহিতা থাকলে একের পর এক এসব ঘটনা ঘটতে পারে না। পুলিশ ও প্রশাসন সংস্কার ব্যর্থ হবার ফলাফল এটা।
জোটের তিন নেতা ওসমান হাদীর উপর সশস্ত্র হামলার ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবি করেন। একই সঙ্গে আশঙ্কা প্রকাশ করে তারা বলেন, নির্বাচন বানচাল করার একটা চক্রান্ত দেশে ক্রিয়াশীল। অরাজকতা তৈরি করে পরাজিত মাফিয়া গোষ্ঠীর দেশে ফেরার পথ সুগম করার জন্য একটি গোষ্ঠী কাজ করছেন। এখনই সরকার, নির্বাচন কমিশন, গোয়েন্দা বাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীগুলো দায়িত্বশীল ও উদ্যমী না হলে সামনের দিনে পরিস্থিতি আরও ভয়ংকর হতে পারে। এমন কোন পরিস্থিতির দায় তারা কেউ এড়াতে পারবেন না।

