মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে গৃহায়ন উপদেষ্টা

ফ্যাসিবাদ পরাজিত হলেও মাঝে মাঝেই ছায়া ফিরে আসে

প্রতিনিধি, ঢাবি
প্রকাশ : ২৫ অক্টোবর ২০২৫, ১৭: ০৮
আপডেট : ২৫ অক্টোবর ২০২৫, ১৭: ২১

‘আয়নাঘরের সাক্ষী: গুম জীবনের আট বছর’ বইটির মোড়ক উন্মোচন করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে গৃহায়ন ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান বলেছেন, ফ্যাসিবাদ পরাজিত হলেও তার ছায়া মাঝে মাঝেই ফিরে আসে। তাই নতুন বাংলাদেশ গঠনের সংগ্রাম অব্যাহত রাখতে দল-মত নির্বিশেষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।

শনিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ মুজিবুর রহমান হল অডিটরিয়ামে ‘গুম: ফ্যাসিবাদী শাসনের নিকৃষ্ট হাতিয়ার’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান।

বিজ্ঞাপন

ব্যারিস্টার মীর আহমাদ বিন কাসেম (আরমান) রচিত ‘আয়নাঘরের সাক্ষী: গুম জীবনের আট বছর’ বইটির মোড়ক উন্মোচন উপলক্ষে এ সেমিনারের আয়োজন করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও প্রচ্ছদ প্রকাশন।

অনুষ্ঠানে আদিলুর রহমান খান বলেন, “জুলাই মাত্র ছত্রিশ দিনেই বাংলাদেশকে বদলে দিয়েছে। শত শত শহীদের আত্মত্যাগ ও আহতদের সংগ্রামের মধ্য দিয়ে ফ্যাসিবাদী শাসনের অবসান ঘটেছে। আজ বাংলাদেশ এক নতুন মোহনায় দাঁড়িয়ে আছে।”

তিনি আরও বলেন, “যারা একসময় গুমের শিকার হয়েছিলেন, আজ তারা কথা বলতে পারছেন। আমরা জানতাম না তারা কোথায় আছেন, কারণ ফ্যাসিবাদী শাসন তখন পুরো বাংলাদেশকেই বন্দি করে রেখেছিল। এখন দেশ বিচারবহির্ভূত হত্যা, দমন-নিপীড়নের অন্ধকার থেকে বেরিয়ে এসেছে। অপরাধীদের বিচারের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে, অন্যায়ের অবসান ঘটবে।”

জুলাই জাতীয় সনদ ও জুলাই ঘোষণার প্রতি গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, “অন্তর্বর্তী সরকার এই দুই ঐতিহাসিক দলিলের আলোকে রাষ্ট্র সংস্কার এবং নতুন বাংলাদেশ নির্মাণে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। যদিও ফ্যাসিবাদ পরাজিত হয়েছে, কিন্তু এটি বারবার ফিরে আসার চেষ্টা করে। তাই আমাদের ঐক্যই হবে তার বিরুদ্ধে সবচেয়ে শক্তিশালী অস্ত্র।”

অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) ভিপি আবু সাদিক কায়েম বলেন, “বাংলাদেশে খুনি হাসিনা ও তার দোসরদের রাজনীতি করার কোনো অধিকার নেই। যেখানেই তাদের পাওয়া যাবে, আইনের হাতে তুলে দিতে হবে।”

তিনি বলেন, “জার্মানিতে যেমন নাৎসি বাহিনী নিষিদ্ধ করা হয়েছে, ইতালিতে যেমন মুসোলিনির রাজনীতি নিষিদ্ধ করা হয়েছে, তেমনই বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদী রাজনীতির কোনো স্থান নেই। যারা গুম, খুন ও রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসে জড়িত ছিল, তাদের সবাইকে বিচারের আওতায় আনতে হবে।”

সাদিক কায়েম আরও বলেন, “জুলাই বিপ্লবের মধ্য দিয়ে আমরা অনেক গুমভুক্ত ব্যক্তিকে ফিরে পেয়েছি। কিন্তু এখনও অনেকের কোনো খবর নেই। আমরা চাই সকল গুমের বিচার হোক এবং সকল কিলার জেনারেলদের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের আওতায় আনা হোক।”

গুমবিরোধী সংগঠন ‘মায়ের ডাক’-এর অন্যতম সংগঠক সানজিদা ইসলাম তুলি বলেন, “‘আয়নাঘরের সাক্ষী’ বইটি শুধু একটি স্মৃতিকথা নয়, এটি বাংলাদেশের অন্ধকার অধ্যায়ের জীবন্ত সাক্ষী। আওয়ামী ফ্যাসিস্ট শাসনের সময় মতের পার্থক্যের কারণে যাদের তুলে নেওয়া হয়েছিল, তাদের নির্যাতনের ইতিহাস এই বইতে সংরক্ষিত হয়েছে।”

তিনি আরও বলেন, “আমরা বিশ্ববাসীকে জানাতে চাই, ভিন্ন মতের জন্য কিভাবে মানুষকে গুম করা হয়েছে। একসাথে থাকলে আমরা সেই অন্যায়ের বিচার নিশ্চিত করতে পারব।”

বইটির লেখক ও গুমের ভুক্তভোগী ব্যারিস্টার মীর আহমাদ বিন কাসেম আরমান বলেন, “হতাশ হওয়া চলবে না। আমি এখনও আশা দেখি- একটি বৈষম্যহীন, মানবিক ও সংবিধানসম্মত বাংলাদেশ গঠনের। যেখানে কেউ অন্যায়ের শিকার হবে না, বিচারহীনতার সংস্কৃতি থাকবে না।”

অনুষ্ঠানে ডাকসুর নেতৃবৃন্দ, শিক্ষক-শিক্ষার্থী, মানবাধিকার কর্মী ও বিভিন্ন নাগরিক সংগঠনের প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।

আমার দেশের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

মুসলিম বিশ্বে পাকিস্তানের অবদানের প্রশংসা করে যা বললেন সিসি

সংঘাতের জন্য সবাই মুখিয়ে আছে: তথ্য উপদেষ্টা

শক্তি সঞ্চয় করছে ঘুর্ণিঝড় ‘মন্থা’, গতিপ্রকৃতি সম্পর্কে যা জানা যাচ্ছে

ছাত্রদল নেতার বিরুদ্ধে প্রবাসীর স্ত্রীকে শ্লীলতাহানি ও লুটপাটের অভিযোগ

চেলোপাড়ায় অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ১৭৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত