১৯৮০-এর দশকের গণতান্ত্রিক আন্দোলনে বেগম খালেদা জিয়া আশার আলো হয়ে আবির্ভূত হন। পরবর্তীকালে বাংলাদেশকে রাষ্ট্রপতি শাসনব্যবস্থা থেকে সংসদীয় গণতন্ত্রে রূপান্তরে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তিনি নারীর শিক্ষা ও ক্ষমতায়নে অবদানের জন্য ২০০৫ সালে বিশ্বখ্যাত ফোর্বস ম্যাগাজিনের ‘বিশ্বের সবচেয়ে প্রভাবশালী নারী’ তালিকায় স্থান পান, যেখানে তিনি ২৯তম স্থানে ছিলেন।
নারীর ক্ষমতায়নের ভিত্তি প্রথম স্থাপন করেছিলেন প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান। তিনি মহিলা বিষয়ক মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা করেন, সরকারি চাকরি ও শিক্ষায় নারীদের জন্য সংরক্ষিত কোটা চালু করেন এবং পুলিশ ও স্থানীয় সরকার কাঠামোতে নারীদের অন্তর্ভুক্ত করেন। এসব পদক্ষেপ নারীদের জাতীয় উন্নয়নের মূলধারায় নিয়ে আসে।
বেগম খালেদা জিয়া সেই ভিত্তিকে সম্প্রসারিত করে জাতীয় রূপান্তরে পরিণত করেন। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তিনি নারীর শিক্ষা, স্বাস্থ্য, আইনগত অধিকার এবং রাজনৈতিক প্রতিনিধিত্বে সবচেয়ে ব্যাপক উদ্যোগগুলোর কিছু চালু করেন।
তার যুগান্তকারী ‘ফিমেল সেকেন্ডারি স্কুল অ্যাসিস্ট্যান্স প্রোগ্রাম(১৯৯৪)’ গ্রামীণ মেয়েদের জন্য মাধ্যমিক শিক্ষা বিনামূল্যে করে দেয়—ফলে ভর্তি বৃদ্ধি পায়, বাল্যবিবাহ কমে যায়, জন্মহার হ্রাস পায় এবং লাখ লাখ মেয়েদের জন্য নতুন অর্থনৈতিক অংশগ্রহণের সুযোগ সৃষ্টি হয়। তিনি প্রাথমিক শিক্ষাকে শক্তিশালী করেন ‘ফুড-ফর-এডুকেশন প্রোগ্রাম’ এবং পরবর্তীতে ‘প্রাইমারি এডুকেশন স্টাইপেন্ড প্রোগ্রাম’ চালুর মাধ্যমে।
খালেদা জিয়ার সরকার ধর্ষণ, অ্যাসিড সন্ত্রাস ও যৌতুকের বিরুদ্ধে কঠোর আইন প্রণয়ন করে-যেখানে শাস্তি দীর্ঘমেয়াদি কারাদণ্ড থেকে শুরু করে গুরুতর ক্ষেত্রে মৃত্যুদণ্ড পর্যন্ত নির্ধারিত ছিল। নারী ও শিশুদের বিরুদ্ধে সহিংসতার দ্রুত বিচার নিশ্চিত করতে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়।
তিনি প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা করেন এবং প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের জন্য নারী কোটা চালু করেন, ফলে মেয়েদের ভর্তি নাটকীয়ভাবে বৃদ্ধি পায়। তিনি ‘ন্যাশনাল ফোরাম ফর উইমেন’ এর মাধ্যমে নারীর অধিকারকে শক্তিশালী করেন।
আমার দেশের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

