চিকিৎসা সরঞ্জামের ৮৫ ভাগই আমদানি নির্ভর, নীতি সহায়তায় জোর

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ : ১০ আগস্ট ২০২৫, ২১: ১৭

দেশে প্রতিবছর বাড়ছে চিকিৎসা সরঞ্জামের চাহিদা। এসব সরঞ্জামের ৮৫ ভাগের বেশি আমদানি করতে হচ্ছে। সরকারের নীতি সহায়তা ও বিনিয়োগ বাড়লে দেশেই কয়েকগুণ বেশি উৎপাদন করা সম্ভব বলে জানিয়েছেন এ খাতের নীতি নির্ধারকেরা।

বিজ্ঞাপন

রোববার (১০ আগস্ট) রাজধানীর পরীবাগে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন ফর মেডিকেল ডিভাইসেস অ্যান্ড সার্জিক্যাল ইনস্ট্রুমেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স (বিএএমডিএসআইএমই) ও বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টার্স ফোরামের এক মতবিনিময় সভায় এ তথ্য জানানো হয়েছে। বাংলাদেশে চিকিৎসা সরঞ্জাম খাতের বর্তমান অবস্থা, চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা শীর্ষক ওই সভাটি সংগঠনটির নিজস্ব কার্যালয়ের অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় বিএএমডিএসআইএমই জানিয়েছে, গত এক দশকে চিকিৎসা সরঞ্জাম ও যন্ত্রপাতি শিল্প বিশ্বব্যাপী প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। জনসংখ্যা ও মানুষের গড় আয়ু বৃদ্ধির ফলে বয়ষ্ক জনগোষ্ঠীর সংখ্যা বৃদ্ধি, দীর্ঘমেয়াদি ও জটিল রোগের হার বৃদ্ধি এবং প্রযুক্তিনির্ভর স্বাস্থ্যসেবা সম্প্রসারণের ফলে বিশ্বজুড়ে চিকিৎসা সরঞ্জামের চাহিদা প্রতিবছরই বৃদ্ধি পাচ্ছে। চলতি বছর এ খাতে বাজারের আকার ৫০১ থেকে ৭শ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ২০৩০ সালের মধ্যে যা ৮০০ বিলিয়ন থেকে এক ট্রিলিয়ন ডলার অতিক্রম করবে।

বিএএমডিএসআইএমই’র সভাপতি মো. আবদুর রাজ্জাক বলেন, ‘বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশের চিকিৎসা সরঞ্জামও বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধির পথে রয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশের বাজারের আকার প্রায় ২৫ হাজার কোটি টাকা, ২০৩০ সালে যা ৪১ হাজার কোটি টাকার বেশি হতে পারে। প্রতিবছরই ১৫ শতাংশ চাহিদা বাড়ছে। দেশের প্রায় ১৪ বিলিয়ন ডলারের স্বাস্থ্যখাতের অন্যতম প্রধান অংশ এই শিল্প। শুধু স্থানীয় চাহিদা পূরণই নয়, সঠিক পরিকল্পনা ও বিনিয়োগের মাধ্যমে আমরা বৈদেশিক বাজারের গুরুত্বপূর্ণ অবস্থান করে নিতে পারব। এজন্য দরকার সরকারের নীতি সহায়তা।’

তিনি বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশের তৈরি সিরিঞ্জ, স্যালাইন সেট, রক্ত পরিবহন টিউব, ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রী (পিপিই)-সহ অন্তত ২০টি পণ্য উৎপাদনে আমরা স্বয়ংসম্পূর্ণ। এসব পণ্য দেশের পাশাপাশি ইউরোপ, লাতিন আমেরিকা, মধ্যপ্রাচ্য ও এশিয়ার ৪০টির বেশি দেশে আমরা রপ্তানি করছে। আমাদের সবচেয়ে বড় অভাব উৎপাদন উপযোগী কাঁচামাল এবং যন্ত্রাংশ আমদানিতে উচ্চ শুল্ক, গবেষণা এবং উদ্ভাবনে সীমিত বিনিয়োগ, খণ্ডিত বাজার কাঠামো, সঠিক পরিসংখ্যান, তথ্যের অভাব ও শুল্ক জালিয়াতি।’

আবদুর রাজ্জাক বলেন, ‘চিকিৎসায় ডায়াগনস্টিক যন্ত্র, ইমেজিং মেশিন, অস্ত্রোপচার সরঞ্জাম, হাসপাতালে ব্যবহৃত বিভিন্ন সরঞ্জাম আধুনিক চিকিৎসার জন্য অপরিহার্য। বর্তমানে এসব উপকরণের ৮৫ থেকে ৯০ ভাগই আমদানি করতে হচ্ছে। দেশে উৎপাদন হচ্ছে ৫ থেকে ৭ শতাংশ। এতে প্রচুর বৈদিক মুদ্রা খরচ হচ্ছে। আন্তর্জাতিক সরবরাহ ব্যবস্থায় অস্থিরতা দেখা দিলে দেশের স্বাস্থ্যসেবা চরম হুমকিতে পরবে। এসব উপকরণ দেশে উৎপাদন করা সম্ভব। এজন্য দরকার সরকারের নীতি সহায়তা ও বিনিয়োগ।’

সভায় অন্যান্যদের মধ্যে গেটওয়ের নির্বাহী পরিচালক (বাণিজ্য) সাঈদ হোসেন চৌধুরী, এএনসির ডা. মোহাম্মদ সেলিম, গেটওয়েলের আবু সুফিয়ান বক্তব্য রাখেন।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত