সংবাদ সম্মেলনে চীনা রাষ্ট্রদূত

তিস্তা প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রস্তুত বেইজিং

কূটনৈতিক রিপোর্টার
প্রকাশ : ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৩: ৩৬

তিস্তা প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রস্তুত বেইজিং। আমরা এখন বাংলাদেশ সরকারের জবাবের অপেক্ষায় রয়েছি। চীন মনে করে, যত দ্রুত সম্ভব তিস্তা পাড়ের মানুষের কষ্টের কথা বিবেচনা করে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করা উচিত।

ঢাকায় চীনা দূতাবাসে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে মঙ্গলবার এই মন্তব্য করেন বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন। সংবাদ সম্মেলনে চীনা রাষ্ট্রদূত তিস্তা প্রকল্প ছাড়াও দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়ানো, বাংলাদেশিদের জন্য চিকিৎসাসেবা, সামরিক সহযোগিতা, বাংলাদেশে চলমান সংস্কার প্রক্রিয়া এবং আগামী নির্বাচনসহ রাজনৈতিক ও কৌশলগত বিভিন্ন ইস্যুতে কথা বলেন।

বিজ্ঞাপন

তিস্তা প্রকল্প বাস্তবায়ন ও এ ইস্যুতে বাংলাদেশের প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপির আন্দোলন কর্মসূচি সম্পর্কে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে চীনা রাষ্ট্রদূত বলেন, তিস্তা পাড়ের মানুষের দুঃখ ও বেদনার কথা আমরা সবাই জানি। তিস্তা ইস্যুতে বিএনপির রাজনৈতিক কর্মসূচি বাংলাদেশের একটি অভ্যন্তরীণ বিষয়। আমরা মনে করি তিস্তা প্রকল্প বাস্তবায়নের ব্যাপারে বাংলাদেশ সরকারের দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত। এই প্রকল্পে সহায়তা দেওয়ার জন্য আমরা প্রস্তুত রয়েছি। বাংলাদেশ সরকার চাইলে নিজেরাও এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে পারে।

তিস্তা প্রকল্প নিয়ে বাংলাদেশ সরকারের অনুরোধের প্রসঙ্গ তুলে চীনা দূত বলেন, ২০২১ সালে এই প্রকল্পের জন্য বাংলাদেশ সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে আমাদের প্রস্তাব দেয়। সেই প্রস্তাবের ভিত্তিতে আমরা প্রয়োজনীয় সমীক্ষা সম্পন্ন করে ২০২৩ সালে বাংলাদেশ সরকারকে প্রতিবেদন দিয়েছি। কিন্তু এখন পর্যন্ত আমরা এ ব্যাপারে আনুষ্ঠানিক কোনো জবাব পাইনি।

চীনে বাংলাদেশি রোগীদের চিকিৎসার ব্যাপারে এক প্রশ্নের জবাবে ইয়াও ওয়েন বলেন, কুনমিংয়ে সবচেয়ে ভালো তিনটি হাসপাতাল বাংলাদেশের রোগীদের চিকিৎসার জন্য নির্বাচন করা হয়েছে। চলতি মাসের শেষ দিকে কিছু রোগীসহ বাংলাদেশের একটি প্রতিনিধিদল কুনমিং সফরে যাবেন। তারা সেখানে সরেজমিনে সবকিছু যাচাই-বাছাই করবেন।

ওয়েন বলেন, চীনে চিকিৎসা নিতে আগ্রহী রোগীদের জন্য একটি মেডিকেল প্যাকেজ তৈরি করা হবে। এই প্যাকেজের মধ্যে ভিসা, বিমান ভাড়াসহ চিকিৎসা সংক্রান্ত যাবতীয় বিষয় অন্তর্ভুক্ত থাকবে। এই প্যাকেজ যেন বাংলাদেশি রোগীদের জন্য সাশ্রয়ী হয় সে ব্যাপারে আমরা সচেতন আছি। চীনের অর্থায়নে বাংলাদেশেও আধুনিক মানের একটি হাসপাতাল তৈরি করা হবে বলে জানান চীনা রাষ্ট্রদূত।

বাংলাদেশের চলমান সংস্কার প্রক্রিয়া ও আগামী নির্বাচন সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে রাষ্ট্রদূত বলেন, এটা বাংলাদেশের একটি অভ্যন্তরীণ বিষয়। অন্তর্বর্তী সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলো আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সবকিছু সমাধান করবে বলে আমরা প্রত্যাশা করি। আমরা চাই বাংলাদেশের উন্নয়ন-অগ্রগতির জন্য দলমত নির্বিশেষে সবাই একমত থাকবে।

দুই দেশের সামরিক সহযোগিতার বিষয়ে অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দুই দেশের মধ্যে সামরিক সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। চীন বহু বছর ধরে বাংলাদেশকে সামরিক সরঞ্জাম সরবরাহ করে আসছে। বর্তমানে আরো অনেক দেশ বাংলাদেশকে সামরিক সরঞ্জাম সরবরাহে আগ্রহী। এই প্রতিযোগিতা আমাদের সবাইকে সারা বিশ্বেই মোকাবিলা করতে হয়। তবে আমরা মনে করি বাংলাদেশের সার্বিক বিষয় বিবেচনায় সামরিক সরঞ্জাম সরবরাহের ক্ষেত্রে চীনই সবচেয়ে উপযুক্ত। সংবাদ সম্মেলনে রাষ্ট্রদূতের রাজনীতিবিষয়ক সহকারী লিন ইউয়াংসহ দূতাবাসের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত