অত্যাবশ্যকীয় ওষুধের প্রাপ্যতা নিশ্চিতে ১৮ সদস্যের টাস্কফোর্স

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ : ২৮ জুলাই ২০২৫, ১৯: ৩৬

অত্যাবশ্যকীয় ওষুধের জাতীয় তালিকা প্রণয়ন এবং প্রাপ্যতা নিশ্চিত করার লক্ষে বাংলাদেশ মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর অধ্যাপক শাহীনুল আলমকে সভাপতি করে ১৮ সদস্যের একটি টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে। টাস্কফোর্সকে আগামী ২০ আগস্টের মধ্যে এ বিষয়ে সুপারিশ প্রদান করতে বলা হয়েছে। টাস্কফোর্সের সদস্য সচিব করা হয়েছে যুগ্ম-সচিব (ওষুধ প্রশাসন,অনুবিভাগ) স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ।

বিজ্ঞাপন

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ওষুধ প্রশাসন গতকাল রোববার এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে। এছাড়া ওষুধ প্রশাসন ‘ওষুধ ও কসমেটিক্স আইন ২০২৩’-এর ১২ ধারা মোতাবেক ওষুধ নিয়ন্ত্রণ কমিটির টেকনিক্যাল সাব কমিটিও পুনর্গঠন করে প্রজ্ঞাপন জারি করে। এ কমিটির সভাপতি করা হয়েছে ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে।

গত ৩০ বছর ধরে ব্যবসায়ী নেতা সালমান এফ রহমান এ কমিটিকে কুক্ষিগত করে রেখেছিলেন। শিল্পখাতের নিজস্ব তিন থেকে পাঁচজন লোককে কমিটির সদস্য করার মাধ্যমে তিনি ওষুধ সংক্রান্ত সিদ্ধান্তগুলো নিজের স্বার্থে নিয়ন্ত্রণ করতেন।

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়) অধ্যাপক সাইদুর রহমান বিশেষজ্ঞ ও শিক্ষাবিদদের নিয়ে এই কমিটিগুলো পুনর্গঠন করার সাহসী পদক্ষেপ নেন। ওষুধ শিল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা এ পদক্ষেপ নেয়ায় সরকারকে অভিনন্দন জানিয়েছেন।

টাস্কফোর্সের কার্যপরিধি সম্পর্কে বলা হয়

অত্যাবশ্যকীয় ওষুধ সংক্রান্ত টাস্কফোর্সের কার্যপরিধির সম্পর্কে বলা হয়-

(ক) দেশের রোগের ধরন, প্রকৃতি ও প্রবণতার উপর নির্ভর করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এতদসংক্রান্ত সুপারিশের আলোকে কার্যকারিতা, নিরাপত্তা ও প্রয়োজনীয়তা বিবেচনা করে জাতীয় অত্যাবশ্যকীয় ঔষধের তালিকা প্রণয়ন করা;

(খ) অত্যাবশ্যকীয় ঔষধের প্রাপ্যতা ও সহজলভ্যতা নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে এধরনের ঔষধের মূল্য যৌক্তিকভাবে নিরুপণ ও নির্ধারণের জন্য Regulated Mark-Up Pricing অথবা Cost-Plus Pricing এর মতো স্বীকৃত নীতিমালার আলোকে অত্যাবশ্যকীয় ঔষধসমুহের বিভিন্ন ফরমুলেশনের জন্য সহজে প্রয়োগযোগ্য বিশদ কর্মপদ্ধতি বা ফর্মুলা প্রণয়ন করা;

(গ) অন্যান্য ঔষধের মূল্য নিরুপণ ও নির্ধারণের জন্য Reference Pricing (External and Internal) অথবা অন্য কোন স্বীকৃত ও প্রচলিত পদ্ধতিতে বাংলাদেশের জনগণের সামর্থ্য বিবেচনা করে এবং ঔষধ শিল্পের জন্যে যৌক্তিক ও ন্যায়সঙ্গত মুনাফার সুযোগ রেখে এক বা একাধিক বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতি নির্বাচন ও সেগুলোর কার্যকরভাবে প্রয়োগের লক্ষ্যে বিশদ কর্মপদ্ধতি বা ফর্মুলা প্রনয়ণ করা; এবং

(ঘ) টাস্কফোর্স প্রয়োজনে উপযুক্ত বিশেষজ্ঞ প্রতিনিধি কো-অপ্ট করতে পারবে।

প্রায় ৩০ বছর পর, ওষুধ খাত সংশ্লিষ্ট নিয়ন্ত্রক কমিটিগুলো পুনর্গঠন করা হয়েছে, সালমানের মোতাবেক লোকদের (বা ‘ঘুঁটি’) বাদ দিয়ে।

আগে এই কমিটিগুলোতে শিল্পখাত (ইন্ডাস্ট্রি) থেকে ৩ থেকে ৫ জন সদস্য থাকতেন, এবং তারাই সিদ্ধান্তগুলো নিয়ন্ত্রণ করতেন।

এগুলো ছিল স্বার্থের সংঘাতের (CONFLICT OF INTEREST) সবচেয়ে খারাপ উদাহরণ।

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিশেষ সহকারী অধ্যাপক সাইদুর রহমান সাহসী পদক্ষেপ নিয়ে বিশেষজ্ঞ ও শিক্ষাবিদদের নিয়ে এই কমিটিগুলো পুনর্গঠন করেছেন।

অন্যদিকে, বিআইপিআই (BAPI) শিল্পখাতের প্রতিনিধিদের অন্তর্ভুক্ত করার জন্য সর্বশক্তি প্রয়োগ করছে।

অনুগ্রহ করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এই উদ্যোগকে সমর্থন করুন, কারণ জনগণের স্বার্থ রক্ষায় আপনার মতো মানুষ খুবই কম আছেন।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত