সাংগঠনিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ থাকা আওয়ামী লীগের মিছিলে অর্থ যোগানের অভিযোগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি রেজিস্ট্রার মুহাম্মদ লাভলু মোল্লাহ শিশিরের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
সোমবার (৮ ডিসেম্বর) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আরিফুর রহমানের আদালত এ আদেশ দেন। এর আগে গত ১৮ নভেম্বর এ মামলায় তাকে গ্রেপ্তারের পর কারাগারে পাঠানো হয়।
এ ছাড়া কারাগারে যাওয়ার এক রাত আগে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায়ের পর লাভলু তার ফেসবুক প্রোফাইলে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রীর ছবিযুক্ত একটি ফটোকার্ড পোস্ট করেন। সেখানে লেখা ছিল— “জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু, আই ডোন্ট কেয়ার”।
এরপর মধ্যরাতে কিছু শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল টিম তার বাসায় যান। লাভলু মোল্লাহর ওই পোস্ট নিয়ে সেখানে ‘উত্তেজনা’ সৃষ্টি হলে ওই রাতেই তাকে হেফাজতে নেওয়া হয়।
গ্রেপ্তারের পর লাভলুকে আদালতে হাজির করে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করা হয়। অপরদিকে তার আইনজীবী জি. এম. কাওসার-উল ইসলাম সোহেল জামিনের আবেদন করেন। ওই দিন আদালত তার জামিন নামঞ্জুর করেন এবং তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। পরে গত ২ ডিসেম্বর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শাহবাগ থানার এসআই আল-আমিন সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করেন।
আবেদনে বলা হয়, “এ আসামি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি আখতারুজ্জামানের পিএস হিসেবে কর্মরত ছিল। শাহবাগ থানা এলাকায় নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের ঝটিকা মিছিল এবং ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানোর জন্য অর্থ দিয়ে সহায়তা করে আসছিল বলে তথ্য-প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে।
“তাই মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে এ ঘটনায় জড়িত অপরাধিসহ পলাতক আসামিদের শনাক্ত, গ্রেপ্তার এবং ঘটনার মূল রহস্য উদঘাটনের লক্ষ্যে বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা ও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তার সাত দিনের রিমান্ড প্রয়োজন।”
প্রসিকিউশনের এসআই জিন্নাত আলী বলেন, আদালত আসামির উপস্থিতিতে রিমান্ড শুনানির জন্য এ দিন ধার্য করেন। এদিন শুনানিকালে তাকে আদালতে হাজির করা হয়।
রাষ্ট্রপক্ষ থেকে আসামির রিমান্ড মঞ্জুরের আবেদন করা হলেও তার পক্ষে কোনো আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন না। শুনানি শেষে বিচারক লাভলুর তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, গত ৩১ মে ভোর সাড়ে ৬টার দিকে শাহবাগের পরীবাগ এলাকায় কার্যক্রমে নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও ছাত্রলীগ মিছিল করে। তারা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিরুদ্ধে অপপ্রচারের উদ্দেশে স্লোগান দেয়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে তারা পালিয়ে যায়।
এ ঘটনায় চলতি বছরের ১ জুন শাহবাগ থানায় মামলা করেন এসআই কামাল উদ্দিন মিয়া।

