বিবিএস-ইউএনএফপিএর জরিপ

দেশের ৭০ ভাগ নারী একবার হলেও সহিংসতার শিকার হন

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ : ২৪ জুন ২০২৫, ১৭: ০৬
আপডেট : ২৪ জুন ২০২৫, ১৭: ১১

দেশের ৭০ ভাগ নারী তাঁদের জীবদ্দশায় অন্তত একবার হলেও শারীরিক, যৌন, মানসিক ও অর্থনৈতিক সহিংসতার শিকার হন। গত বছর (২০২৪) ৪৯ শতাংশ নারীর ওপর এ ধরনের সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। পরিবারের অন্য সদস্যদের তুলনায় স্বামীর মাধ্যমে বেশি নির্যাতনের শিকার হন নারীরা। ‘নারীর প্রতি সহিংসতা জরিপ ২০২৪’ এ চিত্র উঠে এসেছে।

বিজ্ঞাপন

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) ও জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিল (ইউএনএফপিএ) যৌথভাবে এ জরিপ করে। এই জরিপটিতে শহর, গ্রাম,দুর্যোগপ্রবণ বস্তি এলাকাসহ ২৭ হাজার ৪৭৬ নারীর সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়। এর আগে ২০১১ ও ২০১৫ সালে এ ধরনের জরিপ হয়।

বুধবার রাজধানীর গুলশানে ইউএনএফপির ঢাকা কার্যালয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রকাশিত জরিপে প্রতিবেদন তুলে ধরে সাংবাদিকদের সাথে এক মতবিনিময় সভার আয়োজন করে ইউএনএফপিএ কর্তৃপক্ষ। এতে এই জরিপটি কিভাবে করা হয়েছে, কি ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছে। এসব নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়।

এছাড়াও এই জরিপের প্রতিবেদনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে ভবিষ্যতে সাংবাদিকরা কি ধরনের প্রতিবেদন তৈরি করতে পারে। সেই বিষয়গুলোর নিয়ে আলোচনা করা হয়। এতে অংশ নেয় ইউএনএফপিএর ভারপ্রাপ্ত প্রতিনিধি মাসাকি ওয়াতাবে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, নারীর জীবদ্দশায় স্বামী বা জীবনসঙ্গীর মাধ্যমে সহিংসতার বিস্তৃতি এখনো ৭০ শতাংশ। অর্থাৎ এটি উচ্চমাত্রায় রয়েছে। তবে বিগত ১২ মাসে এই হার ৪১ শতাংশ। এই হার ২০১৫ সালে জীবদ্দশায় ছিল ৭৩ শতাংশ। নন-পার্টনার সহিংসতার চেয়ে জীবনসঙ্গী বা স্বামীর মাধ্যমে সহিংসতা (আইপিভি) বিস্তারের মাত্রা বেশি। জরিপটিতে,‘জীবনসঙ্গী’ বলতে বর্তমান বা সাবেক স্বামী এবং ‘নন-পার্টনার’ বলতে বর্তমান বা সাবেক স্বামী ব্যতীত উত্তরদাতার ১৫ বছর বয়সের পর হতে জীবনের যেকোনো সময়ে সংস্পর্শে আসা যেকোনো ব্যক্তিকে বোঝানো হয়েছে।

জরিপে দেখা যায় যে নারীদের অন্য কারও তুলনায় স্বামীদের কাছ থেকে শারীরিক সহিংসতার শিকার হওয়ার আশঙ্কা তিনগুণ বেশি এবং যৌন সহিংসতার শিকার হওয়ার সম্ভাবনা ১৪ গুণ বেশি। এতে প্রতীয়মান যে বৈবাহিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে শারীরিক ও যৌন সহিংসতার ঝুঁকি অত্যধিক বেশি।

গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, দুর্যোগপ্রবণ এলাকার নারীরা তাদের জীবদ্দশায় এবং বিগত ১২ মাসে, অদুর্যোগপ্রবণ এলাকার নারীদের তুলনায় জীবনসঙ্গী বা স্বামীর মাধ্যমে বেশি মাত্রায় সহিংসতার সম্মুখীন হন।

জীবনসঙ্গী বা স্বামীর মাধ্যমে সহিংসতার মাত্রা বেশি হলেও সহিংসতার শিকার নারীদের প্রায় ৬৪ শতাংশ তাঁদের সঙ্গে ঘটে যাওয়া সহিংসতার কথা কাউকে কখনো বলেননি বলে উল্লেখ করা হয়েছে। পরিবারের সুনাম রক্ষা করার আকাঙ্ক্ষা,সন্তানদের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে উদ্বেগ এবং এ ধরনের সহিংসতাকে ‘স্বাভাবিক’ বলে মনে করার প্রবণতাসহ বিভিন্ন কারণ থেকে মূলত এই নীরবতা।

বিষয়:

বিবিএস
এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত