দেশের দুই বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষককে হত্যার হুমকি

আবু সুফিয়ান
প্রকাশ : ১২ আগস্ট ২০২৫, ১৪: ১১
আপডেট : ১২ আগস্ট ২০২৫, ১৪: ২২

ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের (আইইউবি) সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সরোয়ার হোসেন ও মানারাত বিশ্ববিদ্যালয়ের লেকচারার আসিফ মাহতাব উৎস হত্যার হুমকি দেয়া হয়েছে। মঙ্গলবার ‘অ্যান্টার্কটিকা চৌধুরী’ নামে পরিচয় দেয়া একটি ফেসবুক আইডি থেকে তাদের হুমকি দেয়া হয়।

বিজ্ঞাপন

ফেসবুক পোস্টে ড. মোহাম্মাদ সরোয়ার হোসেনের কার্টুন এঁকে লেখা হয়েছে ‘কিল পাবলিক ফিগারস হু আর গেস্ট ইউর লিগ্যাল রাইটস’। এই মুখায়বের পাশে একটা চাপাতির ছবিও আঁকা হয়েছে।

আসিফ মাহতাব উৎস'র মুখায়বের একটা স্কেচ অঙ্কন করে লেখা হয়েছে ‘প্লে ফুটবল উইথ দ্য সার্ভড হেড অব পাবলিক ফিগারস। হু আর এগেইস্ট ইউর লিগ্যাল রাইটস’। এই ছবিতে দুই জন লাথি মারতে উদ্যত এমন ছবিও আঁকা হয়েছে।

জানা গেছে, ড. মোহাম্মদ সরোয়ার হোসেন দীর্ঘদিন ধরে দেশের অবহেলিত জনস্বাস্থ্য, বিশেষ করে থ্যালাসেমিয়া, ডেঙ্গু এবং শিশুদের স্থূলতা গবেষণার মাধ্যমে সচেতনতার কাজ করছেন। তিনি আইইউবির স্কুল অব এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড লাইফ সায়েন্সের সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত এবং অস্ট্রেলিয়ার ওলংগং বিশ্ববিদ্যালয়ে ৩ বছর অনারারি সহকারী অধ্যাপক ছিলেন। এর আগে তিনি ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা এবং ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যালের বায়োটেক ডিভিশনে সিনিয়র ম্যানেজার হিসেবে কাজ করেছেন।

অন্যদিকে আসিফ মাহতাব একজন পাবলিক স্পিকার ও শিক্ষক, যিনি ফেসবুকসহ বিভিন্ন মাধ্যমে সমসাময়িক নানা ইস্যুতে মতামত দিয়ে থাকেন। ফিলিস্তিন-ইসরাইল যুদ্ধ প্রসঙ্গে তিনি প্রকাশ্যে ফিলিস্তিনের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। কর্মজীবনে তিনি ২০১৮ সালে ব্রিটিশ আমেরিকান রিসোর্স সেন্টারে যোগ দেন, পরে মাস্টারমাইন্ড স্কুলে সিনিয়র শিক্ষক, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালকে দর্শনের সহকারী প্রভাষক এবং পরবর্তীতে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালকে চুক্তিভিত্তিক শিক্ষক হিসেবে কাজ করেন। বর্তমানে মানারাত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতা করছেন।

২০২৩ সালে শিক্ষাক্রমে অন্তর্ভুক্ত সপ্তম শ্রেণির পাঠ্যবই থেকে ট্রান্সজেন্ডার বিষয়ক গল্প নিয়ে সমালোচনা করে তিনি আলোচনায় আসেন। ‘বর্তমান কারিকুলামে নতুন পাঠ্যপুস্তক: বাস্তবতা ও ভবিষ্যৎ’ শীর্ষক এক সেমিনারে তিনি ওই গল্পের পাতা ছিঁড়ে ফেলার ভিডিও নিজের ফেসবুকে আপলোড করেন, যা নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক সৃষ্টি হয়। এ প্রেক্ষিতে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় তাকে পাঠদান থেকে বিরত রাখে, যা নিয়ে একাংশ শিক্ষার্থী প্রতিবাদ জানান।

হুমকি প্রসঙ্গে ড. সরোয়ার হোসেন বলেন, ‘এটি শুধু ব্যক্তিগতভাবে আমাদের জন্য নয়, বরং মতপ্রকাশের স্বাধীনতার জন্যও হুমকি। হুমকি প্রদানকারীদের চিহ্নিত করে দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।’

এ বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, বিষয়টি সাইবার ইউনিটের মাধ্যমে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। হুমকিদাতার পরিচয় শনাক্তে কাজ চলছে।

আমার দেশের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিষয়:

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত