পানি প্রত্যাহারের কারণে সৃষ্ট পরিবেশগত বিপর্যয় জনসমক্ষে আনুন

বিশেষ প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৮ জুন ২০২৫, ২০: ৩১

ঢাকায় অনুষ্ঠিত এক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে ৫৪টি যৌথ নদীর উজানে পানি প্রত্যাহারের কারণে সৃষ্ট পরিবেশ ও প্রতিবেশগত বিপর্যয় নির্ণয় ও তা জনসমক্ষে আনার জন্য বাংলাদেশ সরকারকে তাগিদ দিয়েছেন পানি বিশেষজ্ঞ ও কর্মীরা।

শনিবার সিরডাপ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এই সম্মেলনে পানি বিশেষজ্ঞরা বলেন সুপ্রতিবেশী সূলভ সম্পর্কের খাতিরে বহুদিনের নিরবতা পরিহার করে আওয়াজ তুলতে হবে, কারণ এই মানবসৃষ্ট বিপর্যয়ের জন্যে বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সম্পদ বিলীন হয়ে অর্থনীতি, কৃষি, মৎস্য সম্পদ, নৌপরিবহন, শিল্প, বন, বন্যপ্রানী, জীববৈচিত্র্য ধ্বংস হাওয়ায় মানুষ পেশা ত্যাগ করে দেশান্তরী হচ্ছে।

বিজ্ঞাপন

পানি নিয়ে সংঘাতঃ বাংলাদেশের পরিবেশগত বিপর্যয়ের প্রতিকার বিষয়ে টাসিং সোলস ইউএস-এর অর্থায়নে আন্তর্জাতিক ফারাক্কা কমিটি, নিউইয়র্ক আয়োজিত উক্ত সম্মেলনের উদ্বোধনী প্রধান অতিথি ছিলেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের বিশেষ সহকারী ডঃ আনিসুজ্জামান চৌধুরী। সভাপতিত্ব করেন আইএফসি নিউইয়র্ক চেয়ারম্যান সৈয়দ টিপু সুলতান। পরিচালনা করেন আইএফসি বাংলাদেশ সভাপতি মোস্তফা কামাল মজুমদার।

দিনব্যাপী আয়োজিত এই সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল, কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্রের পানি বিশেষজ্ঞ ও কর্মীরা।

বক্তারা বলেন উজানে অসহনশীল পানি প্রত্যাহারের ফলে ত্তিস্তা অববাহিকা সহ বাংলাদেশের কিছু এলাকায় প্রতি বছর কয়েক দফা মারাত্মক বন্যা হয়, মেঘনা ও গংগা অববাহিকায় ঘুরে ফিরে প্লাবন বিপর্যয় আসে, আর অন্যত্র প্লাবনভূমি গুলো হয় শুকনা থেকে যায় নাহয় স্বাভাবিকের চেয়ে কম প্লাবিত হয়। গত আগষ্টে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে অবস্থিত ডম্বুর জলাধারের পানি বিনা নোটিশে হঠাৎ ছেড়ে দেয়ায় বাংলাদেশের পূর্বাঞ্চলে এক প্রলয়ঙ্কারী বন্যা আঘাত হানে যা বিগত ৪০ বছরেও দেখা যায়নি।

অন্যদিকে শুকনো মওসুমে বাংলাদেশের প্রায় সকল নদী প্রায় শুকিয়ে যায়। কারণ উজানে এদেশের জনগনের কোন মতামত নানিয়ে নির্মিত বাধ থেকে পানি অন্যত্র সরিয়ে নেয়া হয়, ভাটি অঞ্চলে তার বিরূপ প্রতিক্রিয়ার কোন তোয়াক্কা না করে।

উক্ত সম্মেলনে বিশেষজ্ঞরা যৌথ নদীর ব্যবস্থাপনার জন্য বহুপাক্ষিক সংস্থা গঠনের প্রস্তাব করেন যেন প্রাকৃতিক নদী গুলোকে রাজনৈতিক সীমারেখায় ভাগ করে ফেলা না হয়, ভাটি অঞ্চলের মানুষের উপর এমনকি নদীগুলোর উপর তার বিরূপ প্রতিক্রিয়া কথা না ভেবেই।

উক্ত সম্মেলনে পাচটি প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন, কানাডায় বসবাসরত যৌথ নদী ব্যবস্থাপনা বিশেষজ্ঞ ডঃ মনিরুল কাদের মির্জা, নেপাল জলস্রোত বিকাশ সংস্থার সহসভাপতি রামজি ভান্ডারি, অনলাইনে ভারতের অরুনাচল থেকে আইনজীবি এবো মিলি, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সাইয়াদুর রহমান, যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত ডঃ মোহাম্মদ ইমরান আনসারী ও মেহরাজ আক্তার মোমেন।

নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম, বিপিকেএস এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুস সাত্তার দুলাল, বাংলাদেশ ওয়াটার পার্টনারশীপের সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকুর রহমান ও সমন্বয়ক নাজমুন নাহার।

সম্মেলনের বিষয় ভিত্তিক অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ওয়াটার পার্টনারশীপের সাবেক সভাপতি শহিদুল হাসান। সমাপ্তি অধিবেশনের সভাপতি ছিলেন অধ্যাপক জসীম উদ্দিন আহমাদ।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত