রকীবুল হক
শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্তি থেকে সম্প্রতি বাদ হওয়া রাজধানীর সাত সরকারি কলেজ নিয়ে নতুন বিশ্ববিদ্যালয় করার উদ্যোগ নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। তবে এ উদ্যোগের সঙ্গে থাকতে নারাজ তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা। তাদের দাবি তিতুমীর কলেজকে স্বতন্ত্রভাবে বিশ্ববিদ্যালয় ঘোষণা দিতে হবে।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, এখন আর তারা সাত কলেজের সঙ্গে যুক্ত নন। তাই সাত কলেজ নিয়ে কোনো বিশ্ববিদ্যালয় বানালেও তাতে তিতুমীর কলেজ থাকবে না। আগে ছয় দফা নিয়ে আন্দোলন করলেও এখন এক দফা দাবিতে আমরণ অনশন শুরু হয়েছে। আর অনশনকারীদের প্রতি সমর্থন জানিয়ে দাবি পূরণে সরকারকে বাধ্য করতেই অবরোধ চলছে। আরো বড় কর্মসূচি দেওয়া হতে পারে। এতে জনভোগান্তি বাড়ার শঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় করার পক্ষে-বিপক্ষে প্রকাশ্য কোনো অবস্থানে নেই কলেজ কর্তৃপক্ষ। তবে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের তারা নানাভাবে সহযোগিতা করছেন বলে জানিয়েছেন কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক শিপ্রা রাণী মন্ডল।
এদিকে তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় ঘোষণার দাবিকে অযৌক্তিক মনে করছেন শিক্ষাবিদদের অনেকে। এমনকি সাত কলেজ নিয়ে যে নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোগ বর্তমান সরকার নিয়েছে, তাতে আরো দীর্ঘমেয়াদি জটিলতা বাড়বে বলে তারা মনে করছেন।
তবে সরকার যে উদ্যোগ নিয়ে কাজ করছে, তাতে তিতুমীরের শিক্ষার্থীরা সন্তুষ্ট হবে বলে আশা করছেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক এস এম এ ফায়েজ।
অবশ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবিতে এসব আন্দোলনের মধ্যে কোনো রাজনীতি ঢুকতে পারে বলেও মনে করছেন কেউ কেউ। এমনকি পরিস্থিতি ঘোলাটে করতে পতিত শক্তি এ ইস্যুতে উসকে দিচ্ছে বলেও অনেকের অভিমত।
সূত্রমতে, বিশ্ববিদ্যালয় করার দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা। কলেজগুলো হলো- ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, কবি নজরুল সরকারি কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ, সরকারি বাঙলা কলেজ ও সরকারি তিতুমীর কলেজ। এসব কলেজে শিক্ষার্থী প্রায় দুই লাখ। শিক্ষক আছেন এক হাজারের বেশি।
সর্বশেষ গত রোববার থেকে ঢাকা কলেজ শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধসহ নানা কর্মসূচি পালন করেন। শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে গত সোমবার সাত কলেজকে আবারও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আলাদা করার ঘোষণা দেয় কর্তৃপক্ষ। ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে এসব কলেজে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে না বলেও বিশ্ববিদ্যালয়টির পক্ষ থেকে জানানো হয়।
পরে বিষয়টি নিয়ে প্রধান উপদেষ্টাসহ সরকারের উচ্চপর্যায়ে কয়েক দফা বৈঠক হয়। সেখানে সরকারি এ সাতটি কলেজের জন্য পৃথক বিশ্ববিদ্যালয় করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়। এজন্য ইউজিসির মাধ্যমে একটি কমিটি কাজ করছে। এ বিষয়ে এরই মধ্যে ইউজিসি এ সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ধারাবাহিকভাবে বৈঠকও করেছে। সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার শিক্ষা উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে সম্ভাব্য নাম নিয়েও আলোচনা করে কমিটি। এ সময় ‘জুলাই ৩৬ বিশ্ববিদ্যালয়’ নাম প্রস্তাব করা হয়। এর পাশাপাশি এ সাত কলেজের জন্য অন্তর্বর্তী প্রশাসন গঠন নিয়েও আলোচনা চলছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
এদিকে সরকারের এ উদ্যোগের মধ্যে গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় ঘোষণাসহ সাত দফা দাবিতে আমরণ অনশনে বসেন ছয় শিক্ষার্থী। গত বৃহস্পতিবার শিক্ষার্থীরা রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। এতে ওই সড়কে যান চলাচল বন্ধ হওয়ার পাশাপাশি কলেজটির সব কার্যক্রমে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়। উদ্ভুত পরিস্থিতিতে গত বৃহস্পতিবার রাতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটি প্রতিনিধি দল গিয়ে শিক্ষার্থীদের দাবি যৌক্তিক বলে আখ্যা দিয়ে তাদের বিষয়টি নিয়ে সরকারের সঙ্গে আলোচনার আশ্বাস দেওয়া হয়।
তবে এ আশ্বাসে কোনো আস্থা না পেয়ে অনশন অব্যাহত রাখার পাশাপাশি গতকাল শুক্রবার নতুন করে রাস্তা অবরোধ শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। ‘তিতুমীর ঐক্য’ নামের একটি প্ল্যাটফর্ম করে এই আন্দোলন চালানো হচ্ছে।
এ বিষয়ে ‘তিতুমীর ঐক্য’-এর আহ্বায়ক নায়েক নুর মোহাম্মদ আমার দেশকে জানান, আগে সাত দফা দাবিতে আন্দোলন করলেও এখন তারা একদফা, তথা বিশ্ববিদ্যালয় ঘোষণার দাবিতে আন্দোলন চালাচ্ছেন। সরকারের আশ্বাসে কোনো আস্থা না পেয়েই তারা অবরোধে বাধ্য হয়েছেন। দাবি মানলেই কেবল কর্মসূচি প্রত্যাহার করা হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কলেজের শিক্ষকরা বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে সরাসরি না থাকলেও কর্মকর্তারা পক্ষে। এ ছাড়া ৩৫ হাজার শিক্ষার্থী এ দাবির সঙ্গে একমত।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিতুমীর কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক শিপ্রা রাণী মন্ডল আমার দেশকে বলেন, শিক্ষার্থীরা যাতে অনশনের নামে না খেয়ে অসুস্থ হয়ে না পড়ে, সেজন্য আমরা মোটিভেশনাল কাজ করছি। তাদের সার্বিক সহযোগিতা করা হচ্ছে। তবে বিশ্ববিদ্যালয় করা-না করার বিষয়টি আমাদের নয়। তারা আমাদের কাছে দাবিও করছে না। এটি রাষ্ট্রের বিষয়। তবে আমরা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আছি। তার উদ্যোগেই শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরা সেখানে এসেছিলেন বলেও দাবি করেন তিনি।
তিতুমীর কলেজ নিয়ে এ জটিলতা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে-ইউজিসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক এস এম এ ফায়েজ আমার দেশকে বলেন, আমাদের টার্ম অব কন্ডিশনে আছে সাত কলেজ। আমরা সেই বিষয়টি নিয়েই এগোচ্ছি। সাত কলেজ নিয়ে একটি বিশ্ববিদ্যালয় করার চিন্তাভাবনা করছে সরকার। এটি হলে আশা করি তিতুমীরের শিক্ষার্থীরাও সন্তুষ্ট হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, ইউনিভার্সিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ইউট্যাব) প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ড. এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম আমার দেশকে বলেন, সাত কলেজ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় করা, এটা একেবারে একটা ভুল সিদ্ধান্ত। কারণ হঠাৎ করেই এই সাত কলেজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে আনা হয়েছিল। শিক্ষার্থীরা হাবুডুবু খাচ্ছিল। আবার হঠাৎ করে এটাকে বাদ দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় করা দুরদর্শীসম্পন্ন কোনো কাজ নয়। কারণ এটা করতে গিয়ে আরো নতুন সমস্যা হবে। নতুন বিশ্ববিদ্যালয় করলে আগামীতে অন্যান্য পুরোনো কলেজগুলোও বিশ্ববিদ্যালয় করতে চাইবে। এতে অস্থিরতা আরও বাড়বে। এর একমাত্র সমাধান-তাদের বুঝিয়ে আগের জায়গায় তথা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ফিরিয়ে নেয়া।
একই ধরণের মন্তব্য করে শিক্ষাবিদ ও নওগাঁ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক মোহাম্মদ হাছানাত আলী বলেন, একটি পার্টিকুলার কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় করার দাবি ও উদ্যোগ যুক্তিযুক্ত নয়। এতে সারাদেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্য কলেজগুলোকে বিশ্ববিদ্যালয় করার দাবিতে আন্দোলনে রূপ নিতে পারে। নতুন করে সংকট তৈরি করবে। সাত কলেজকে ঢাবির অধীনে দেওয়ার সিদ্ধান্তটাও ভুল ছিল।
তবে তিতুমীর কলেজের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, ঢাকার দক্ষিণে জগন্নাথ কলেজ এবং ঢাকার উত্তরে সরকারি তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় করার পরিকল্পনা করা হয় ২০০৫ সালে। কিন্তু রাজনৈতিক কারণে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় হলেও তিতুমীর হয়নি।
বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা, তথা দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে বড় কলেজ সরকারি তিতুমীর কলেজ। এ কলেজে শুধু অনার্স-মাস্টার্স কোর্স পড়ানো হয়, উচ্চমাধ্যমিক নেই ২৭ বছর থেকে, নেই ডিগ্রি কোর্সও। তাই অবিলম্বে তিতুমীরকে স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদা দেওয়া হোক। অন্যান্য কলেজে ইন্টারমিডিয়েট থাকায় তাদের বিশ্ববিদ্যালয় করার দাবিও যৌক্তিক নয় বলে এই কলেজ শিক্ষার্থীরা মনে করেন।
অবশ্য এই মন্তব্যের বিরোধিতা করে শরীফ উদ্দিন নামে ঢাকা কলেজের এক শিক্ষার্থী বলেন, আসলে সাত কলেজ নিয়েই বিশ্ববিদ্যালয় চাওয়া উচিত, কারণ সরকার যে কোনো মুহূর্তে সাত কলেজকে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্ডারে পাঠাতে পারে।
শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্তি থেকে সম্প্রতি বাদ হওয়া রাজধানীর সাত সরকারি কলেজ নিয়ে নতুন বিশ্ববিদ্যালয় করার উদ্যোগ নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। তবে এ উদ্যোগের সঙ্গে থাকতে নারাজ তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা। তাদের দাবি তিতুমীর কলেজকে স্বতন্ত্রভাবে বিশ্ববিদ্যালয় ঘোষণা দিতে হবে।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, এখন আর তারা সাত কলেজের সঙ্গে যুক্ত নন। তাই সাত কলেজ নিয়ে কোনো বিশ্ববিদ্যালয় বানালেও তাতে তিতুমীর কলেজ থাকবে না। আগে ছয় দফা নিয়ে আন্দোলন করলেও এখন এক দফা দাবিতে আমরণ অনশন শুরু হয়েছে। আর অনশনকারীদের প্রতি সমর্থন জানিয়ে দাবি পূরণে সরকারকে বাধ্য করতেই অবরোধ চলছে। আরো বড় কর্মসূচি দেওয়া হতে পারে। এতে জনভোগান্তি বাড়ার শঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় করার পক্ষে-বিপক্ষে প্রকাশ্য কোনো অবস্থানে নেই কলেজ কর্তৃপক্ষ। তবে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের তারা নানাভাবে সহযোগিতা করছেন বলে জানিয়েছেন কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক শিপ্রা রাণী মন্ডল।
এদিকে তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় ঘোষণার দাবিকে অযৌক্তিক মনে করছেন শিক্ষাবিদদের অনেকে। এমনকি সাত কলেজ নিয়ে যে নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোগ বর্তমান সরকার নিয়েছে, তাতে আরো দীর্ঘমেয়াদি জটিলতা বাড়বে বলে তারা মনে করছেন।
তবে সরকার যে উদ্যোগ নিয়ে কাজ করছে, তাতে তিতুমীরের শিক্ষার্থীরা সন্তুষ্ট হবে বলে আশা করছেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক এস এম এ ফায়েজ।
অবশ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবিতে এসব আন্দোলনের মধ্যে কোনো রাজনীতি ঢুকতে পারে বলেও মনে করছেন কেউ কেউ। এমনকি পরিস্থিতি ঘোলাটে করতে পতিত শক্তি এ ইস্যুতে উসকে দিচ্ছে বলেও অনেকের অভিমত।
সূত্রমতে, বিশ্ববিদ্যালয় করার দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা। কলেজগুলো হলো- ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, কবি নজরুল সরকারি কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ, সরকারি বাঙলা কলেজ ও সরকারি তিতুমীর কলেজ। এসব কলেজে শিক্ষার্থী প্রায় দুই লাখ। শিক্ষক আছেন এক হাজারের বেশি।
সর্বশেষ গত রোববার থেকে ঢাকা কলেজ শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধসহ নানা কর্মসূচি পালন করেন। শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে গত সোমবার সাত কলেজকে আবারও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আলাদা করার ঘোষণা দেয় কর্তৃপক্ষ। ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে এসব কলেজে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে না বলেও বিশ্ববিদ্যালয়টির পক্ষ থেকে জানানো হয়।
পরে বিষয়টি নিয়ে প্রধান উপদেষ্টাসহ সরকারের উচ্চপর্যায়ে কয়েক দফা বৈঠক হয়। সেখানে সরকারি এ সাতটি কলেজের জন্য পৃথক বিশ্ববিদ্যালয় করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়। এজন্য ইউজিসির মাধ্যমে একটি কমিটি কাজ করছে। এ বিষয়ে এরই মধ্যে ইউজিসি এ সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ধারাবাহিকভাবে বৈঠকও করেছে। সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার শিক্ষা উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে সম্ভাব্য নাম নিয়েও আলোচনা করে কমিটি। এ সময় ‘জুলাই ৩৬ বিশ্ববিদ্যালয়’ নাম প্রস্তাব করা হয়। এর পাশাপাশি এ সাত কলেজের জন্য অন্তর্বর্তী প্রশাসন গঠন নিয়েও আলোচনা চলছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
এদিকে সরকারের এ উদ্যোগের মধ্যে গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় ঘোষণাসহ সাত দফা দাবিতে আমরণ অনশনে বসেন ছয় শিক্ষার্থী। গত বৃহস্পতিবার শিক্ষার্থীরা রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। এতে ওই সড়কে যান চলাচল বন্ধ হওয়ার পাশাপাশি কলেজটির সব কার্যক্রমে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়। উদ্ভুত পরিস্থিতিতে গত বৃহস্পতিবার রাতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটি প্রতিনিধি দল গিয়ে শিক্ষার্থীদের দাবি যৌক্তিক বলে আখ্যা দিয়ে তাদের বিষয়টি নিয়ে সরকারের সঙ্গে আলোচনার আশ্বাস দেওয়া হয়।
তবে এ আশ্বাসে কোনো আস্থা না পেয়ে অনশন অব্যাহত রাখার পাশাপাশি গতকাল শুক্রবার নতুন করে রাস্তা অবরোধ শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। ‘তিতুমীর ঐক্য’ নামের একটি প্ল্যাটফর্ম করে এই আন্দোলন চালানো হচ্ছে।
এ বিষয়ে ‘তিতুমীর ঐক্য’-এর আহ্বায়ক নায়েক নুর মোহাম্মদ আমার দেশকে জানান, আগে সাত দফা দাবিতে আন্দোলন করলেও এখন তারা একদফা, তথা বিশ্ববিদ্যালয় ঘোষণার দাবিতে আন্দোলন চালাচ্ছেন। সরকারের আশ্বাসে কোনো আস্থা না পেয়েই তারা অবরোধে বাধ্য হয়েছেন। দাবি মানলেই কেবল কর্মসূচি প্রত্যাহার করা হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কলেজের শিক্ষকরা বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে সরাসরি না থাকলেও কর্মকর্তারা পক্ষে। এ ছাড়া ৩৫ হাজার শিক্ষার্থী এ দাবির সঙ্গে একমত।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিতুমীর কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক শিপ্রা রাণী মন্ডল আমার দেশকে বলেন, শিক্ষার্থীরা যাতে অনশনের নামে না খেয়ে অসুস্থ হয়ে না পড়ে, সেজন্য আমরা মোটিভেশনাল কাজ করছি। তাদের সার্বিক সহযোগিতা করা হচ্ছে। তবে বিশ্ববিদ্যালয় করা-না করার বিষয়টি আমাদের নয়। তারা আমাদের কাছে দাবিও করছে না। এটি রাষ্ট্রের বিষয়। তবে আমরা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আছি। তার উদ্যোগেই শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরা সেখানে এসেছিলেন বলেও দাবি করেন তিনি।
তিতুমীর কলেজ নিয়ে এ জটিলতা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে-ইউজিসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক এস এম এ ফায়েজ আমার দেশকে বলেন, আমাদের টার্ম অব কন্ডিশনে আছে সাত কলেজ। আমরা সেই বিষয়টি নিয়েই এগোচ্ছি। সাত কলেজ নিয়ে একটি বিশ্ববিদ্যালয় করার চিন্তাভাবনা করছে সরকার। এটি হলে আশা করি তিতুমীরের শিক্ষার্থীরাও সন্তুষ্ট হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, ইউনিভার্সিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ইউট্যাব) প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ড. এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম আমার দেশকে বলেন, সাত কলেজ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় করা, এটা একেবারে একটা ভুল সিদ্ধান্ত। কারণ হঠাৎ করেই এই সাত কলেজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে আনা হয়েছিল। শিক্ষার্থীরা হাবুডুবু খাচ্ছিল। আবার হঠাৎ করে এটাকে বাদ দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় করা দুরদর্শীসম্পন্ন কোনো কাজ নয়। কারণ এটা করতে গিয়ে আরো নতুন সমস্যা হবে। নতুন বিশ্ববিদ্যালয় করলে আগামীতে অন্যান্য পুরোনো কলেজগুলোও বিশ্ববিদ্যালয় করতে চাইবে। এতে অস্থিরতা আরও বাড়বে। এর একমাত্র সমাধান-তাদের বুঝিয়ে আগের জায়গায় তথা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ফিরিয়ে নেয়া।
একই ধরণের মন্তব্য করে শিক্ষাবিদ ও নওগাঁ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক মোহাম্মদ হাছানাত আলী বলেন, একটি পার্টিকুলার কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় করার দাবি ও উদ্যোগ যুক্তিযুক্ত নয়। এতে সারাদেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্য কলেজগুলোকে বিশ্ববিদ্যালয় করার দাবিতে আন্দোলনে রূপ নিতে পারে। নতুন করে সংকট তৈরি করবে। সাত কলেজকে ঢাবির অধীনে দেওয়ার সিদ্ধান্তটাও ভুল ছিল।
তবে তিতুমীর কলেজের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, ঢাকার দক্ষিণে জগন্নাথ কলেজ এবং ঢাকার উত্তরে সরকারি তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় করার পরিকল্পনা করা হয় ২০০৫ সালে। কিন্তু রাজনৈতিক কারণে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় হলেও তিতুমীর হয়নি।
বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা, তথা দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে বড় কলেজ সরকারি তিতুমীর কলেজ। এ কলেজে শুধু অনার্স-মাস্টার্স কোর্স পড়ানো হয়, উচ্চমাধ্যমিক নেই ২৭ বছর থেকে, নেই ডিগ্রি কোর্সও। তাই অবিলম্বে তিতুমীরকে স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদা দেওয়া হোক। অন্যান্য কলেজে ইন্টারমিডিয়েট থাকায় তাদের বিশ্ববিদ্যালয় করার দাবিও যৌক্তিক নয় বলে এই কলেজ শিক্ষার্থীরা মনে করেন।
অবশ্য এই মন্তব্যের বিরোধিতা করে শরীফ উদ্দিন নামে ঢাকা কলেজের এক শিক্ষার্থী বলেন, আসলে সাত কলেজ নিয়েই বিশ্ববিদ্যালয় চাওয়া উচিত, কারণ সরকার যে কোনো মুহূর্তে সাত কলেজকে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্ডারে পাঠাতে পারে।
পরে অন্য সিনিয়র রিপোর্টারদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন এ্যানি। এ সময় আমার দেশ-এর ব্যবস্থাপনা সম্পাদক জাহেদ চৌধুরী, বার্তা সম্পাদক ইলিয়াস হোসেন, ভারপ্রাপ্ত চিফ রিপোর্টার বাছির জামাল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
১০ মিনিট আগেসেন্টমার্টিন দ্বীপে নৌযান চলাচলের জন্য পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হবে। বুধবার মন্ত্রণালয় থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
১ ঘণ্টা আগেতিনি আরো বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শ্রেণিকক্ষে পাঠদানের সময় ও এসেম্বলিতে তামাকের ক্ষতিকারক দিকগুলো তুলে ধরতে হবে। এছাড়া শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের সময়েও এ বিষয়ে সচেতনতা গড়ে তুলতে হবে। এ সময় উপদেষ্টা তামাকমুক্ত বিদ্যালয় ক্যাম্পাস গড়ে তুলতে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
২ ঘণ্টা আগেআগামী শুক্র ও শনিবার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের শুল্কায়ন কার্যক্রম পুরোদমে চলবে। এ জন্য ঢাকা কাস্টমস হাউসের সব শুল্ক দলের অফিস খোলা থাকবে। বুধবার জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এসংক্রান্ত একটি আদেশ জারি করেছে।
৩ ঘণ্টা আগে