নিম্নচাপের প্রভাব কেটে যাওয়ায় সারাদেশে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা কমলেও দক্ষিণাঞ্চলে থেমে থেমে বৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে। মঙ্গলবার থেকে উপকূলীয় অঞ্চলে বৃষ্টি কমে উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ভারী বৃষ্টি বাড়তে পারে। তবে বর্ষাকাল হিসেবে সারাদেশে ভ্যাপসা গরমের দাপট থাকবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
আবহাওয়াবিদ ড. বজলুর রশিদ বলেন, বর্ষাকাল হিসেবে সারাদেশেই কমবেশি বৃষ্টি অব্যাহত থাকবে। মঙ্গলবার থেকে উপকূলীয় অঞ্চলে বৃষ্টি কমে উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ভারী বৃষ্টি বাড়তে পারে। এতে তাপমাত্রা কিছুটা কমলেও ভ্যাপসা গরমের দাপট থাকবে মাসজুড়ে।
তিনি বলেন, বর্ষাকালে থেমে থেমে বৃষ্টি হয়, আবার থেমে গেলেই ভ্যাপসা গরম পড়ে। এর কারণ বর্ষাকালে বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ বেশি থাকে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের এই আবহাওয়াবিদ আরো বলেন, এবার রংপুর ও সিলেট অঞ্চলে ৫০শতাংশ কম বৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া ময়মনসিংহ ও রাজশাহী অঞ্চলেও কম বৃষ্টি। সবমিলে এখনো চলতি জুলাই মাসে স্বাভাবিকের ৩ শতাংশ বৃষ্টি কম হয়েছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে সাধারণত জুলাই মাসেই সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়। এই মাসে গড় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ প্রায় ৫২৩ মিলিমিটার। তবে চলতি বছরের জুলাইয়ে এখন পর্যন্ত সেই পরিমাণ বৃষ্টি হয়নি বরং গড়ের তুলনায় ৩ শতাংশ কম হয়েছে। এর আগের মাস জুনেও স্বাভাবিকের তুলনায় ১৯ দশমিক ৩ শতাংশ কম বৃষ্টি হয়েছে। অন্যদিকে মে মাসে সাধারণত গড় বৃষ্টিপাত ২৯৮ মিলিমিটার হয়ে থাকে। কিন্তু এবার মে মাসে বৃষ্টি হয়েছে প্রায় ৪৮৬ মিলিমিটার, যা স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি। রংপুর, সিলেট, ময়মনসিংহ ও রাজশাহী অঞ্চলে কম বৃষ্টি হলেও খুলনা ও বরিশাল অঞ্চলে বেশি বৃষ্টি হয়েছে।
এদিকে নিম্নচাপের প্রভাব কেটে যাওয়ায় টানা বৃষ্টিপাতের প্রবণতা কমে আগামী কয়েকদিন দেশজুড়ে ভ্যাপসা গরমের দাপট থাকতে পারে বলে জানিয়েছে দপ্তরটি। এরই মধ্যে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরসমূহের সতর্ক সংকেত নামিয়ে ফেলতে বলা হয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর রোববার সকাল ছয়টার বুলেটিনে জানায়, ঝাড়খন্ড এবং তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত নিম্নচাপটি পশ্চিম-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর ও দুর্বল হয়ে সুস্পষ্ট লঘুচাপ আকারে মধ্যপ্রদেশ এবং তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমি বায়ুর অক্ষের বর্ধিতাংশ রাজস্থান, উত্তর প্রদেশ, সুস্পষ্ট লঘুচাপের কেন্দ্রস্থল, বিহার, পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চল হয়ে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের ওপর সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে মাঝারি অবস্থায় রয়েছে।
রোববার সকাল ৬টায় এর আগের ২৪ ঘণ্টায় আবহাওয়া অধিদপ্তরের ৫১টি সেন্টার এলাকায় তাপমাত্রা ও বৃষ্টিপাতের পরিমাণ রেকর্ড ও পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, দেশের অধিকাংশ এলাকায় কমবেশি বৃষ্টি হলেও আগের দুইদিনের তুলনায় কম বৃষ্টি হয়েছে। এরমধ্যে সর্বোচ্চ নোয়াখালীর মাইজদীকোর্টে ৭৩ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়।
সকাল ছয়টার বুলেটিনে বলা হয়, আজ ঢাকা ও আশপাশের আকাশ আংশিক মেঘলা থেকে অস্থায়ীভাবে মেঘলা থাকতে পারে এবং বৃষ্টি হতে পারে।


দুপুরের মধ্যে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে ঝড়বৃষ্টির আভাস