
খন্দকার হাসনাত করিম

এই যে সরকারি চাকরিতে কোটা তুলে দিয়ে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ থেকে দেশকাঁপানো-দুনিয়ানাড়ানো গণসংগ্রাম, এর মূলে ছিল যে দলবাজি ও অসীম দুর্নীতি—এটা কি আমরা খেয়াল করেছি কখনও? অন্ধ দলীয় আনুগত্যের পাশাপাশি ছিল নিয়োগবাণিজ্যে দুর্নীতি। দল ও টাকা এই দুটি ছিল ভায়রা ভাই। সিভিল প্রশাসন ও পুলিশ ছিল এই দুই ভায়রা ভাইয়ের মৃগয়াক্ষেত্র।
নিয়োগবাণিজ্যে চলত নৈতিকতাবর্জিত দুঃশাসন, মেধার বঞ্চনা ও যোগ্যতার প্রতি ভ্রুক্ষেপহীনতা। ফলাফলে চরম বৈষম্য। যেসব মন্ত্রী ও দলীয় নেতাদের টাকার খনির সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে, সেগুলোর মধ্যে সরকারি দরপত্র যদি প্রধানও হয়, সেক্ষেত্রে ওইসব মন্ত্রণালয়, বিভাগ, দপ্তর-পরিদপ্তর ও সব কর্মশাখায় নিয়োগের ক্ষেত্রে সীমাহীন দুর্নীতির অভিযোগও কি কম ছিল? এর ওপর ছিল দলীয় সুপারিশ ও তৃণমূলের দুর্নীতির সরাসরি যোগসাজশ।
স্বৈরাচারী সরকার ও শাসক মহলের দ্বারা সংঘটিত জাতীয় ও রাষ্ট্রীয় পর্যায়ের দুর্নীতির অনুষঙ্গ ছিল অর্থ আত্মসাৎ, বিদেশে অর্থ পাচার, তহবিল তছরুপ, সম্পদ অপচয়, জমি ও ঘের দখল, কারখানা দখল, ঠিকাদারদের কাছ থেকে অন্যায়ভাবে লভ্যাংশ দাবি, দখলদারদের আইনের সুরক্ষা প্রদান, পুলিশের ওপর প্রভাব খাটিয়ে তাদের জবরদখল চালিয়ে যাওয়ার সুযোগ ও সুরক্ষা দেওয়া, কলেজ কমিটি দখল, এমনকি মসজিদ কমিটিতেও জবরদখল কায়েম করা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মাঠে মার্কেট নির্মাণ, ছাত্র-ছাত্রী ভর্তিতে দুর্নীতি, ফলাফলে হস্তক্ষেপ, প্রতিবাদকারী শিক্ষকদের হেনস্তা করা, শিক্ষাঙ্গনে বিরোধী দল-মতের ছাত্রদের খুন, সিটবাণিজ্য, নিষিদ্ধ ছাত্রলীগকে দিয়ে মারপিট, কমনরুম দখল, ছাত্রীদের ওপর অকথ্য নির্যাতন, শ্লীলতাহানি এমনকি যৌন নিপীড়নের প্রাত্যহিক নিষ্ঠুরতা, হল সংসদ পরিচালনায় নৈরাজ্য, মাইকে আজান নিষিদ্ধ করা, টুপি-দাড়ি দেখলেই নিগ্রহ ও মৌলবাদী হিসাবে চিহ্নিত করা, হলে হলে মুজিববন্দনা, মূর্তিপূজাসহ এহেন নিকৃষ্ট শিরকে সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের বাধ্য করা এবং এসব ছাড়াও অনেক অনৈতিক দুষ্কর্ম।
নিষ্ঠুর এক নায়ক রক্তপিপাসু স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার পাপের পেয়ালা পূর্ণ হয়ে উপচে পড়েছিল। গণরোষের বাঁধভাঙা জোয়ারে তার দল ও তার নিজের গদি ভেসে যেতে উপক্রম করলে সেই মুহূর্তেও তিনি তার এসএসএফ বাহিনীকে নির্দেশ দেন সেনাবাহিনীর ওপর গুলি চালাতে। এমনকি ভারতীয় প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা দোভালকে তিনি বাংলাদেশ আক্রমণের প্রস্তাব পর্যন্ত দেন। ভারতীয়রা আগ্রাসী আধিপত্যবাদী, তবে হাসিনার মতো অত বিবেকহীন স্টুপিড নয়।
বাংলাদেশে আক্রমণ করার নতিজা তারা জানত। কিন্তু তারা ভেবে অবাক হয়ে যায়, হাসিনা ভারতীয়দের চেয়েও বেশি ভারতীয়, পোপের চেয়েও বড় ক্যাথোলিক! তাই তাদের দেশে তারা ওই স্বেচ্ছাচারিণীকে রাজ-আতিথ্যে দালাই লামা করে রেখেছে। যার জন্মের ঠিক নেই, শুধু সে-ই পারে একটি প্রতিবেশী দেশে বসে সেই দেশকে নিজ দেশ আক্রমণের প্রস্তাব দিতে। একজন দুর্নীতির মহারানি ও পরদেশের সেবাদাসীর পক্ষেই এমন বিশ্বাসঘাতকতা করা সাজে। নিজে দুর্নীতিবাজ বলেই তিনি তার দলবলকে দুর্নীতি করার সুযোগ করে দিয়েছিলেন।
তিনি তো প্রকাশ্যেই বলতেন, এটা তার বাবার দেশ। তার বাবাই এদেশ স্বাধীন করে। দুর্নীতি, অর্থপাচার ও ভারতকে নজিরবিহীন সুযোগ দেওয়া—এসবকে তিনি মনে করতেন তার পৈতৃক অধিকার। দেশটাকে দুর্নীতি ও হরিলুটের মৃগয়াক্ষেত্র বানাতে তাই তার বিবেক বাধ সাধেনি এতটুকু।
লর্ড অ্যাকটনের সেই অমোঘ উক্তি সমকালীন বিশ্বে সবচেয়ে খাটে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার ব্যাপারে, যেখানে তিনি যথার্থই বলেছিলেন, ক্ষমতামাত্রই দুর্নীতিগ্রস্ত করে তোলে; আর ক্ষমতা যতই বেশি হয়, দুর্নীতিও ততই মাত্রাছাড়া হয়ে ওঠে (Power corrupts; absolute power corrupts absolutely)। প্রস্তাবিত সংস্কার সুপারিশে এক ব্যক্তি দুই মেয়াদের বেশি সরকারপ্রধান হতে পারবেন না, দলীয় প্রধান ও সরকারপ্রধান আলাদা ব্যক্তি হবেন, রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হতে হবে, যাতে ক্ষমতায় ভারসাম্য আনা যায়—এগুলো অত্যন্ত প্রয়োজনীয় এবং Check & Balance-এর জন্য অতি গুরুত্বপূর্ণ বটে।
স্বৈরাচারী হাসিনা একনায়কের একচ্ছত্র শাসন চালিয়েছিলেন এবং সে প্রহসনের নির্বাচনে ভোটবিহীন অবৈধতাকে গায়ের জোরে বহাল রাখতে ধরেছিলেন বিরোধী যত দলন, দমন, গুম, খুন, নির্যাতন, আয়নাঘর, বিচারবহির্ভূত হত্যা, বিচারিক হত্যাকাণ্ড, রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করা, জনগণের অর্থে কেনা অস্ত্র জনগণের বুকে চালানো, ছাত্র-শ্রমিক-জনতার ওপর নির্বিচার গণহত্যা, পঙ্গু করে দেওয়া, এমনকি দেশের বীর দেশপ্রেমিক সৈন্যদের ওপর তার কুখ্যাত ঘাতক এসএসএফ বাহিনীকে দিয়ে গুলির নির্দেশ, সর্বোপরি বাংলাদেশে আক্রমণ করার জন্য ভারতীয় প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা দোভালকে নির্দেশ দেওয়ার মতো রাষ্ট্রদ্রোহ ও ভারতীয় নাগরিকসুলভ আচরণের ভয়ংকর পথ। এই পথ দিয়ে ভারতে যাওয়া যায়, কিন্তু দেশে ফেরা যায় না।
তবে গণদাবি হচ্ছে, তাকে যে করেই হোক দেশে এনে বিচারের এজলাসে দাঁড় করানো এবং তার যথাবিহিত প্রাপ্য বিচার নিশ্চিত করা ও রোমানিয়ার নিকোলাই চসেস্কুর মতো শাস্তি কার্যকর করা। বিচার যে তার হবেই হবে, এটা সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের মতো অনিবার্য। এই দৃষ্টান্ত বিশ্বের কাছে একটা দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। স্বৈরাচার ধ্বংস করেছে বাংলাদেশের গণতন্ত্র ও সুশাসন, লুটেছে অর্থনীতি, ইতিহাসে সর্বাধিক অর্থসম্পদ পাচার করেছে, মাটিতে মিশিয়ে দিয়েছে সব সংবিধানিক প্রতিষ্ঠান, বিষাক্ত করেছে সামরিক-বেসামরিক প্রতিষ্ঠান, গোটা রাষ্ট্র ব্যবস্থাপনার দলীয়করণ, জনগণের ওপর ঋণভার চাপিয়ে আত্মম্ভরী প্রকল্প থেকে পুকুরচুরি এবং দলীয় লেজুড়দের কাজের ঠিকা/উপঠিকা ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির মতো নির্বিচার হরিলুট, দলীয় সশস্ত্র বাহিনী দিয়ে নিরস্ত্র জনসাধারণের ওপর অকথ্য নির্যাতন ও নিপীড়ন এবং হত্যা, ধর্ষণ, সিট দখল, ভর্তিবাণিজ্যের মহোৎসব প্রভৃতি।
‘রাজা যা না বলে পারিষদ বলে তার শত গুণ’ এভাবে তার পোষ্য মন্ত্রী, সংসদ সদস্য, নেতা-পাতিনেতা ও উচ্ছিষ্টভোগী চাটুকারদের প্রশংসা এবং স্তাবকলীলা ছিল বিগত ১৭ বছরের বাস্তবতা, যার সূচনা স্বাধীনতার পর এবং পরিপূর্ণতা গত ১৭ বছরের দুঃশাসনের আমলে। দুর্নীতির বরযাত্রায় সঙ্গী হয়েছেন নির্লজ্জ বেহায়া আমলাদের একটি বড় অংশ। যারা দুর্নীতির সঙ্গে আপস করেননি তারা হয়েছেন বাধ্যতামূলক অবসরের শিকার, কিংবা পদাবনতির মতো অপমান ও অবিচারের শিকার। গোপালগঞ্জ-প্রীতিতে মোহাবিষ্ট স্বৈরাচার অবিচার করেছে অন্য জেলার প্রতি।
জাতীয় প্রেস ক্লাব থেকে শুরু করে দেশের সব পেশাজীবী সংস্থা ও সমিতির নেতৃত্ব জবরদখল করেছে স্বৈরাচারের নির্লজ্জ পদলেহীরা। দেশকে একটা আবাসযোগ্য জাহান্নাম বানিয়েছে তারা। দেশের স্বার্থ এমনকি স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকে বিসর্জন দিয়ে আগ্রাসী শত্রু ভারতের চরণে। বিরোধী দলগুলো যখন চোখের পানিতে নির্যাতন-নিপীড়ন সহ্য করেছে, তখন শেষ পর্যন্ত ছাত্র-জনতা হেনেছে মারণ আঘাত। এক নজিরবিহীন ছাত্র-জনতা-সিপাহির মহাবিদ্রোহের মধ্য দিয়ে উৎখাত হয়েছে শেখ পরিবারের দুর্বিষহ স্বেচ্ছাচারী দুঃশাসন। দুই হাজার ছাত্রজনতা বুলেটের মুখে বুক পেতে দিয়ে, প্রায় ৩০ হাজার মানুষ আজীবন পঙ্গুত্ব বরণ করে পতন ঘটিয়েছে শেখ পরিবারের ‘বাস্তিল দুর্গ’।
লাখ লাখ মানুষ সাহসে বুক বেঁধেছে শহীদ আবু সাঈদের মতো। সবশেষে রক্তপাত ও গণহত্যার বিভীষিকা থেকে দেশ ও জাতিকে রক্ষা করেছে বীর সন্তান দেশপ্রেমিক সৈন্যবাহিনীসহ সমগ্র প্রতিরক্ষা ফৌজ ‘আর একটা গুলিও চলবে না’ এই ঐতিহাসিক প্রত্যয়ে। সালাম কুমিল্লা সেনানিবাসের সেই তরুণ আর্মি অফিসার ও তার মতো বিবেকবান অফিসার ও সৈনিকদের প্রতি, যারা তাদের অস্ত্র ও সাঁজোয়া বহর নিয়ে আওয়ামী পুলিশ ও সশস্ত্র ক্যাডার বাহিনীর গণহত্যার নির্মমতার প্রতিরোধে মৃত্যুভীতি, বিচার ও চাকরি হারানোর মায়া ত্যাগ করে রাজপথে নেমে এসে জনতার সঙ্গে কাতারবন্দি হন এবং গণসংগ্রামের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করেন। বীর সেনানিদের এই গৌরবময় ভূমিকা যেমন ছিল জনতার সঙ্গে সংহতি, তেমনি ছিল ভারতীয় আধিপত্যবাদের আগ্রাসনের সময়োচিত প্রতিরোধ।
এই দেশপ্রেম ও ঈমানি শক্তিই বাংলাদেশের সবচেয়ে শক্তিশালী সমরাস্ত্র। এই শক্তি নিয়েই এদেশের বীর যোদ্ধারা একদিন প্রতিরোধ করেছিল মোগল অভিযান, মগ ও মারাঠি অত্যাচার, ব্রিটিশদের দুই শতাব্দীর দুঃশাসন, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে পাকবাহিনীর আক্রমণ, ১৯৭৫ সালের সফল রাষ্ট্রবিপ্লব, একই বছরের ৭ নভেম্বর ঐতিহাসিক সিপাহী-জনতা বিপ্লব এবং সবশেষে ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের দুনিয়া-কাঁপানো গণবিপ্লব ও মহাবিদ্রোহে। এ জাতি চিরদিন পরম শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবে দেশের দেশপ্রেমিক ফৌজিয়ানদের এই অবদানের ঐতিহাসিক ধারা পরম্পরাকে। যেমন স্মরণ করবে, এ দেশের নতুন প্রজন্মের বীর শহীদ ও পঙ্গু ছাত্রছাত্রী, প্রতিবাদী সংগ্রামী জনতার জুলাই-আগস্ট মহাবিদ্রোহের বীর যোদ্ধাদের, যাদের রক্ত ও দুর্ভোগের বিনিময়ে আমরা পেয়েছি নতুন দেশ, নতুন বাংলাদেশ ও নতুন স্বাধীনতা।
ভারতীয় আধিপত্যবাদের জিঞ্জির ভেঙে বের হওয়ার মতো বিরল অর্জন। এই অর্জনকে স্থায়ীভাবে ধরে রাখাই এখন দল-মত-পথ নির্বিশেষে সমগ্র ঐক্যবদ্ধ জাতির ঐকান্তিক আকাঙ্ক্ষা। এই অর্জনকে ধরে রাখতে হবে একমাত্র দেশপ্রেমিক শক্তির ঐক্য দ্বারাই। এখানে বিভেদ, বিতণ্ডা ও অনৈক্যের সামান্যতম অবকাশ নেই। স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব ও জাতীয় স্বার্থের অনৈক্য মানেই হবে ‘পলাশী যুদ্ধের’ শোকাবহ পরিণতি, যার মাশুল দিতে হয়েছে বাংলাদেশসহ সমগ্র উপমহাদেশবাসীকে ১৭৫৭ থেকে ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত। মির জাফর, রাজা রায় দুর্লভ, উমি চাঁদ ও জগৎশেঠেরা কিন্তু বসে নেই। বসে নেই বাংলাদেশের খেয়ে-পরে বহাল তবিয়তে বেঁচে থাকা ভারতীয় সেবাদাস-সেবাদাসী, চর-অনুচর এবং রাজনৈতিক-সাংস্কৃতিক সেবাদাস-দাসীদের মতো উচ্ছিষ্টভোগী দালালগুলোও।
যত কঠোরভাবে ভারতীয় আধিপত্যবাদকে সমূলে উৎখাত করা যাবে, ততই সংহত হবে আমাদের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব এবং জাতীয় স্বার্থ। এই সত্যটিকে ধারণ, লালন ও রুহের মধ্যে ঢুকিয়ে নিতে হবে বাংলাদেশের হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, উপজাতি, পাহাড়ি, সমতলবাসী, নবীন, প্রবীণ—সব মত ও পথের দেশপ্রেমিক বাংলাদেশিকে।
এমএস

এই যে সরকারি চাকরিতে কোটা তুলে দিয়ে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ থেকে দেশকাঁপানো-দুনিয়ানাড়ানো গণসংগ্রাম, এর মূলে ছিল যে দলবাজি ও অসীম দুর্নীতি—এটা কি আমরা খেয়াল করেছি কখনও? অন্ধ দলীয় আনুগত্যের পাশাপাশি ছিল নিয়োগবাণিজ্যে দুর্নীতি। দল ও টাকা এই দুটি ছিল ভায়রা ভাই। সিভিল প্রশাসন ও পুলিশ ছিল এই দুই ভায়রা ভাইয়ের মৃগয়াক্ষেত্র।
নিয়োগবাণিজ্যে চলত নৈতিকতাবর্জিত দুঃশাসন, মেধার বঞ্চনা ও যোগ্যতার প্রতি ভ্রুক্ষেপহীনতা। ফলাফলে চরম বৈষম্য। যেসব মন্ত্রী ও দলীয় নেতাদের টাকার খনির সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে, সেগুলোর মধ্যে সরকারি দরপত্র যদি প্রধানও হয়, সেক্ষেত্রে ওইসব মন্ত্রণালয়, বিভাগ, দপ্তর-পরিদপ্তর ও সব কর্মশাখায় নিয়োগের ক্ষেত্রে সীমাহীন দুর্নীতির অভিযোগও কি কম ছিল? এর ওপর ছিল দলীয় সুপারিশ ও তৃণমূলের দুর্নীতির সরাসরি যোগসাজশ।
স্বৈরাচারী সরকার ও শাসক মহলের দ্বারা সংঘটিত জাতীয় ও রাষ্ট্রীয় পর্যায়ের দুর্নীতির অনুষঙ্গ ছিল অর্থ আত্মসাৎ, বিদেশে অর্থ পাচার, তহবিল তছরুপ, সম্পদ অপচয়, জমি ও ঘের দখল, কারখানা দখল, ঠিকাদারদের কাছ থেকে অন্যায়ভাবে লভ্যাংশ দাবি, দখলদারদের আইনের সুরক্ষা প্রদান, পুলিশের ওপর প্রভাব খাটিয়ে তাদের জবরদখল চালিয়ে যাওয়ার সুযোগ ও সুরক্ষা দেওয়া, কলেজ কমিটি দখল, এমনকি মসজিদ কমিটিতেও জবরদখল কায়েম করা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মাঠে মার্কেট নির্মাণ, ছাত্র-ছাত্রী ভর্তিতে দুর্নীতি, ফলাফলে হস্তক্ষেপ, প্রতিবাদকারী শিক্ষকদের হেনস্তা করা, শিক্ষাঙ্গনে বিরোধী দল-মতের ছাত্রদের খুন, সিটবাণিজ্য, নিষিদ্ধ ছাত্রলীগকে দিয়ে মারপিট, কমনরুম দখল, ছাত্রীদের ওপর অকথ্য নির্যাতন, শ্লীলতাহানি এমনকি যৌন নিপীড়নের প্রাত্যহিক নিষ্ঠুরতা, হল সংসদ পরিচালনায় নৈরাজ্য, মাইকে আজান নিষিদ্ধ করা, টুপি-দাড়ি দেখলেই নিগ্রহ ও মৌলবাদী হিসাবে চিহ্নিত করা, হলে হলে মুজিববন্দনা, মূর্তিপূজাসহ এহেন নিকৃষ্ট শিরকে সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের বাধ্য করা এবং এসব ছাড়াও অনেক অনৈতিক দুষ্কর্ম।
নিষ্ঠুর এক নায়ক রক্তপিপাসু স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার পাপের পেয়ালা পূর্ণ হয়ে উপচে পড়েছিল। গণরোষের বাঁধভাঙা জোয়ারে তার দল ও তার নিজের গদি ভেসে যেতে উপক্রম করলে সেই মুহূর্তেও তিনি তার এসএসএফ বাহিনীকে নির্দেশ দেন সেনাবাহিনীর ওপর গুলি চালাতে। এমনকি ভারতীয় প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা দোভালকে তিনি বাংলাদেশ আক্রমণের প্রস্তাব পর্যন্ত দেন। ভারতীয়রা আগ্রাসী আধিপত্যবাদী, তবে হাসিনার মতো অত বিবেকহীন স্টুপিড নয়।
বাংলাদেশে আক্রমণ করার নতিজা তারা জানত। কিন্তু তারা ভেবে অবাক হয়ে যায়, হাসিনা ভারতীয়দের চেয়েও বেশি ভারতীয়, পোপের চেয়েও বড় ক্যাথোলিক! তাই তাদের দেশে তারা ওই স্বেচ্ছাচারিণীকে রাজ-আতিথ্যে দালাই লামা করে রেখেছে। যার জন্মের ঠিক নেই, শুধু সে-ই পারে একটি প্রতিবেশী দেশে বসে সেই দেশকে নিজ দেশ আক্রমণের প্রস্তাব দিতে। একজন দুর্নীতির মহারানি ও পরদেশের সেবাদাসীর পক্ষেই এমন বিশ্বাসঘাতকতা করা সাজে। নিজে দুর্নীতিবাজ বলেই তিনি তার দলবলকে দুর্নীতি করার সুযোগ করে দিয়েছিলেন।
তিনি তো প্রকাশ্যেই বলতেন, এটা তার বাবার দেশ। তার বাবাই এদেশ স্বাধীন করে। দুর্নীতি, অর্থপাচার ও ভারতকে নজিরবিহীন সুযোগ দেওয়া—এসবকে তিনি মনে করতেন তার পৈতৃক অধিকার। দেশটাকে দুর্নীতি ও হরিলুটের মৃগয়াক্ষেত্র বানাতে তাই তার বিবেক বাধ সাধেনি এতটুকু।
লর্ড অ্যাকটনের সেই অমোঘ উক্তি সমকালীন বিশ্বে সবচেয়ে খাটে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার ব্যাপারে, যেখানে তিনি যথার্থই বলেছিলেন, ক্ষমতামাত্রই দুর্নীতিগ্রস্ত করে তোলে; আর ক্ষমতা যতই বেশি হয়, দুর্নীতিও ততই মাত্রাছাড়া হয়ে ওঠে (Power corrupts; absolute power corrupts absolutely)। প্রস্তাবিত সংস্কার সুপারিশে এক ব্যক্তি দুই মেয়াদের বেশি সরকারপ্রধান হতে পারবেন না, দলীয় প্রধান ও সরকারপ্রধান আলাদা ব্যক্তি হবেন, রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হতে হবে, যাতে ক্ষমতায় ভারসাম্য আনা যায়—এগুলো অত্যন্ত প্রয়োজনীয় এবং Check & Balance-এর জন্য অতি গুরুত্বপূর্ণ বটে।
স্বৈরাচারী হাসিনা একনায়কের একচ্ছত্র শাসন চালিয়েছিলেন এবং সে প্রহসনের নির্বাচনে ভোটবিহীন অবৈধতাকে গায়ের জোরে বহাল রাখতে ধরেছিলেন বিরোধী যত দলন, দমন, গুম, খুন, নির্যাতন, আয়নাঘর, বিচারবহির্ভূত হত্যা, বিচারিক হত্যাকাণ্ড, রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করা, জনগণের অর্থে কেনা অস্ত্র জনগণের বুকে চালানো, ছাত্র-শ্রমিক-জনতার ওপর নির্বিচার গণহত্যা, পঙ্গু করে দেওয়া, এমনকি দেশের বীর দেশপ্রেমিক সৈন্যদের ওপর তার কুখ্যাত ঘাতক এসএসএফ বাহিনীকে দিয়ে গুলির নির্দেশ, সর্বোপরি বাংলাদেশে আক্রমণ করার জন্য ভারতীয় প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা দোভালকে নির্দেশ দেওয়ার মতো রাষ্ট্রদ্রোহ ও ভারতীয় নাগরিকসুলভ আচরণের ভয়ংকর পথ। এই পথ দিয়ে ভারতে যাওয়া যায়, কিন্তু দেশে ফেরা যায় না।
তবে গণদাবি হচ্ছে, তাকে যে করেই হোক দেশে এনে বিচারের এজলাসে দাঁড় করানো এবং তার যথাবিহিত প্রাপ্য বিচার নিশ্চিত করা ও রোমানিয়ার নিকোলাই চসেস্কুর মতো শাস্তি কার্যকর করা। বিচার যে তার হবেই হবে, এটা সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের মতো অনিবার্য। এই দৃষ্টান্ত বিশ্বের কাছে একটা দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। স্বৈরাচার ধ্বংস করেছে বাংলাদেশের গণতন্ত্র ও সুশাসন, লুটেছে অর্থনীতি, ইতিহাসে সর্বাধিক অর্থসম্পদ পাচার করেছে, মাটিতে মিশিয়ে দিয়েছে সব সংবিধানিক প্রতিষ্ঠান, বিষাক্ত করেছে সামরিক-বেসামরিক প্রতিষ্ঠান, গোটা রাষ্ট্র ব্যবস্থাপনার দলীয়করণ, জনগণের ওপর ঋণভার চাপিয়ে আত্মম্ভরী প্রকল্প থেকে পুকুরচুরি এবং দলীয় লেজুড়দের কাজের ঠিকা/উপঠিকা ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির মতো নির্বিচার হরিলুট, দলীয় সশস্ত্র বাহিনী দিয়ে নিরস্ত্র জনসাধারণের ওপর অকথ্য নির্যাতন ও নিপীড়ন এবং হত্যা, ধর্ষণ, সিট দখল, ভর্তিবাণিজ্যের মহোৎসব প্রভৃতি।
‘রাজা যা না বলে পারিষদ বলে তার শত গুণ’ এভাবে তার পোষ্য মন্ত্রী, সংসদ সদস্য, নেতা-পাতিনেতা ও উচ্ছিষ্টভোগী চাটুকারদের প্রশংসা এবং স্তাবকলীলা ছিল বিগত ১৭ বছরের বাস্তবতা, যার সূচনা স্বাধীনতার পর এবং পরিপূর্ণতা গত ১৭ বছরের দুঃশাসনের আমলে। দুর্নীতির বরযাত্রায় সঙ্গী হয়েছেন নির্লজ্জ বেহায়া আমলাদের একটি বড় অংশ। যারা দুর্নীতির সঙ্গে আপস করেননি তারা হয়েছেন বাধ্যতামূলক অবসরের শিকার, কিংবা পদাবনতির মতো অপমান ও অবিচারের শিকার। গোপালগঞ্জ-প্রীতিতে মোহাবিষ্ট স্বৈরাচার অবিচার করেছে অন্য জেলার প্রতি।
জাতীয় প্রেস ক্লাব থেকে শুরু করে দেশের সব পেশাজীবী সংস্থা ও সমিতির নেতৃত্ব জবরদখল করেছে স্বৈরাচারের নির্লজ্জ পদলেহীরা। দেশকে একটা আবাসযোগ্য জাহান্নাম বানিয়েছে তারা। দেশের স্বার্থ এমনকি স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকে বিসর্জন দিয়ে আগ্রাসী শত্রু ভারতের চরণে। বিরোধী দলগুলো যখন চোখের পানিতে নির্যাতন-নিপীড়ন সহ্য করেছে, তখন শেষ পর্যন্ত ছাত্র-জনতা হেনেছে মারণ আঘাত। এক নজিরবিহীন ছাত্র-জনতা-সিপাহির মহাবিদ্রোহের মধ্য দিয়ে উৎখাত হয়েছে শেখ পরিবারের দুর্বিষহ স্বেচ্ছাচারী দুঃশাসন। দুই হাজার ছাত্রজনতা বুলেটের মুখে বুক পেতে দিয়ে, প্রায় ৩০ হাজার মানুষ আজীবন পঙ্গুত্ব বরণ করে পতন ঘটিয়েছে শেখ পরিবারের ‘বাস্তিল দুর্গ’।
লাখ লাখ মানুষ সাহসে বুক বেঁধেছে শহীদ আবু সাঈদের মতো। সবশেষে রক্তপাত ও গণহত্যার বিভীষিকা থেকে দেশ ও জাতিকে রক্ষা করেছে বীর সন্তান দেশপ্রেমিক সৈন্যবাহিনীসহ সমগ্র প্রতিরক্ষা ফৌজ ‘আর একটা গুলিও চলবে না’ এই ঐতিহাসিক প্রত্যয়ে। সালাম কুমিল্লা সেনানিবাসের সেই তরুণ আর্মি অফিসার ও তার মতো বিবেকবান অফিসার ও সৈনিকদের প্রতি, যারা তাদের অস্ত্র ও সাঁজোয়া বহর নিয়ে আওয়ামী পুলিশ ও সশস্ত্র ক্যাডার বাহিনীর গণহত্যার নির্মমতার প্রতিরোধে মৃত্যুভীতি, বিচার ও চাকরি হারানোর মায়া ত্যাগ করে রাজপথে নেমে এসে জনতার সঙ্গে কাতারবন্দি হন এবং গণসংগ্রামের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করেন। বীর সেনানিদের এই গৌরবময় ভূমিকা যেমন ছিল জনতার সঙ্গে সংহতি, তেমনি ছিল ভারতীয় আধিপত্যবাদের আগ্রাসনের সময়োচিত প্রতিরোধ।
এই দেশপ্রেম ও ঈমানি শক্তিই বাংলাদেশের সবচেয়ে শক্তিশালী সমরাস্ত্র। এই শক্তি নিয়েই এদেশের বীর যোদ্ধারা একদিন প্রতিরোধ করেছিল মোগল অভিযান, মগ ও মারাঠি অত্যাচার, ব্রিটিশদের দুই শতাব্দীর দুঃশাসন, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে পাকবাহিনীর আক্রমণ, ১৯৭৫ সালের সফল রাষ্ট্রবিপ্লব, একই বছরের ৭ নভেম্বর ঐতিহাসিক সিপাহী-জনতা বিপ্লব এবং সবশেষে ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের দুনিয়া-কাঁপানো গণবিপ্লব ও মহাবিদ্রোহে। এ জাতি চিরদিন পরম শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবে দেশের দেশপ্রেমিক ফৌজিয়ানদের এই অবদানের ঐতিহাসিক ধারা পরম্পরাকে। যেমন স্মরণ করবে, এ দেশের নতুন প্রজন্মের বীর শহীদ ও পঙ্গু ছাত্রছাত্রী, প্রতিবাদী সংগ্রামী জনতার জুলাই-আগস্ট মহাবিদ্রোহের বীর যোদ্ধাদের, যাদের রক্ত ও দুর্ভোগের বিনিময়ে আমরা পেয়েছি নতুন দেশ, নতুন বাংলাদেশ ও নতুন স্বাধীনতা।
ভারতীয় আধিপত্যবাদের জিঞ্জির ভেঙে বের হওয়ার মতো বিরল অর্জন। এই অর্জনকে স্থায়ীভাবে ধরে রাখাই এখন দল-মত-পথ নির্বিশেষে সমগ্র ঐক্যবদ্ধ জাতির ঐকান্তিক আকাঙ্ক্ষা। এই অর্জনকে ধরে রাখতে হবে একমাত্র দেশপ্রেমিক শক্তির ঐক্য দ্বারাই। এখানে বিভেদ, বিতণ্ডা ও অনৈক্যের সামান্যতম অবকাশ নেই। স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব ও জাতীয় স্বার্থের অনৈক্য মানেই হবে ‘পলাশী যুদ্ধের’ শোকাবহ পরিণতি, যার মাশুল দিতে হয়েছে বাংলাদেশসহ সমগ্র উপমহাদেশবাসীকে ১৭৫৭ থেকে ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত। মির জাফর, রাজা রায় দুর্লভ, উমি চাঁদ ও জগৎশেঠেরা কিন্তু বসে নেই। বসে নেই বাংলাদেশের খেয়ে-পরে বহাল তবিয়তে বেঁচে থাকা ভারতীয় সেবাদাস-সেবাদাসী, চর-অনুচর এবং রাজনৈতিক-সাংস্কৃতিক সেবাদাস-দাসীদের মতো উচ্ছিষ্টভোগী দালালগুলোও।
যত কঠোরভাবে ভারতীয় আধিপত্যবাদকে সমূলে উৎখাত করা যাবে, ততই সংহত হবে আমাদের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব এবং জাতীয় স্বার্থ। এই সত্যটিকে ধারণ, লালন ও রুহের মধ্যে ঢুকিয়ে নিতে হবে বাংলাদেশের হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, উপজাতি, পাহাড়ি, সমতলবাসী, নবীন, প্রবীণ—সব মত ও পথের দেশপ্রেমিক বাংলাদেশিকে।
এমএস

এই বছর অর্থনীতির নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়েছে উদ্ভাবন ও সৃজনশীল ধ্বংসের প্রক্রিয়া (creative destruction) কীভাবে দীর্ঘমেয়াদি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির মূল চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করে সেই গবেষণার ওপর। নতুন প্রযুক্তি ও ধারণা পুরোনো ব্যবস্থাকে প্রতিস্থাপন করে সমাজ যখন পরিবর্তনের জন্য উন্মুক্ত থাকে, তখনই টেক
১৮ ঘণ্টা আগে
‘মনের তালা খুলল কে, চাবিওয়ালা, চাবিওয়ালা!’ প্রখ্যাত শিল্পী রুনা লায়লার সেই সুরেলা প্রশ্নের উত্তর আজও খুঁজে বেড়াচ্ছি! তবে ব্যক্তিগত জীবনে নয়, রাষ্ট্রীয় জীবনে। এই রাষ্ট্রের জীবনেও একটা বিশেষ তালা আছে, আর তার নাম আর্টিকেল ৭০! এই তালা লাগানো হয়েছিল সেই সব মাননীয়র জন্য, যাদের মধ্যে ‘ছাগলীয়’ প্রবৃত্তি রয়ে
১৮ ঘণ্টা আগে
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ইসরাইলের যুদ্ধাপরাধী প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে প্রায়ই তার পরম বন্ধু বলে বেশ গৌরবের সঙ্গে প্রচার করে থাকেন। ভিন্ন দেশের এ দুই রাজনীতিবিদের প্রগাঢ় বন্ধুত্বের মূল সূত্র হলো মুসলমানদের প্রতি তাদের তীব্র ঘৃণা। বর্তমান বিশ্বে ইসলামোফোবিয়ায় আক্রান্ত শীর্ষ দুটি
১৮ ঘণ্টা আগে
গাজার ভবিষ্যৎ নিয়ে যখন হতাশা চরমে, তখনই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা করেছেন এক নতুন ‘২০ দফার শান্তি পরিকল্পনা’। সেখানে তিনি নিজেকে বসিয়েছেন একটি তথাকথিত ‘বোর্ড অব পিস’-এর চেয়ারম্যান হিসেবে।
২ দিন আগে