আজিজুল হাকিম রাকিব ও আতিয়া ইবনাত রিফাহ্
দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশের তুলনায় ভারতে সংখ্যালঘু নির্যাতনের হার অনেক বেশি। ভারত সাংবিধানিকভাবে একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র হলেও হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠ এই দেশটিতে বাস্তবে ধর্মীয় সহিষ্ণুতা অনেক কম। আবার অন্যান্য সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে ততটা সহিংসতা দেখা যায় না, ঠিক যতটা মুসলিমদের বিপক্ষে দেখা যায়। ভারতের মুসলিমরা বরাবরই উগ্র হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলোর টার্গেটে পরিণত হয়েছে, যা নিয়ে ভারতের সাধারণ হিন্দু নাগরিকরাও বেশ চিন্তিত।
নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) গত ১১ বছরের শাসনামলে ভারতে অন্যান্য সময়ের তুলনায় বেশি মাত্রায় সংখ্যালঘু নির্যাতিত হয়েছে। বিজেপি হিন্দু ধর্মকে উগ্রতার সঙ্গে সংযোগ ঘটিয়ে নিজেদের রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিল করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। বিজেপির শীর্ষস্থানীয়দের বিভিন্ন সময়ের ইসলামবিদ্বেষী বক্তব্যের মাধ্যমে বোঝা যায়, তাদের রাজনীতির তুরুপের তাস ইসলামবিদ্বেষ।
বিজেপির শাসনামলে বিভিন্ন ঐতিহাসিক ইসলামিক স্থাপনা ও মুসলিমদের বাড়িঘর বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়ার ঘটনা অহরহ ঘটেছে। এ ছাড়া মুসলিম নামে থাকা বিভিন্ন স্থাপনার নাম পরিবর্তন, গরুর মাংস রাখার কারণে মুসলিমদের ওপর হামলা করাসহ নানা ধরনের ইসলামবিদ্বেষী কার্যক্রম এখন ভারতের প্রতিদিনকার ঘটনা।
সম্প্রতি ভারতে হোলি উৎসব উদ্যাপনকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া বেশ কিছু ভিডিও এবং সংবাদে সংখ্যালঘু মুসলিমদের উগ্র-হিন্দুত্ববাদী আক্রমণের শিকার হতে দেখা গেছে। ভারতের মতো সাংবিধানিকভাবে ধর্মনিরপেক্ষ ঘোষিত একটি দেশে এ ধরনের উগ্রবাদী হামলা ভারত এবং এর আশেপাশের দেশগুলোয় বেশ হতাশা ও উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে। এর প্রভাবে আশেপাশের দেশগুলোয় সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বাধার আশঙ্কাও করা হচ্ছে।
ভারতের সাম্রাজ্যবাদী আচরণের প্রভাবে বাংলাদেশসহ অন্যান্য প্রতিবেশী দেশগুলোয় ভারতবিদ্বেষী মনোভাব দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। ভারতের প্রতিবেশী দেশগুলো পারতপক্ষে ধর্মনিরপেক্ষ। ভারতের উগ্রবাদী আচরণের বিপরীতে প্রতিবেশী বিভিন্ন দেশ সংখ্যালঘুদের প্রতি যে সহনশীলতা দেখিয়েছে, বারবার তা এক কথায় বিরল।
বর্তমানে ক্ষমতায় থাকা বিজেপিপন্থিরা বারংবার সাম্প্রদায়িক উসকানি দিয়ে থাকে এবং এর মাধ্যমে রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিল করে। ভারতীয় উগ্রবাদী রাজনীতির উত্থান সম্পর্কে জানার জন্য সেখানকার বেশ কয়েকটি সাম্প্রতিক নির্বাচনের ফলাফলের দিকে লক্ষ করা যেতে পারে। ২০১৬ সালের পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনে যেখানে বিজেপির আসনসংখ্যা ছিল মাত্র তিনটি, তার ঠিক পাঁচ বছর পর ২০২১ সালের পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির প্রাপ্ত আসনসংখ্যা ছিল ৭৭। এখান থেকেই ভারতে উগ্রবাদী রাজনীতির উত্থান সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যায়।
উগ্রবাদীরা শুধু রাজনীতিতে পর্যন্ত সীমাবদ্ধ থাকেনি, তারা মিডিয়া ও সিনেমা সেক্টরেও নিজেদের ছাপ স্পষ্ট করেছে। ভারতের বেশ কিছু টিভি চ্যানেল রয়েছে, যারা প্রতিবেশী দেশ সম্পর্কে প্রতিনিয়ত বিরূপ মন্তব্য করে থাকে, যা আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রেও বড় ধরনের অন্তরায় হিসেবে কাজ করে। এর উদাহরণ হিসেবে সম্প্রতি বাংলাদেশ নিয়ে ভারতীয় একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলের চালানো মিথ্যা ও বানোয়াট উপস্থাপনা এই দুই দেশের জনগণের ভেতরে চরম অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। এ ছাড়া ভারতের অভ্যন্তরে শান্তিপূর্ণভাবে থাকা রাজ্যগুলোয়ও উগ্রবাদীরা প্রবেশ করেছে এবং শান্তি বিনষ্ট করেছে। কেরালার মতো একটি শান্তিপূর্ণ রাজ্যে উগ্রবাদ অনুপ্রবেশ করানোর জন্য দ্য কেরালা স্টোরির মতো একটি উসকানিমূলক সিনেমা মুক্তি দেওয়া হয়েছে।
বেশ কয়েক বছর আগে একটি ভিডিওতে এক কলেজপড়ুয়া মেয়েকে প্রায় অর্ধশতাধিক গেরুয়া পতাকা-পরিহিত যুবকদের দ্বারা সাম্প্রদায়িক আক্রমণের শিকার হতে দেখা গিয়েছিল। এ ছাড়া ২০২২ সালে ভারতের ক্ষমতাসীন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেত্রী নূপুর শার্মা ইসলাম নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করেছিলেন। একটি ক্ষমতাসীন দলের কেন্দ্রীয় নেত্রীর এ ধরনের বিরূপ মন্তব্য থেকে সে দেশের মুসলিমদের শোচনীয় অবস্থা সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যায়। এ ছাড়া অমিত শাহসহ বিজেপির বেশ কয়েকজন নেতা বিভিন্ন সময় প্রতিবেশী দেশ নিয়েও বিরূপ মন্তব্য করেছেন। ভারতের চরমপন্থি নীতির কারণে এশিয়া অঞ্চলে এর গ্রহণযোগ্যতা দিন দিন তলানিতে গিয়ে ঠেকছে। ভারতের ‘প্রতিবেশীপ্রধান নীতি’ ব্যর্থ হওয়ার পেছনে এর প্রভাব রয়েছে। এই নীতি ব্যর্থ হওয়ার ফলে বিশ্ব রাজনীতিতে ভারতের প্রভাবও কমতির দিকে যাচ্ছে।
অনেক বছর আগে থেকেই ভারতে সংখ্যালঘু মুসলিম সম্প্রদায়ের ওপর বর্বর হামলা চালিয়ে আসছে কট্টর হিন্দুত্ববাদীরা। কিছুদিন পরপরই এই ধরনের ঘটনা ঘটে এবং বাংলাদেশসহ অন্যান্য প্রতিবেশী রাষ্ট্র এসব উগ্রবাদী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে আসছে। কিন্তু এসব প্রতিবাদের ফলে কোনো কিছু পরিবর্তন তো হয়নি, বরং রাজনীতি থেকে শুরু করে সব জায়গায় কট্টরপন্থি হিন্দুদের প্রভাব বেড়েই চলেছে। কট্টরপন্থি হিন্দুরা যত শক্তিশালী হবে এবং তাদের প্রভাব যত বাড়বে, মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষের জন্য ভারত তত বেশি অনিরাপদ হয়ে পড়বে। এর প্রভাবে সংখ্যালঘু মুসলিমদের ওপর হামলার পরিমাণও তত বাড়বে। ভারতের কট্টরপন্থি হিন্দুরা ‘অখণ্ড ভারত’-এর স্বপ্ন দেখে। এমন এক ভারত যেটি শুধু হিন্দুদের রাষ্ট্র হবে। তাদের এই লক্ষ্য পূরণের উদ্দেশ্যেই তারা বিভিন্ন সময় মসজিদ থেকে সব শুরু করে সব ধরনের ধর্মীয় উপাসনালয় সামান্য ইস্যুতেই ভেঙে ফেলে।
সাম্প্রতিক বছরগুলোয় ভারতে যেভাবে উগ্রবাদিতা বৃদ্ধি পেয়েছে, তা খুবই উদ্বেগজনক। এভাবে চলতে থাকলে একসময় সেখানকার সংখ্যালঘুদের অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়ে যাবে। এই উগ্রবাদিতার ছাপ পড়েছে মিডিয়া থেকে শুরু করে সিনেমায় পর্যন্ত। ক্ষমতাসীন দলের পৃষ্ঠপোষকতায় চলছে এসব উগ্রবাদিতা। বৃহৎ হিন্দু জনগোষ্ঠীর ভেতরে সংখ্যালঘু মুসলিম জনগোষ্ঠীর মানুষের নিরাপত্তা প্রকৃত অর্থে নির্ভর করছে প্রতিবেশী হিন্দু জনগোষ্ঠীর মানুষ কতটা উদার ও কতটা কট্টর পন্থাবর্জিত তার ওপর। বর্তমানে এই উগ্রবাদিতা থেকে ভারতবর্ষকে রক্ষা করার একমাত্র উপায় হলো জনসচেতনতা। জনগণ ভারতের সংবিধানে উল্লিখিত ‘ধর্মনিরপেক্ষতা’ সম্পর্কে সচেতন হয়েই নিজেদের দেশকে এসব উগ্রবাদের হাত থেকে রক্ষা করতে পারে। এ ছাড়া ভারতের প্রতিবেশী দেশগুলোকে ভারতে চলমান সংখ্যালঘু নির্যাতনের বিরুদ্ধে সরব ভূমিকা গ্রহণ করতে হবে।
লেখক : শিক্ষার্থী আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশের তুলনায় ভারতে সংখ্যালঘু নির্যাতনের হার অনেক বেশি। ভারত সাংবিধানিকভাবে একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র হলেও হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠ এই দেশটিতে বাস্তবে ধর্মীয় সহিষ্ণুতা অনেক কম। আবার অন্যান্য সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে ততটা সহিংসতা দেখা যায় না, ঠিক যতটা মুসলিমদের বিপক্ষে দেখা যায়। ভারতের মুসলিমরা বরাবরই উগ্র হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলোর টার্গেটে পরিণত হয়েছে, যা নিয়ে ভারতের সাধারণ হিন্দু নাগরিকরাও বেশ চিন্তিত।
নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) গত ১১ বছরের শাসনামলে ভারতে অন্যান্য সময়ের তুলনায় বেশি মাত্রায় সংখ্যালঘু নির্যাতিত হয়েছে। বিজেপি হিন্দু ধর্মকে উগ্রতার সঙ্গে সংযোগ ঘটিয়ে নিজেদের রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিল করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। বিজেপির শীর্ষস্থানীয়দের বিভিন্ন সময়ের ইসলামবিদ্বেষী বক্তব্যের মাধ্যমে বোঝা যায়, তাদের রাজনীতির তুরুপের তাস ইসলামবিদ্বেষ।
বিজেপির শাসনামলে বিভিন্ন ঐতিহাসিক ইসলামিক স্থাপনা ও মুসলিমদের বাড়িঘর বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়ার ঘটনা অহরহ ঘটেছে। এ ছাড়া মুসলিম নামে থাকা বিভিন্ন স্থাপনার নাম পরিবর্তন, গরুর মাংস রাখার কারণে মুসলিমদের ওপর হামলা করাসহ নানা ধরনের ইসলামবিদ্বেষী কার্যক্রম এখন ভারতের প্রতিদিনকার ঘটনা।
সম্প্রতি ভারতে হোলি উৎসব উদ্যাপনকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া বেশ কিছু ভিডিও এবং সংবাদে সংখ্যালঘু মুসলিমদের উগ্র-হিন্দুত্ববাদী আক্রমণের শিকার হতে দেখা গেছে। ভারতের মতো সাংবিধানিকভাবে ধর্মনিরপেক্ষ ঘোষিত একটি দেশে এ ধরনের উগ্রবাদী হামলা ভারত এবং এর আশেপাশের দেশগুলোয় বেশ হতাশা ও উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে। এর প্রভাবে আশেপাশের দেশগুলোয় সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বাধার আশঙ্কাও করা হচ্ছে।
ভারতের সাম্রাজ্যবাদী আচরণের প্রভাবে বাংলাদেশসহ অন্যান্য প্রতিবেশী দেশগুলোয় ভারতবিদ্বেষী মনোভাব দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। ভারতের প্রতিবেশী দেশগুলো পারতপক্ষে ধর্মনিরপেক্ষ। ভারতের উগ্রবাদী আচরণের বিপরীতে প্রতিবেশী বিভিন্ন দেশ সংখ্যালঘুদের প্রতি যে সহনশীলতা দেখিয়েছে, বারবার তা এক কথায় বিরল।
বর্তমানে ক্ষমতায় থাকা বিজেপিপন্থিরা বারংবার সাম্প্রদায়িক উসকানি দিয়ে থাকে এবং এর মাধ্যমে রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিল করে। ভারতীয় উগ্রবাদী রাজনীতির উত্থান সম্পর্কে জানার জন্য সেখানকার বেশ কয়েকটি সাম্প্রতিক নির্বাচনের ফলাফলের দিকে লক্ষ করা যেতে পারে। ২০১৬ সালের পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনে যেখানে বিজেপির আসনসংখ্যা ছিল মাত্র তিনটি, তার ঠিক পাঁচ বছর পর ২০২১ সালের পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির প্রাপ্ত আসনসংখ্যা ছিল ৭৭। এখান থেকেই ভারতে উগ্রবাদী রাজনীতির উত্থান সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যায়।
উগ্রবাদীরা শুধু রাজনীতিতে পর্যন্ত সীমাবদ্ধ থাকেনি, তারা মিডিয়া ও সিনেমা সেক্টরেও নিজেদের ছাপ স্পষ্ট করেছে। ভারতের বেশ কিছু টিভি চ্যানেল রয়েছে, যারা প্রতিবেশী দেশ সম্পর্কে প্রতিনিয়ত বিরূপ মন্তব্য করে থাকে, যা আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রেও বড় ধরনের অন্তরায় হিসেবে কাজ করে। এর উদাহরণ হিসেবে সম্প্রতি বাংলাদেশ নিয়ে ভারতীয় একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলের চালানো মিথ্যা ও বানোয়াট উপস্থাপনা এই দুই দেশের জনগণের ভেতরে চরম অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। এ ছাড়া ভারতের অভ্যন্তরে শান্তিপূর্ণভাবে থাকা রাজ্যগুলোয়ও উগ্রবাদীরা প্রবেশ করেছে এবং শান্তি বিনষ্ট করেছে। কেরালার মতো একটি শান্তিপূর্ণ রাজ্যে উগ্রবাদ অনুপ্রবেশ করানোর জন্য দ্য কেরালা স্টোরির মতো একটি উসকানিমূলক সিনেমা মুক্তি দেওয়া হয়েছে।
বেশ কয়েক বছর আগে একটি ভিডিওতে এক কলেজপড়ুয়া মেয়েকে প্রায় অর্ধশতাধিক গেরুয়া পতাকা-পরিহিত যুবকদের দ্বারা সাম্প্রদায়িক আক্রমণের শিকার হতে দেখা গিয়েছিল। এ ছাড়া ২০২২ সালে ভারতের ক্ষমতাসীন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেত্রী নূপুর শার্মা ইসলাম নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করেছিলেন। একটি ক্ষমতাসীন দলের কেন্দ্রীয় নেত্রীর এ ধরনের বিরূপ মন্তব্য থেকে সে দেশের মুসলিমদের শোচনীয় অবস্থা সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যায়। এ ছাড়া অমিত শাহসহ বিজেপির বেশ কয়েকজন নেতা বিভিন্ন সময় প্রতিবেশী দেশ নিয়েও বিরূপ মন্তব্য করেছেন। ভারতের চরমপন্থি নীতির কারণে এশিয়া অঞ্চলে এর গ্রহণযোগ্যতা দিন দিন তলানিতে গিয়ে ঠেকছে। ভারতের ‘প্রতিবেশীপ্রধান নীতি’ ব্যর্থ হওয়ার পেছনে এর প্রভাব রয়েছে। এই নীতি ব্যর্থ হওয়ার ফলে বিশ্ব রাজনীতিতে ভারতের প্রভাবও কমতির দিকে যাচ্ছে।
অনেক বছর আগে থেকেই ভারতে সংখ্যালঘু মুসলিম সম্প্রদায়ের ওপর বর্বর হামলা চালিয়ে আসছে কট্টর হিন্দুত্ববাদীরা। কিছুদিন পরপরই এই ধরনের ঘটনা ঘটে এবং বাংলাদেশসহ অন্যান্য প্রতিবেশী রাষ্ট্র এসব উগ্রবাদী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে আসছে। কিন্তু এসব প্রতিবাদের ফলে কোনো কিছু পরিবর্তন তো হয়নি, বরং রাজনীতি থেকে শুরু করে সব জায়গায় কট্টরপন্থি হিন্দুদের প্রভাব বেড়েই চলেছে। কট্টরপন্থি হিন্দুরা যত শক্তিশালী হবে এবং তাদের প্রভাব যত বাড়বে, মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষের জন্য ভারত তত বেশি অনিরাপদ হয়ে পড়বে। এর প্রভাবে সংখ্যালঘু মুসলিমদের ওপর হামলার পরিমাণও তত বাড়বে। ভারতের কট্টরপন্থি হিন্দুরা ‘অখণ্ড ভারত’-এর স্বপ্ন দেখে। এমন এক ভারত যেটি শুধু হিন্দুদের রাষ্ট্র হবে। তাদের এই লক্ষ্য পূরণের উদ্দেশ্যেই তারা বিভিন্ন সময় মসজিদ থেকে সব শুরু করে সব ধরনের ধর্মীয় উপাসনালয় সামান্য ইস্যুতেই ভেঙে ফেলে।
সাম্প্রতিক বছরগুলোয় ভারতে যেভাবে উগ্রবাদিতা বৃদ্ধি পেয়েছে, তা খুবই উদ্বেগজনক। এভাবে চলতে থাকলে একসময় সেখানকার সংখ্যালঘুদের অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়ে যাবে। এই উগ্রবাদিতার ছাপ পড়েছে মিডিয়া থেকে শুরু করে সিনেমায় পর্যন্ত। ক্ষমতাসীন দলের পৃষ্ঠপোষকতায় চলছে এসব উগ্রবাদিতা। বৃহৎ হিন্দু জনগোষ্ঠীর ভেতরে সংখ্যালঘু মুসলিম জনগোষ্ঠীর মানুষের নিরাপত্তা প্রকৃত অর্থে নির্ভর করছে প্রতিবেশী হিন্দু জনগোষ্ঠীর মানুষ কতটা উদার ও কতটা কট্টর পন্থাবর্জিত তার ওপর। বর্তমানে এই উগ্রবাদিতা থেকে ভারতবর্ষকে রক্ষা করার একমাত্র উপায় হলো জনসচেতনতা। জনগণ ভারতের সংবিধানে উল্লিখিত ‘ধর্মনিরপেক্ষতা’ সম্পর্কে সচেতন হয়েই নিজেদের দেশকে এসব উগ্রবাদের হাত থেকে রক্ষা করতে পারে। এ ছাড়া ভারতের প্রতিবেশী দেশগুলোকে ভারতে চলমান সংখ্যালঘু নির্যাতনের বিরুদ্ধে সরব ভূমিকা গ্রহণ করতে হবে।
লেখক : শিক্ষার্থী আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
এই বছর অর্থনীতির নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়েছে উদ্ভাবন ও সৃজনশীল ধ্বংসের প্রক্রিয়া (creative destruction) কীভাবে দীর্ঘমেয়াদি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির মূল চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করে সেই গবেষণার ওপর। নতুন প্রযুক্তি ও ধারণা পুরোনো ব্যবস্থাকে প্রতিস্থাপন করে সমাজ যখন পরিবর্তনের জন্য উন্মুক্ত থাকে, তখনই টেক
১৮ ঘণ্টা আগে‘মনের তালা খুলল কে, চাবিওয়ালা, চাবিওয়ালা!’ প্রখ্যাত শিল্পী রুনা লায়লার সেই সুরেলা প্রশ্নের উত্তর আজও খুঁজে বেড়াচ্ছি! তবে ব্যক্তিগত জীবনে নয়, রাষ্ট্রীয় জীবনে। এই রাষ্ট্রের জীবনেও একটা বিশেষ তালা আছে, আর তার নাম আর্টিকেল ৭০! এই তালা লাগানো হয়েছিল সেই সব মাননীয়র জন্য, যাদের মধ্যে ‘ছাগলীয়’ প্রবৃত্তি রয়ে
১৮ ঘণ্টা আগেভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ইসরাইলের যুদ্ধাপরাধী প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে প্রায়ই তার পরম বন্ধু বলে বেশ গৌরবের সঙ্গে প্রচার করে থাকেন। ভিন্ন দেশের এ দুই রাজনীতিবিদের প্রগাঢ় বন্ধুত্বের মূল সূত্র হলো মুসলমানদের প্রতি তাদের তীব্র ঘৃণা। বর্তমান বিশ্বে ইসলামোফোবিয়ায় আক্রান্ত শীর্ষ দুটি
১৮ ঘণ্টা আগেগাজার ভবিষ্যৎ নিয়ে যখন হতাশা চরমে, তখনই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা করেছেন এক নতুন ‘২০ দফার শান্তি পরিকল্পনা’। সেখানে তিনি নিজেকে বসিয়েছেন একটি তথাকথিত ‘বোর্ড অব পিস’-এর চেয়ারম্যান হিসেবে।
২ দিন আগে