রকীবুল হক
পতিত আওয়ামী আমলে ভয়াবহ নিপীড়নের শিকার হয়েছেন দেশের জনপ্রিয় আলেম ও ধর্মীয় বক্তা মুফতি মাহমুদুল হাসান গুনবী। অন্যায়ভাবে তাকে আটকের পর ১০ দিন গুম রেখে হাত-মুখ বেঁধে নির্যাতন চালায় র্যাব। এ সময় ক্রসফায়ারের হুমকি দিয়ে মৃত্যুর প্রস্তুতি নিতে তিনবার কালেমা পড়ানো হয় তাকে। পরে গ্রেপ্তার-নাটক ও মিথ্যা অভিযোগে মামলা দিয়ে নেওয়া হয় সিটিটিসির রিমান্ডে। সেখানে ছিলেন সিটিটিসির এডিসি ইমরান ও আইও মিজান। বেদম পিটুনি আর কারেন্টের শকে বেহুঁশ হয়ে যান তিনি। জেলের মধ্যে হত্যাচেষ্টাসহ নানা ধরনের নির্যাতনের শিকার হন ঢাকার মাদরাসাতু দাওয়াতিল ইসলামের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক মাহমুদুল হাসান গুনবী।
২০২১ সালের ৬ জুলাই সকাল সাড়ে ৭টার দিকে সাদা পোশাকধারী র্যাব সদস্যরা মুফতি মাহমুদুল হাসান গুনবীকে আটক করেন। এ সময় নোয়াখালীর সোনাপুরে এক ওস্তাদের বাসায় বেড়াতে গিয়েছিলেন। সেই বাড়িতে হাজির হন র্যাব সদস্যরা। তার পরিচয় নিশ্চিত হয়ে তাদের সঙ্গে যেতে বলেন। কারণ জানতে চাইলে তারা গালাগাল শুরু করেন আর ক্রসফায়ারে দেওয়ার হুমকি দেন। পরিস্থিতি খারাপ দেখে তিনি তাদের সঙ্গে যান। গাড়িতে উঠিয়েই কালো কাপড় দিয়ে চোখ-মুখ ঢেকে ফেলেন। হাতে লাগানো হয় হ্যান্ডকাফ। দীর্ঘক্ষণ গাড়ি চালিয়ে নেওয়া হয় ঢাকার উত্তরায় র্যাব-১-এর কার্যালয়ে। সেখানে ১০ দিন গুম রেখে মিথ্যা স্বীকারোক্তি আদায়ের নামে চলে নির্যাতন।
র্যাব কার্যালয়ে নিয়েই একটি রিভলভিং চেয়ারে বসিয়ে ব্যক্তিগত ও পারিবারিক সব তথ্য নেওয়া। এ সময়ও তার হাত-চোখ বাঁধা ছিল। রাতে আরেকটি রুমে নিয়ে তার পাঞ্জাবি-পাজামা খুলে লুঙ্গি-গেঞ্জি পরতে দেওয়া হয়। রাত আনুমানিক সাড়ে ১০টার দিকে পাশে আরেকটি এসি রুমে নিয়ে যান তারা। সেখানে দুজন জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন। এ সময় একদিকে হুমকি আবার আপসমূলক কথা বলেন। তারা বলেন, আপনি তো আইএসের লোক, আপনি পাকিস্তানের ফজলুর রহমানের লোক, আপনি কয়েকবার পাকিস্তান গিয়েছেন, আপনি তালেবানের সঙ্গে জড়িত, কয়েকবার আফগানিস্তানে গিয়েছেন।
জবাবে মাহমুদুল হাসান গুনবী জানান তিনি এসবে জড়িত নন। যেসব জায়গার কথা বলা হচ্ছে, সেসব জায়গায় তিনি কখনো যাননি। এরপর তারা নানা হুমকি দিতে থাকেন। একপর্যায়ে তারা বলেন, তুমি জামায়াতের নায়েবে আমির ডা. আব্দুল্লাহ মো. তাহেরের সঙ্গে সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্র করছো, হজে গিয়ে জঙ্গিগোষ্ঠীর সঙ্গে যোগাযোগ করেছো। এসবের উত্তর ‘না’ জানালে তারা ওইদিনের মতো জিজ্ঞাসাবাদ শেষ করেন। পরে তাকে নিয়ে আরেকটি রুমে রাখা হয়। যে রুমটি মাত্র ১০ পায়ের সমান লম্বা এবং ছয় পায়ের মাপে চওড়া।
সেখানে হ্যান্ডকাফ পরা অবস্থাতেই নামাজ পড়তে হয় তাকে। কিছু বললেই মারধর ও হুমকি দেওয়া হয়। পাশের রুমে উচ্চ শব্দে বাজানো হয় গান। শুরু হয় আরেক দফা জিজ্ঞাসাবাদ। এ সময় বলা হয়, বয়ানে একমাত্র সঠিক ধর্ম ইসলাম কেন বলেছিস? এ কথা বলতে পারবি না। তোকে বলতে হবে সব ধর্মই সঠিক। এতে রাজি না হওয়ায় শুরু হয় গজারি লাঠি দিয়ে মার আর গালাগাল। বলা হয়, তুই কোন জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে জড়িত? জিজ্ঞাসাবাদকারীরা বলেন, ৫০ জন অথবা ৩০ জনের নাম বলতে। শেষ পর্যন্ত বলেন, অন্তত একজনের নাম বল, যে তোকে সরকারের বিরুদ্ধে নামিয়েছে।
এ সময় তার বিভিন্ন ওয়াজ ও খুতবার সময় দেওয়া বক্তব্যের দু-এক মিনিটের বক্তব্য শোনানো হয়। এ নিয়ে প্রশ্ন করেন, ব্যাখ্যায় সন্তুষ্ট না হয়ে আবার মারধর শুরু করেন। একপর্যায়ে হাতে গামছা বেঁধে ঝুলিয়ে মারা হয়। একপর্যায়ে দুই পায়ের আঙুলে কারেন্টের শক দেওয়া হয়। এতে শরীরে ঝাঁকুনি দিয়ে জ্ঞান হারিয়ে পড়ে যান তিনি। জ্ঞান ফিরে দেখেন একটি রুমে রাখা হয়েছে তাকে। এ সময় পানি চাইলে দেওয়া হয়নি। বরং বলা হয়, তোর আল্লাহ তো তোকে বাঁচাচ্ছে না। এ সময় তাকে নাপা ট্যাবলেট দেওয়া হয়।
এভাবে টানা ১০ দিন সেখানে গুম রেখে দুই বা তিন দিন পরপর জিজ্ঞাসাবাদের নামে চলে নির্যাতন। প্রতিদিনই একই ধরনের প্রশ্ন করা হলেও তিনি একই জবাব দেন। তাকে বলা হয়, আবু ত্বহা আদনান সব বলে দিছে, তাকে আমরা ছেড়ে দিয়েছি। তুই সব স্বীকার করলে তোকেও ছেড়ে দেব। এই জিজ্ঞাসাবাদে কোনো জবাব পছন্দ না হওয়ায় তাকে ক্রসফায়ারে দিতে শেষদিন হিসেবে কালেমাও পড়ান। এভাবে তিন দিন কালেমা পড়ানো হয় তাকে।
গুমের দশম দিনে ১৬ জুলাই রাতে তাকে জঙ্গি হিসেবে গ্রেপ্তারের নাটক সাজানো হয়। রাত ১১টা ৫০ মিনিটের দিকে তাকে মিরপুর শাহআলীতে র্যাব-৪-এর কাছে হস্তান্তর করা হয়। উত্তরা থেকে তাকে হাত-চোখ বাঁধা অবস্থায় নিয়ে বেড়িবাঁধ এলাকায় আগে থেকেই অপেক্ষমাণ সাদা পোশাকধারী আরেকটি গ্রুপের কাছে তুলে দেয়।
তামান্না পার্কের বিপরীতে চায়না ফ্যাক্টরি নামে পরিত্যক্ত একটি ভবনের কাছে ওই গ্রুপ আবার পোশাকধারী আরেক গ্রুপ র্যাবের কাছে তাকে হস্তান্তর করে। এ সময় তাকে গাড়িতে তুলে হ্যান্ডকাফ ও চোখের কাপড় খুলে দিয়ে পিঠে একটি স্কুলব্যাগ দেওয়া হয়। সেটি নিতে রাজি না হলে অকথ্য গালাগাল করা হয়। এ সময় তার আগের পাজামা-পাঞ্জাবি পরতে বলা হয়। পরে তাকে নিয়ে তামান্না ওয়ার্ল্ড ফ্যামিলি পার্কের বয়স্ক একজন দারোয়ানকে নিয়ে এসে একটি কাগজে তার স্বাক্ষর নিতে চায়। এতে লেখা ছিল সেখান থেকে একজন জঙ্গি পালিয়ে যাওয়ার সময় ধরা হয়েছে। দারোয়ান স্বাক্ষর দিতে অস্বীকার করলে তাকে ব্যাপক মারধর ও গালাগাল করা হয়। একপর্যায়ে তিনি স্বাক্ষর দিতে বাধ্য হন। এর আগে আরো দুজনের স্বাক্ষর নেন তারা।
সেখান থেকে শাহআলীতে র্যাব-৪ অফিসে নিয়ে রাতেই প্রেস ব্রিফিং করা হয়। এ সময় তার সামনে কিছু বই রেখে ছবি তোলা হয়। হাঁটিয়ে ভিডিও করা হয়। এ সময় তাকে কোনো কথা বলতে দেওয়া হয়নি। পরে পাশে দুর্গন্ধময় একটি রুমে রাখা হয়। সেখানে র্যাবের লোকজন এসে মারধরের কারণে অসুস্থ অবস্থা দেখে আর কিছুই করেননি।
পরের দিন সকালে তাকে নেওয়া হয় কারওয়ান বাজার র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে। তাকে দুটি মাস্ক পরিয়ে কোনো কথা বলতে নিষেধ করা হয়। সাংবাদিকরা প্রশ্ন করতে চাইলেও কথা বলতে দেওয়া হয়নি। শুধু ফটোসেশন করে কিছুক্ষণ সেখানে রেখে বিকালে আবার শাহআলী থানায় সোপর্দ করা হয়। সেখানে উগ্রবাদে উসকানিদাতার অভিযোগ-সংক্রান্ত একটি মামলা দেওয়া হয়। পরে আদালত তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে। ১০ দিন পর মাহমুদুল হাসান গুনবীর সন্ধান জানতে পারে তার পরিবার। খবর পেয়ে আদালতে তার এক ভাইয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়।
নোয়াখালী থেকে আটক ও গুম হওয়ার পর তার কোনো সন্ধান জানতে পারেনি তার পরিবার। এ সময় তারা স্থানীয় থানা ও র্যাব অফিসে খোঁজ করেও কোনো তথ্য পায়নি। মাইজদী ও চৌদ্দগ্রাম থানায় জিডি করার চেষ্টা করা হলেও নেওয়া হয়নি। উল্টো এসব থানার পুলিশ তার পরিবারের লোকদের ভয়ভীতি দেখায়। একপর্যায়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপিও দেন পরিবারের সদস্যরা।
নোয়াখালীতে হেফাজতে ইসলাম ও ওলামাদের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলন করা হয়। কিন্তু এর পরও তার কোনো সন্ধান দেওয়া হয়নি। অথচ গুম থাকা অবস্থায় প্রথম আলো এবং ডেইলি স্টার পত্রিকায় গুনবী আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নজরদারিতে আছে বলে খবর প্রকাশ করা হয়।
এদিকে শাহআলী থানা থেকে তাকে রিমান্ডে নিতে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন আসেন। একপর্যায়ে সিটিটিসি তাকে হাত-চোখ বেঁধে তিন দিনের রিমান্ডে নেয়। সেখানে চারতলার একটি টর্চার রুমে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন এডিসি ইমরান। তাকে দু-একটা প্রশ্ন করেই অশ্লীল গালাগাল আর বেদম মারধর শুরু করেন। তাকে বলা হয়, হেফাজতের সঙ্গে তোর সম্পর্ক কী? মদের বিরুদ্ধে ওয়াজ করিস কেন? পর্দার কথা বলিস কেন? মোদির বিরুদ্ধে আন্দোলন করিস কেন? জুনায়েদ বাবুনগরীর কাছে বাইয়াত হইছিস কেন? হারুন ইজহার, উসামার সঙ্গে কী বৈঠক হয়েছে, এ ধরনের নানা প্রশ্ন করে নির্যাতন চালানো হয়। এডিসি ইমরান নিজে মারধর করে ক্লান্ত হয়ে তার লোকদের পেটাতে বলেন। দ্বিতীয় দিনেও একইভাবে নির্যাতন চালানো হয়।
এভাবে দুই মামলায় (শেরেবাংলা নগর থানার একটি মামলায় জড়ানো হয়) তিন দফায় ৯ দিন রিমান্ডে নেয় সিটিটিসি (দাউদকান্দিতে ২০১৯ সালের একটি মামলায় জড়ানো হলেও তাতে রিমান্ডে নেওয়া হয়নি)। এর মধ্যে সাত দিন ধরে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের নামে পেটানো হয়। এ সময় সিটিটিসির প্রধান আসাদুজ্জামান দুদিন নিজেই তাকে পেটান। এমনকি মেরে ফেলার হুমকিও দেওয়া হয়।
ঘুরেফিরে একই প্রশ্ন করা হলেও তিনি একই উত্তর দেন। একপর্যায়ে তার কাছ থেকে সাজানো মিথ্যা স্বীকারোক্তিতে সই দিতে চাপ দেন। আইও কাজী মিজানুর রহমানও ভয়ংকর আচরণ করেন। একপর্যায়ে স্ত্রী-সন্তানের ক্ষতির ভয় দেখালে ‘উগ্রবাদে উসকানি দেওয়ার’ স্বীকারোক্তিতে সই করেন তিনি। আদালতের বিচারকও বলেন, স্বীকারোক্তি না দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। এর আগে রিমান্ডের শেষ দিনে এডিসি ইমরান তাকে সরকারের কথা শোনার পরামর্শ দেন আর মামলা প্রত্যাহারসহ নানা সহায়তার আশ্বাস দেন। কিন্তু সাড়া না পেয়ে জেলে পাঠান।
মুফতি মাহমুদুল হাসান গুনবী বলেন, জেলখানা ছিল আরেক টর্চারের জায়গা। সেখানে সাধারণ থেকে বড় মাপের অপরাধীদের যেসব সুবিধা আছে, হেফাজত বা আলেম-ওলামাদের জন্য তার কিছু নেই। ২৪ ঘণ্টা লকআপে বন্দি রাখা হতো। প্রায় দেড় বছর পর তিনি মোবাইলে কথা বলার সুযোগ পান। এ সময় পরিবারের কেউ সাক্ষাতে এলে তারা চরম ভোগান্তির মধ্যে পড়েছেন। একপর্যায়ে তিনি জেলখানায় অনশন করেন।
তিনি বলেন, অমুসলিমদের মধ্যে দাওয়াতি কাজকে উসিলা হিসেবে কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কারাগারের জেল সুপার সুব্রত কুমার পাল তার ওপর ব্যাপক টর্চার চালান। এক দিন কারারক্ষী, সুবেদার, জেলের সিআইডি, বন্দি-সন্ত্রাসীদের দিয়ে ব্যাপক নির্যাতন চালানো হয়। হাত-মুখ বেঁধে মারধর করা হয়। তিনি বলেন, তাকে মারধর, নির্যাতন ও জেলখানায় হত্যার চেষ্টা চালানো হয়। একপর্যায়ে তিনি চিৎকার শুরু করলে সাধারণ কারাবন্দিরা চলে এলে রক্ষা পান। পরের দিন তাকে কোর্টে নেওয়ার কথা থাকলেও নেওয়া হয়নি। নির্যাতনকারীদের কেউ কেউ তাকে মেরে ফেলার জন্য সুব্রত নির্দেশ দিয়েছিলেন বলে জানান।
৩২ মাস কারাভোগের পর ২০২৪ সালের ১ মার্চ জামিন পান তিনি। কিন্তু মুক্তির দিন জেলগেট থেকে আবার সিটিটিসির লোকরা ধরে নিয়ে চার দিন গুম রাখেন। সেখানে পরিবারের কাছে ৬ লাখ টাকা দাবি করেন আইও মিজান। একপর্যায়ে ১ লাখ টাকা ও বন্ডসই দিয়ে তাকে মুক্তি দেওয়া হয়।
মুক্তির পরও মুফতি মাহমুদুল হাসান গুনবীকে নানাভাবে হুমকি-ধমকি দেন গোয়েন্দা সদস্যরা। ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে হাসিনার পতনের পর পরিস্থিতি পাল্টে যায়। তিনি আবার সভা-সমাবেশে বক্তব্য রাখছেন।
পতিত আওয়ামী আমলে ভয়াবহ নিপীড়নের শিকার হয়েছেন দেশের জনপ্রিয় আলেম ও ধর্মীয় বক্তা মুফতি মাহমুদুল হাসান গুনবী। অন্যায়ভাবে তাকে আটকের পর ১০ দিন গুম রেখে হাত-মুখ বেঁধে নির্যাতন চালায় র্যাব। এ সময় ক্রসফায়ারের হুমকি দিয়ে মৃত্যুর প্রস্তুতি নিতে তিনবার কালেমা পড়ানো হয় তাকে। পরে গ্রেপ্তার-নাটক ও মিথ্যা অভিযোগে মামলা দিয়ে নেওয়া হয় সিটিটিসির রিমান্ডে। সেখানে ছিলেন সিটিটিসির এডিসি ইমরান ও আইও মিজান। বেদম পিটুনি আর কারেন্টের শকে বেহুঁশ হয়ে যান তিনি। জেলের মধ্যে হত্যাচেষ্টাসহ নানা ধরনের নির্যাতনের শিকার হন ঢাকার মাদরাসাতু দাওয়াতিল ইসলামের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক মাহমুদুল হাসান গুনবী।
২০২১ সালের ৬ জুলাই সকাল সাড়ে ৭টার দিকে সাদা পোশাকধারী র্যাব সদস্যরা মুফতি মাহমুদুল হাসান গুনবীকে আটক করেন। এ সময় নোয়াখালীর সোনাপুরে এক ওস্তাদের বাসায় বেড়াতে গিয়েছিলেন। সেই বাড়িতে হাজির হন র্যাব সদস্যরা। তার পরিচয় নিশ্চিত হয়ে তাদের সঙ্গে যেতে বলেন। কারণ জানতে চাইলে তারা গালাগাল শুরু করেন আর ক্রসফায়ারে দেওয়ার হুমকি দেন। পরিস্থিতি খারাপ দেখে তিনি তাদের সঙ্গে যান। গাড়িতে উঠিয়েই কালো কাপড় দিয়ে চোখ-মুখ ঢেকে ফেলেন। হাতে লাগানো হয় হ্যান্ডকাফ। দীর্ঘক্ষণ গাড়ি চালিয়ে নেওয়া হয় ঢাকার উত্তরায় র্যাব-১-এর কার্যালয়ে। সেখানে ১০ দিন গুম রেখে মিথ্যা স্বীকারোক্তি আদায়ের নামে চলে নির্যাতন।
র্যাব কার্যালয়ে নিয়েই একটি রিভলভিং চেয়ারে বসিয়ে ব্যক্তিগত ও পারিবারিক সব তথ্য নেওয়া। এ সময়ও তার হাত-চোখ বাঁধা ছিল। রাতে আরেকটি রুমে নিয়ে তার পাঞ্জাবি-পাজামা খুলে লুঙ্গি-গেঞ্জি পরতে দেওয়া হয়। রাত আনুমানিক সাড়ে ১০টার দিকে পাশে আরেকটি এসি রুমে নিয়ে যান তারা। সেখানে দুজন জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন। এ সময় একদিকে হুমকি আবার আপসমূলক কথা বলেন। তারা বলেন, আপনি তো আইএসের লোক, আপনি পাকিস্তানের ফজলুর রহমানের লোক, আপনি কয়েকবার পাকিস্তান গিয়েছেন, আপনি তালেবানের সঙ্গে জড়িত, কয়েকবার আফগানিস্তানে গিয়েছেন।
জবাবে মাহমুদুল হাসান গুনবী জানান তিনি এসবে জড়িত নন। যেসব জায়গার কথা বলা হচ্ছে, সেসব জায়গায় তিনি কখনো যাননি। এরপর তারা নানা হুমকি দিতে থাকেন। একপর্যায়ে তারা বলেন, তুমি জামায়াতের নায়েবে আমির ডা. আব্দুল্লাহ মো. তাহেরের সঙ্গে সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্র করছো, হজে গিয়ে জঙ্গিগোষ্ঠীর সঙ্গে যোগাযোগ করেছো। এসবের উত্তর ‘না’ জানালে তারা ওইদিনের মতো জিজ্ঞাসাবাদ শেষ করেন। পরে তাকে নিয়ে আরেকটি রুমে রাখা হয়। যে রুমটি মাত্র ১০ পায়ের সমান লম্বা এবং ছয় পায়ের মাপে চওড়া।
সেখানে হ্যান্ডকাফ পরা অবস্থাতেই নামাজ পড়তে হয় তাকে। কিছু বললেই মারধর ও হুমকি দেওয়া হয়। পাশের রুমে উচ্চ শব্দে বাজানো হয় গান। শুরু হয় আরেক দফা জিজ্ঞাসাবাদ। এ সময় বলা হয়, বয়ানে একমাত্র সঠিক ধর্ম ইসলাম কেন বলেছিস? এ কথা বলতে পারবি না। তোকে বলতে হবে সব ধর্মই সঠিক। এতে রাজি না হওয়ায় শুরু হয় গজারি লাঠি দিয়ে মার আর গালাগাল। বলা হয়, তুই কোন জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে জড়িত? জিজ্ঞাসাবাদকারীরা বলেন, ৫০ জন অথবা ৩০ জনের নাম বলতে। শেষ পর্যন্ত বলেন, অন্তত একজনের নাম বল, যে তোকে সরকারের বিরুদ্ধে নামিয়েছে।
এ সময় তার বিভিন্ন ওয়াজ ও খুতবার সময় দেওয়া বক্তব্যের দু-এক মিনিটের বক্তব্য শোনানো হয়। এ নিয়ে প্রশ্ন করেন, ব্যাখ্যায় সন্তুষ্ট না হয়ে আবার মারধর শুরু করেন। একপর্যায়ে হাতে গামছা বেঁধে ঝুলিয়ে মারা হয়। একপর্যায়ে দুই পায়ের আঙুলে কারেন্টের শক দেওয়া হয়। এতে শরীরে ঝাঁকুনি দিয়ে জ্ঞান হারিয়ে পড়ে যান তিনি। জ্ঞান ফিরে দেখেন একটি রুমে রাখা হয়েছে তাকে। এ সময় পানি চাইলে দেওয়া হয়নি। বরং বলা হয়, তোর আল্লাহ তো তোকে বাঁচাচ্ছে না। এ সময় তাকে নাপা ট্যাবলেট দেওয়া হয়।
এভাবে টানা ১০ দিন সেখানে গুম রেখে দুই বা তিন দিন পরপর জিজ্ঞাসাবাদের নামে চলে নির্যাতন। প্রতিদিনই একই ধরনের প্রশ্ন করা হলেও তিনি একই জবাব দেন। তাকে বলা হয়, আবু ত্বহা আদনান সব বলে দিছে, তাকে আমরা ছেড়ে দিয়েছি। তুই সব স্বীকার করলে তোকেও ছেড়ে দেব। এই জিজ্ঞাসাবাদে কোনো জবাব পছন্দ না হওয়ায় তাকে ক্রসফায়ারে দিতে শেষদিন হিসেবে কালেমাও পড়ান। এভাবে তিন দিন কালেমা পড়ানো হয় তাকে।
গুমের দশম দিনে ১৬ জুলাই রাতে তাকে জঙ্গি হিসেবে গ্রেপ্তারের নাটক সাজানো হয়। রাত ১১টা ৫০ মিনিটের দিকে তাকে মিরপুর শাহআলীতে র্যাব-৪-এর কাছে হস্তান্তর করা হয়। উত্তরা থেকে তাকে হাত-চোখ বাঁধা অবস্থায় নিয়ে বেড়িবাঁধ এলাকায় আগে থেকেই অপেক্ষমাণ সাদা পোশাকধারী আরেকটি গ্রুপের কাছে তুলে দেয়।
তামান্না পার্কের বিপরীতে চায়না ফ্যাক্টরি নামে পরিত্যক্ত একটি ভবনের কাছে ওই গ্রুপ আবার পোশাকধারী আরেক গ্রুপ র্যাবের কাছে তাকে হস্তান্তর করে। এ সময় তাকে গাড়িতে তুলে হ্যান্ডকাফ ও চোখের কাপড় খুলে দিয়ে পিঠে একটি স্কুলব্যাগ দেওয়া হয়। সেটি নিতে রাজি না হলে অকথ্য গালাগাল করা হয়। এ সময় তার আগের পাজামা-পাঞ্জাবি পরতে বলা হয়। পরে তাকে নিয়ে তামান্না ওয়ার্ল্ড ফ্যামিলি পার্কের বয়স্ক একজন দারোয়ানকে নিয়ে এসে একটি কাগজে তার স্বাক্ষর নিতে চায়। এতে লেখা ছিল সেখান থেকে একজন জঙ্গি পালিয়ে যাওয়ার সময় ধরা হয়েছে। দারোয়ান স্বাক্ষর দিতে অস্বীকার করলে তাকে ব্যাপক মারধর ও গালাগাল করা হয়। একপর্যায়ে তিনি স্বাক্ষর দিতে বাধ্য হন। এর আগে আরো দুজনের স্বাক্ষর নেন তারা।
সেখান থেকে শাহআলীতে র্যাব-৪ অফিসে নিয়ে রাতেই প্রেস ব্রিফিং করা হয়। এ সময় তার সামনে কিছু বই রেখে ছবি তোলা হয়। হাঁটিয়ে ভিডিও করা হয়। এ সময় তাকে কোনো কথা বলতে দেওয়া হয়নি। পরে পাশে দুর্গন্ধময় একটি রুমে রাখা হয়। সেখানে র্যাবের লোকজন এসে মারধরের কারণে অসুস্থ অবস্থা দেখে আর কিছুই করেননি।
পরের দিন সকালে তাকে নেওয়া হয় কারওয়ান বাজার র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে। তাকে দুটি মাস্ক পরিয়ে কোনো কথা বলতে নিষেধ করা হয়। সাংবাদিকরা প্রশ্ন করতে চাইলেও কথা বলতে দেওয়া হয়নি। শুধু ফটোসেশন করে কিছুক্ষণ সেখানে রেখে বিকালে আবার শাহআলী থানায় সোপর্দ করা হয়। সেখানে উগ্রবাদে উসকানিদাতার অভিযোগ-সংক্রান্ত একটি মামলা দেওয়া হয়। পরে আদালত তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে। ১০ দিন পর মাহমুদুল হাসান গুনবীর সন্ধান জানতে পারে তার পরিবার। খবর পেয়ে আদালতে তার এক ভাইয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়।
নোয়াখালী থেকে আটক ও গুম হওয়ার পর তার কোনো সন্ধান জানতে পারেনি তার পরিবার। এ সময় তারা স্থানীয় থানা ও র্যাব অফিসে খোঁজ করেও কোনো তথ্য পায়নি। মাইজদী ও চৌদ্দগ্রাম থানায় জিডি করার চেষ্টা করা হলেও নেওয়া হয়নি। উল্টো এসব থানার পুলিশ তার পরিবারের লোকদের ভয়ভীতি দেখায়। একপর্যায়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপিও দেন পরিবারের সদস্যরা।
নোয়াখালীতে হেফাজতে ইসলাম ও ওলামাদের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলন করা হয়। কিন্তু এর পরও তার কোনো সন্ধান দেওয়া হয়নি। অথচ গুম থাকা অবস্থায় প্রথম আলো এবং ডেইলি স্টার পত্রিকায় গুনবী আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নজরদারিতে আছে বলে খবর প্রকাশ করা হয়।
এদিকে শাহআলী থানা থেকে তাকে রিমান্ডে নিতে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন আসেন। একপর্যায়ে সিটিটিসি তাকে হাত-চোখ বেঁধে তিন দিনের রিমান্ডে নেয়। সেখানে চারতলার একটি টর্চার রুমে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন এডিসি ইমরান। তাকে দু-একটা প্রশ্ন করেই অশ্লীল গালাগাল আর বেদম মারধর শুরু করেন। তাকে বলা হয়, হেফাজতের সঙ্গে তোর সম্পর্ক কী? মদের বিরুদ্ধে ওয়াজ করিস কেন? পর্দার কথা বলিস কেন? মোদির বিরুদ্ধে আন্দোলন করিস কেন? জুনায়েদ বাবুনগরীর কাছে বাইয়াত হইছিস কেন? হারুন ইজহার, উসামার সঙ্গে কী বৈঠক হয়েছে, এ ধরনের নানা প্রশ্ন করে নির্যাতন চালানো হয়। এডিসি ইমরান নিজে মারধর করে ক্লান্ত হয়ে তার লোকদের পেটাতে বলেন। দ্বিতীয় দিনেও একইভাবে নির্যাতন চালানো হয়।
এভাবে দুই মামলায় (শেরেবাংলা নগর থানার একটি মামলায় জড়ানো হয়) তিন দফায় ৯ দিন রিমান্ডে নেয় সিটিটিসি (দাউদকান্দিতে ২০১৯ সালের একটি মামলায় জড়ানো হলেও তাতে রিমান্ডে নেওয়া হয়নি)। এর মধ্যে সাত দিন ধরে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের নামে পেটানো হয়। এ সময় সিটিটিসির প্রধান আসাদুজ্জামান দুদিন নিজেই তাকে পেটান। এমনকি মেরে ফেলার হুমকিও দেওয়া হয়।
ঘুরেফিরে একই প্রশ্ন করা হলেও তিনি একই উত্তর দেন। একপর্যায়ে তার কাছ থেকে সাজানো মিথ্যা স্বীকারোক্তিতে সই দিতে চাপ দেন। আইও কাজী মিজানুর রহমানও ভয়ংকর আচরণ করেন। একপর্যায়ে স্ত্রী-সন্তানের ক্ষতির ভয় দেখালে ‘উগ্রবাদে উসকানি দেওয়ার’ স্বীকারোক্তিতে সই করেন তিনি। আদালতের বিচারকও বলেন, স্বীকারোক্তি না দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। এর আগে রিমান্ডের শেষ দিনে এডিসি ইমরান তাকে সরকারের কথা শোনার পরামর্শ দেন আর মামলা প্রত্যাহারসহ নানা সহায়তার আশ্বাস দেন। কিন্তু সাড়া না পেয়ে জেলে পাঠান।
মুফতি মাহমুদুল হাসান গুনবী বলেন, জেলখানা ছিল আরেক টর্চারের জায়গা। সেখানে সাধারণ থেকে বড় মাপের অপরাধীদের যেসব সুবিধা আছে, হেফাজত বা আলেম-ওলামাদের জন্য তার কিছু নেই। ২৪ ঘণ্টা লকআপে বন্দি রাখা হতো। প্রায় দেড় বছর পর তিনি মোবাইলে কথা বলার সুযোগ পান। এ সময় পরিবারের কেউ সাক্ষাতে এলে তারা চরম ভোগান্তির মধ্যে পড়েছেন। একপর্যায়ে তিনি জেলখানায় অনশন করেন।
তিনি বলেন, অমুসলিমদের মধ্যে দাওয়াতি কাজকে উসিলা হিসেবে কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কারাগারের জেল সুপার সুব্রত কুমার পাল তার ওপর ব্যাপক টর্চার চালান। এক দিন কারারক্ষী, সুবেদার, জেলের সিআইডি, বন্দি-সন্ত্রাসীদের দিয়ে ব্যাপক নির্যাতন চালানো হয়। হাত-মুখ বেঁধে মারধর করা হয়। তিনি বলেন, তাকে মারধর, নির্যাতন ও জেলখানায় হত্যার চেষ্টা চালানো হয়। একপর্যায়ে তিনি চিৎকার শুরু করলে সাধারণ কারাবন্দিরা চলে এলে রক্ষা পান। পরের দিন তাকে কোর্টে নেওয়ার কথা থাকলেও নেওয়া হয়নি। নির্যাতনকারীদের কেউ কেউ তাকে মেরে ফেলার জন্য সুব্রত নির্দেশ দিয়েছিলেন বলে জানান।
৩২ মাস কারাভোগের পর ২০২৪ সালের ১ মার্চ জামিন পান তিনি। কিন্তু মুক্তির দিন জেলগেট থেকে আবার সিটিটিসির লোকরা ধরে নিয়ে চার দিন গুম রাখেন। সেখানে পরিবারের কাছে ৬ লাখ টাকা দাবি করেন আইও মিজান। একপর্যায়ে ১ লাখ টাকা ও বন্ডসই দিয়ে তাকে মুক্তি দেওয়া হয়।
মুক্তির পরও মুফতি মাহমুদুল হাসান গুনবীকে নানাভাবে হুমকি-ধমকি দেন গোয়েন্দা সদস্যরা। ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে হাসিনার পতনের পর পরিস্থিতি পাল্টে যায়। তিনি আবার সভা-সমাবেশে বক্তব্য রাখছেন।
এই বছর অর্থনীতির নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়েছে উদ্ভাবন ও সৃজনশীল ধ্বংসের প্রক্রিয়া (creative destruction) কীভাবে দীর্ঘমেয়াদি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির মূল চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করে সেই গবেষণার ওপর। নতুন প্রযুক্তি ও ধারণা পুরোনো ব্যবস্থাকে প্রতিস্থাপন করে সমাজ যখন পরিবর্তনের জন্য উন্মুক্ত থাকে, তখনই টেক
৮ ঘণ্টা আগে‘মনের তালা খুলল কে, চাবিওয়ালা, চাবিওয়ালা!’ প্রখ্যাত শিল্পী রুনা লায়লার সেই সুরেলা প্রশ্নের উত্তর আজও খুঁজে বেড়াচ্ছি! তবে ব্যক্তিগত জীবনে নয়, রাষ্ট্রীয় জীবনে। এই রাষ্ট্রের জীবনেও একটা বিশেষ তালা আছে, আর তার নাম আর্টিকেল ৭০! এই তালা লাগানো হয়েছিল সেই সব মাননীয়র জন্য, যাদের মধ্যে ‘ছাগলীয়’ প্রবৃত্তি রয়ে
৮ ঘণ্টা আগেভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ইসরাইলের যুদ্ধাপরাধী প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে প্রায়ই তার পরম বন্ধু বলে বেশ গৌরবের সঙ্গে প্রচার করে থাকেন। ভিন্ন দেশের এ দুই রাজনীতিবিদের প্রগাঢ় বন্ধুত্বের মূল সূত্র হলো মুসলমানদের প্রতি তাদের তীব্র ঘৃণা। বর্তমান বিশ্বে ইসলামোফোবিয়ায় আক্রান্ত শীর্ষ দুটি
৮ ঘণ্টা আগেগাজার ভবিষ্যৎ নিয়ে যখন হতাশা চরমে, তখনই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা করেছেন এক নতুন ‘২০ দফার শান্তি পরিকল্পনা’। সেখানে তিনি নিজেকে বসিয়েছেন একটি তথাকথিত ‘বোর্ড অব পিস’-এর চেয়ারম্যান হিসেবে।
১ দিন আগে