তিন বাটপাড়ের মহিষ চুরির টেকনিকটি আপনারা অনেকেই জানেন। বাটপাড়দের একজন মহিষটিকে চুরির পর এক রাস্তা দিয়ে অগ্রসর হয়। দ্বিতীয় বাটপাড় মহিষের গলার ঘণ্টাটি খুলে অন্য রাস্তা দিয়ে যায়। আর তৃতীয় বাটপাড় মহিষের মালিকসহ উপস্থিত ক্রাউডকে ঘণ্টা যেদিকে বাজছে, সেদিকে নিয়ে যায়।
পিলখানা ট্র্যাজেডিসহ এ রকম ‘র’ (RAW) কর্তৃক সংঘটিত সব অপারেশনে এই তিন বাটপাড়ের কর্মপদ্ধতি লক্ষ করা যায়। যেমন : পিলখানায় এদের একটা গ্রুপ সরাসরি হত্যার পরিকল্পনা করেছে এবং অংশ নিয়েছে অর্থাৎ মহিষটাকে এক রাস্তায় নিয়ে গেছে । আর শঙ্কর রায়চৌধুরী ঘণ্টাটি হাতে নিয়ে অন্য রাস্তায় বাজাচ্ছে। আর আমাদের আলো-স্টাররা তৃতীয় বাটপাড়ের মতো ক্রাউডকে রায় সাহেবের রাস্তায় তুলে দিয়েছে।
শঙ্কর রায়চৌধুরীর হাতের সেই ঘণ্টাটি ছিল The Asian Age নামক পত্রিকার একটি কলাম! যেটি তিনি লিখেছিলেন ২০০৯ সালের ২৪ মার্চ। সেই লেখাটির শিরোনাম দিয়েছিলেন, ঢাকাকে নিজের নজরদারির বাইরে যেতে দিতে পারে না দিল্লি (Delhi can’t afford to let Dhaka slip off its radar) . একটি স্বাধীন দেশ অন্য একটি স্বাধীন দেশের ব্যাপারে এ রকম উক্তি কখনোই করতে পারে না। কিন্তু আমরা কয়েকজন ছাড়া বিষয়টি নিয়ে কেউ উচ্চবাচ্য করেনি। স্বাধীনতার আবেগ নিয়ে উচ্চকিত গ্রুপটিই সবচেয়ে বেশি নীরব হয়ে পড়ে।
পিলখানা হত্যাকাণ্ড বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ, শকুন নেমে আসা এক সকাল। অর্ধশতাধিক সেনা কর্মকর্তা, পরিবার-পরিজনসহ নির্মমভাবে খুন হলেন। ঘটনার পরপরই ভারতীয় সাবেক সেনাপ্রধান ও রাজ্যসভার সদস্য শঙ্কর রায়চৌধুরী একটি বিশদ প্রবন্ধ লিখেছিলেন (২৫-২৬ ফেব্রুয়ারির ঘটনার ঠিক মাসখানেকের মাথায়), যা তখন বহু বিশ্লেষকের কাছে পাকিস্তানবিরোধী প্রোপাগান্ডা মনে হলেও আজকের নতুন তদন্ত-তথ্যের পরিপ্রেক্ষিতে আরো স্পষ্ট হয়ে উঠেছে—এই লেখাটি একটি গোয়েন্দা-সংকেতপূর্ণ রাজনৈতিক নির্দেশিকা, যার উদ্দেশ্য ছিল প্রকৃত অপরাধীদের আড়াল করা এবং ভারতের ভূরাজনৈতিক বয়ানকে প্রতিষ্ঠা করা।
আজকের প্রেক্ষাপটে ২০০৯ সালে ২৪ মার্চে লেখা তার সেই প্রোপাগান্ডাটি পড়লে বোঝা যাবে এই রায় সাহেবরা আমাদের কেমন সাব-হিউম্যান লেবেলের প্রাণী হিসেবে ঠাহর করেন। আর আমরাও তাদের কাছে এর চেয়ে উন্নতমানের বুদ্ধিমান প্রাণী হিসেবে নিজেদের তুলে ধরতে পারিনি। স্বাধীনতার পর থেকেই ওরা যদি বলেছে, চিলে তোর কান নিয়ে গেছে। আমরা তখন নিজের কানে হাত না দিয়েই সেই চিলের পেছনে দৌড়িয়েছি! কোনো কোনো ক্ষেত্রে ৫৪ বছর পরও সেই কানে হাত দেওয়ার সাহস করি না! এখনো সেই চিলের পানেই ছুটছি নিজের কানটি ফেরত পাওয়ার জন্য!
নতুন তদন্ত ও পুরোনো বয়ান : দুই বিপরীত বাস্তবতা
জেনারেল ফজলুর রহমানের নেতৃত্বে গঠিত তদন্ত কমিশন চিফ অ্যাডভাইজারের কাছে যে রিপোর্ট জমা দিয়েছে, তাতে উঠে এসেছে তিনটি বিস্ময়কর তথ্য। এক, পিলখানা হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যে ভারত ও তাদের একটি গোয়েন্দা সংস্থার সুস্পষ্ট সম্পৃক্ততা ছিল। দুই, শেখ হাসিনাসহ তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের একটি অংশ এ বিষয়ে অবগত ছিল বা সহযোগিতা করেছে। তিন, তৎকালীন সেনাবাহিনীর প্রধানসহ কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ অফিসারের আচরণ সন্দেহজনক ছিল।
এই তিনটি তথ্যই শঙ্কর রায়ের লেখার বয়ানকে চ্যালেঞ্জ করে। কারণ তিনি ধারাবাহিকভাবে চেষ্টা করেছিলেন ঘটনাটিকে ‘পাকিস্তানের মদতে বিএনপি-জামায়াতের চক্রান্ত’ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে। তার সেই লেখাটির প্রায় পুরো অনুবাদ আমার এই লেখার মধ্যেই পরিবেশন করছি, যাতে পুরো মেকানিজমটি বুঝতে সবার জন্য সহজ হয়!
কলামের শুরুতেই লেখেন,
‘২৫-২৬ ফেব্রুয়ারির বিডিআর বিদ্রোহের অভিঘাত এখনো বাতাসে ভাসছে। যে বিষয়টি প্রথমেই আঘাত করে, তা হলো বিদ্রোহী বিডিআর জওয়ানরা যে নিষ্ঠুর বর্বরতায় তাদের অফিসারদের—কিছু ক্ষেত্রে তাদের পরিবারসহ হত্যা করেছে। এটি অনেকটাই স্মরণ করিয়ে দেয় ১৯৭১ সালের মার্চের সেই ঘটনা, যখন পশ্চিম পাকিস্তানি অফিসার ও তাদের পরিবারকে একইভাবে হত্যা করা হয়েছিল; সম্ভবত একই ইউনিটের হাতে। ইউনিফর্মধারী সৈন্যরা এমনভাবে উন্মত্ত হয়ে উঠল কেন? কোথায় এত বড় ভুল ঘটল? কেন তারা এমন অমানুষিক আচরণ করবে? এটা কি কোনো চরমপন্থি মতাদর্শের প্রভাব, সম্ভবত ধর্মীয় রঙে রঞ্জিত, যা সৈন্যদের স্বাভাবিক বেতন-রেশন বা প্রশাসনিক অসন্তোষের বাইরে গিয়ে উন্মাদনার দিকে ঠেলে দেয়? বিদ্রোহের সময়টিও প্রশ্ন তোলে—এখন কেন? আগের রাজনৈতিক সরকার থাকাকালে কেন নয়? অথবা পরে, যখন শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ সরকার কিছুটা সময় পেয়ে ক্ষমতার যন্ত্র পরিচালনায় আরো অভ্যস্ত হয়ে উঠতে পারত? সব লক্ষণই বলছে, বিডিআর বিদ্রোহ ছিল সুপরিকল্পিত, সংগঠিত একটি পদক্ষেপ—প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার নবগঠিত সরকারকে শুরুর দিকেই অস্থির ও দুর্বল করে দেওয়ার প্রচেষ্টা। প্রশ্ন হচ্ছে : কারা এটি করল, কেন করল এবং কার স্বার্থ এতে রক্ষা পেল? যদি কোনো বিদেশি হাত থাকে, তবে তা ভারতের হওয়ার সম্ভাবনা কম। তাহলে কার?’
প্রিয় পাঠক, দেখুন, কেমন করে ‘ঠাকুর ঘরে কে রে’? বলার আগেই তিনি বলে দিলেন যে আমরা (ভারত) কলা খাই নাই! এই শঙ্কর রায়চৌধুরীর মতো করেই পিলখানার প্রধান খুনি হাসিনা আরেকটি আওয়াজ তুলেছিলেন বেগম জিয়াকে নিয়ে। বেগম জিয়া নাকি সেদিন সকালবেলায় নিজের বাড়ি থেকে বের হয়ে অজানা জায়গায় গিয়েছিলেন! সেদিন তারেক রহমান নাকি অনেকবার বাংলাদেশে ফোন করেছিলেন। আজ যখন তদন্তের রিপোর্টে ঠিক উল্টো তথ্য উঠে এসেছে, তখন তার লেখাটি অন্য আলোয় পড়তে হয়—এটি ছিল দোষ চাপানোর কৌশল, যা গোয়েন্দা দুনিয়ায় ‘Deflection Operation’ নামে পরিচিত।
বেদনায় দগদগে আমাদের অন্তরে আরো চেতনা সঞ্চারিত করার জন্য লেখার পরের অংশটি দেখুনÑ
“ঘটনার কারণ, ক্রমধারা ও দায় নির্ধারণে তিনটি সমান্তরাল তদন্ত শুরু হয়েছে—একটি বাংলাদেশ সরকারের, একটি ঢাকা পুলিশের সিআইডির এবং তৃতীয়টি সেনাবাহিনীর। বাণিজ্যমন্ত্রী লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) ফারুক খানকে এই তিনটি তদন্ত তদারকির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে এবং অগ্রগতির ওপর নির্ভর করে মার্চের শেষ নাগাদ ফলাফল প্রকাশ পাওয়া যেতে পারে।
শেখ হাসিনা ভারতের প্রতি অনুকূল মনোভাবাপন্ন—এটি বাংলাদেশের রাজনৈতিক, আমলাতান্ত্রিক এবং বিশেষ করে সামরিক ও গোয়েন্দা অঙ্গনে অনেকের কাছে অগ্রহণযোগ্য। পাকিস্তানের মতো বাংলাদেশেও ক্ষমতার বড় অংশই বন্দুকের নলের দিক থেকে নির্ধারিত হয়। ভারতের উদ্বিগ্ন হওয়ার যথেষ্ট কারণ আছে, কারণ বিডিআর বিদ্রোহের পর উদ্ভূত পরিস্থিতিতে আগের সময়গুলোর অশনি-ইঙ্গিত স্পষ্টÑযেমন ১৯৯৬-২০০১ মেয়াদে শেখ হাসিনার অনিশ্চিত অবস্থান অথবা ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও বিডিআর তাদের পেশাগত সংস্কৃতি, মনোভাব এবং দৃষ্টিভঙ্গিতে পাকিস্তান সেনাবাহিনী ও পশ্চিম পাকিস্তান রেঞ্জার্সের মডেলের দিকে বেশি ঝুঁকেছে—মুক্তিবাহিনীর দিকে নয়। বিশেষ করে বেসামরিক কর্তৃপক্ষের প্রতি অবজ্ঞা ও ভারতের প্রতি শত্রুভাবাপন্ন মনোভাব—এগুলো ছিল পাকিস্তানি সামরিক ঐতিহ্যের উত্তরাধিকার, যা মুক্তিযুদ্ধের পর repatriation-এর মাধ্যমে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বহু বাঙালি অফিসার পুনর্বহাল হওয়ার ফলে বাংলাদেশে স্থায়ী হয়ে যায়।
বঙ্গবন্ধুর এই উদারতা উপদেষ্টাদের পরামর্শের বিরুদ্ধে ছিল এবং শেষ পর্যন্ত ১৯৭৫ সালে তা তার জন্য প্রাণঘাতী প্রমাণিত হয়। এ কারণেই শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃত্ব সেনাবাহিনীর সঙ্গে কখনোই স্বাভাবিক সম্পর্ক গড়ে তুলতে পারেননিÑযেমন পাকিস্তানে বেনজির ভুট্টো সেনাবাহিনীর সঙ্গে পারতেন না। হাসিনা এক অর্থে ‘শাসন’ করেছেন, কিন্তু কখনো পুরোপুরি ‘শাসন করতে দেওয়া হয়নি’—১৯৯৬–২০০১-এও নয়, এখনো নয়। বিপরীতে বেগম খালেদা জিয়া ও বিএনপির সঙ্গে সেনাবাহিনীর সম্পর্ক বরাবরই ঘনিষ্ঠ এবং জিয়াউর রহমানের স্ত্রী হিসেবে বেগম খালেদার ব্যক্তিগত অবস্থানও এ ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা রেখেছে।”
অর্থাৎ, সেনাবাহিনীর প্রতি অবিশ্বাস তৈরির বীজ বপন করে তিনি একটি ন্যারেটিভ ওয়ারফেয়ার (narrative warfare) পরিচালনা করছিলেন। লেখাটি পড়লে দেখা যায়—শঙ্কর রায় নিজেকে শুধু একজন বিশ্লেষক হিসেবে নয়, বরং ভারতের গোয়েন্দা নীতির একজন মুখপাত্র হিসেবে হাজির করেন।
তিনি বারবার বলেনÑ‘ঢাকা যেন দিল্লির নজর এড়াতে না পারে।’ এ এক ধরনের গোপন নির্দেশিকা, যার অর্থ—বাংলাদেশের রাজনীতি, সেনাবাহিনী এবং সীমান্তকে ভারতের সুরক্ষা-বলয়ের ভেতরে রাখতে হবে।
এর উদ্দেশ্য খুব স্পষ্ট—ঘটনার আগে থেকেই তৈরি করা হয়েছিল একটি ‘প্রস্তুতকৃত বয়ান’, যাতে ভারতের দিকে কোনো আঙুল উঠলেই বলা যাবে—‘না, এটা পাকিস্তানের ষড়যন্ত্র।’ হত্যাকাণ্ডের সময়টি বেছে নেওয়া হয়েছিল, তাদের সেই বয়ানটিকে বিশ্বাসযোগ্য করানোর জন্য।
তিনি লিখছেনÑ‘আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকা ভারতের জন্য সুবিধাজনক; বিএনপি পাকিস্তানের জন্য সুবিধাজনক ।’
আজকের তদন্ত বলছে—শঙ্কর রায়ের উদ্দেশ্য ছিল বিভ্রান্তি ছড়ানো। নতুন তদন্তে দেখা যাচ্ছে—পিলখানা হত্যাকাণ্ড ঘটানোর উদ্দেশ্য ছিল বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে দুর্বল করা, চেইন অব কমান্ডকে ধ্বংস করা এবং নিরাপত্তা নীতিকে ভারতমুখী করে ফেলা। শঙ্কর রায়ের ভাষা ঠিক এই লক্ষ্যটিকেই প্রতিফলিত করে। তিনি সতর্ক করলেন—‘বাংলাদেশ যেন দিল্লির নজর থেকে সরে না যায়।’
এ এক নিখাদ গোয়েন্দা ভাষা। এর মানে—পিলখানার রক্ত দিয়ে তৈরি করা হলো এমন একটি পরিস্থিতি, যাতে বাংলাদেশ আর কখনো ভারতের বাইরে গিয়ে নিজের নিরাপত্তা–নীতি নির্ধারণ করতে না পারে।
শঙ্কর রায়ের প্রবন্ধ একটি অভ্যন্তরীণ গোয়েন্দা রিপোর্টের সুরে লেখা। একজন বিশ্লেষকের লেখা যেমন হয়, এটি তেমন নয়। এতে রয়েছে—হুঁশিয়ারি, নীতি-সংকেত, কৌশলগত পরামর্শ এবং বাংলাদেশে প্রভাব বিস্তারের পরামর্শ।
বাংলাদেশের জনগণের স্বাধীনতার স্পৃহা এবং তাকে পদদলিত করার ইন্ডিয়ান খায়েশকেই তিনি পাকিস্তান-ইন্ডিয়ার মধ্যকার ‘গ্রেট গেম’ হিসেবে তুলে ধরেছেন। এই গেমে জিততে হলে ভারত সরকারকে কী করতে হবে, সেই পথটিও বাতলে দেনÑ
“এখন যখন আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায়, তখন বিডিআর বিদ্রোহ যেন ‘গ্রেট গেম’-এর নতুন রাউন্ডের প্রথম ঘণ্টা—সরকারকে অস্থিতিশীল করা এবং ভারত-অনুকূল সরকার সরিয়ে পাকিস্তান-সমর্থক বিএনপি সরকারকে পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা। ভারত কোনোভাবেই এটি চাইবে না, কারণ অতীতে অ-আওয়ামী লীগ সরকারগুলো বাংলাদেশকে জঙ্গি সংগঠন—যেমন : হরকতুল জিহাদ বাংলাদেশ (HuJI-B)—ও ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীর নিরাপদ ঘাঁটি বানিয়েছিল। ভারত হাসিনা সরকারকে পূর্ণ সমর্থন দেয়, কিন্তু প্রকাশ্য সমর্থন আবার আওয়ামী লীগের জন্য ‘কিস অব ডেথ’ হতে পারে। তাই ভারতের পথ খুব সতর্কতার। একদিকে সীমান্তে নজরদারি শক্তিশালী করতে হবে—বাঁধ, বিএসএফ মোতায়েন, প্রযুক্তিগত নজরদারি। অন্যদিকে বাংলাদেশে অর্থনৈতিক, করপোরেট, সাংস্কৃতিক এবং বিশেষ করে বাংলা টু বাংলা যোগাযোগ বাড়াতে হবে। এর জন্য দীর্ঘমেয়াদি কূটনীতি প্রয়োজন।”
একজন রাজনীতিবিদ বা সাবেক সেনাপ্রধান এ ধরনের অপারেশনাল (Operational) নির্দেশনা সাধারণত দেন না; এগুলো ‘র’ (RAW) ধাঁচের বিশ্লেষণের ভাষা। এমন লেখার উদ্দেশ্য তিনটি—প্রকৃত অপরাধীদের আড়াল করা, দোষ পাকিস্তান/বিএনপি/জামায়াতের ঘাড়ে চাপানো, ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক রক্ষার জন্য আওয়ামী নেতৃত্বকে ঢাল বানানো। এ জন্যই তিনি বারবার লিখেছেন—‘আওয়ামী লীগ সরকার ভারতকে সুবিধা দেয়।’ ‘অন্য সরকার এলে বাংলাদেশ জঙ্গিদের ঘাঁটি হবে।’
এই বক্তব্যগুলো আজ আরো সন্দেহজনক মনে হয়। এই লেখাটিই আজ পিলখানা হত্যাকাণ্ডে ভারতের সম্পৃক্ততার এক জ্বলন্ত প্রমাণ হিসেবে কাজে লাগবে। সত্যের মুখোমুখি হয়ে মিথ্যার অসহায়ত্ব এখানেই ধরা পড়েÑযেখানে প্রমাণ নিজেই কথা বলে, তখন সত্যকে প্রকাশের জন্য আর কোনো ব্যাখ্যার প্রয়োজন হয় না!

