শিক্ষার অধঃপতনের জন্য দায়ী নীতিনির্ধারকরা: ডা. জাহিদ

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ : ২৫ আগস্ট ২০২৫, ১৯: ১৭

দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসাইন। সোমবার (২৫ আগস্ট ২০২৫) রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজ (সিজিএস) কর্তৃক আয়োজিত ‘গণতান্ত্রিক পুনর্গঠনের জন্য সংলাপ : শিক্ষা ও জনস্বাস্থ্য’ শীর্ষক সংলাপে তিনি এ ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

বিজ্ঞাপন

ক্ষোভ প্রকাশ করে ডা. জাহিদ বলেন, আমাদের আজকের যে অধঃপতন এর জন্য সবচেয়ে বেশি দায়ী নীতিনির্ধারকরা আর আমাদের যারা জড়িত ছিল। এদেশের বড় সমস্যা শিক্ষিত মানুষ। অশিক্ষিত গরিব মানুষ এদেশের সমস্যা না। ওরা কেউ এই চেয়ারে বসে না, আমরা যারা এই চেয়ারে বসি তারা দায়ী।

তিনি বলেন, গত ১৩ মাস যাবত দেশে শিক্ষা ও পরীক্ষা নিয়ে কার্যকর কোনো আলোচনা নেই। এমনকি কোভিডের সময় অটো পাশের মতো সিদ্ধান্ত শিক্ষার মানকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। এসব আমাদের শিক্ষার মানকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছে আল্লাহ জানে। কয়েক বছর আগে দেখলাম নিরীক্ষকদের চিঠি দেয়া হয়েছে নাম্বার বাড়িয়ে দেয়ার জন্যে। এসব আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থার জন্য মারাত্মক হুমকি।

শিক্ষা-স্বাস্থ্যসহ বিভিন্ন খাতের অনৈতিক কর্মকাণ্ডের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আপনি ভালো ডাক্তার ও শিক্ষক খুঁজছেন। আরে একটা ভালো মানুষতো আগে বের করেন। তারপরেই না ভালো শিক্ষক, ভালো চিকিৎসক, ভালো পুলিশ, ভালো সাংবাদিক ও ভালো লোক পাবেন।

তিনি বলেন, আমাদের যে নৈতিক শিক্ষা, যেটা পরিবার থেকে এবং পরবর্তীতে সমাজ থেকে হয় সেই শিক্ষাটাকে আমরা কোন জায়গায় নিয়ে গেছি। আমরা সকালে উঠে দেখি ভোট হয়ে গেছে। আমরা সকাল বেলা উঠে দেখি ভোটের কোন দরকার নেই নির্বাচিত হয়ে গেছে। টপ মোস্ট লেভেলে যদি এইরকম অবস্থা থাকে।

এছাড়াও বিশেষায়িত স্বাস্থ্যসেবার মান উন্নয়নের দিকেও গুরুত্বারোপ করেন তিনি। তিনি বলেন, বিশেষায়িত স্বাস্থ্য সেবার আমাদের যে স্তরগুলো আছে, এগুলো নিয়ে কাজ করতে হবে। এদেশে সরকারি খাতের পাশাপাশি স্বাস্থ্যখাতে বেসরকারি খাত বিগত ৩০-৪০ বছরে বেশ উন্নতি করেছে। সেটাকে কিভাবে আরো মানসম্মত করা যায় তা নিয়ে কাজ করতে হবে।

তত্ত্ববধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরী বলেন, আমাদের এই সরকারের কাছে অনেক প্রত্যাশা ছিল। কিন্তু মনে হচ্ছে শিক্ষাটা অগ্রাধিকার থেকে ছুটে গিয়েছে। কোথায় গেছে বলতে পারিনা, আপনারাও জানেন। কিছু কিছু সিদ্ধান্ত, কিছু কিছু কাজ তারা করেছেন যা সাধারণ মানুষের কোন কাজে আসবে না।

তিনি আরো বলেন, আমরা শুধু পুনর্গঠন চাইছিনা, আমরা রূপান্তর চাইছি শিক্ষা ও স্বাস্থ্যে। রূপান্তর শুধু বই ছাপালেই বা শিক্ষাক্রম পরিবর্তন করলে আসবে না। শিক্ষার্থীদের নীতিবান মানুষ তৈরি করতে হবে। শিক্ষার্থীকে পরীক্ষার্থী বানিয়ে নয়, শিক্ষার্থীকে মানুষ করতে হবে।

সিজিএসের সভাপতি জিল্লুর রহমানের সঞ্চালনায় সংলাপটিতে এছাড়াও বক্তব্য রাখেন, অধ্যাপক ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসেন, ড. মোহাম্মদ মুশতাক হোসেন, অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, ড. মোহাম্মদ কামরুল আহসান, ডা. তাসনিম জারা, জোনায়েদ সাকি, ড. মামুন আহমেদ, মোহাম্মদ মঈনুল ইসলাম, ড. নিজাম উদ্দিন আহমেদ, অধ্যাপক ডা. মওদুদ হোসেন আলমগীর পাভেল, ডা. রফিকুল ইসলাম, ডা. সাখাওয়াত হোসেন সায়ন্থ, গোলাম সারোয়ার মিলন, অধ্যাপক ড. শওকত আরা হোসাইন, ড. সরদার এ. নাঈম ও ড. ডি. কে. শিল অর্পণ প্রমুখ।

আমার দেশের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত