বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস

তৃণমূলের মতামত নিয়ে নির্বাচনি কৌশল ঠিক করা হবে

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ : ২৫ অক্টোবর ২০২৫, ২০: ০৬

আগামী জাতীয় নির্বাচন সহ বিভিন্ন বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে সারাধণ পরিষদের অষ্টম অধিবেশন ও নির্বাহী পরিষদের বৈঠক করেছে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস। শনিবার সকালে রাজধানীর মতিঝিলে মুক্তিযোদ্ধা সাদেক হোসেন খোকা কমিউনিটি সেন্টারে পর্যায়ক্রমে অনুষ্ঠিত এ অনুষ্ঠানে তৃণমুলের মতামত নেয়া হয়েছে।

এ সময় কোন প্রক্রিয়ায় দলটি আগামী নির্বাচনে অংশ নেবে সে বিষয়ে চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদকে দায়িত্ব ও ক্ষমতা দেয়া হয়েছে বলে দলটির মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দীন আহমদ জানিয়েছেন।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, আমরা তৃণমুলের বক্তব্য নিয়েছি। স্বাভাবিকভাবে ভিন্ন ভিন্ন মত আসতে পারে। এ বিষয়ে আমরা নির্বাহী পরিষদে বসে সিদ্ধান্ত নেব। এছাড়া আন্দোলনরত দলগুলোর সঙ্গেও বসেও এ বিষয়ে আলোচনা হবে। চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে সময় লাগবে।

দলের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আমির মাওলানা মুহাম্মদ মামুনুল হকের সভাপতিত্বে এবং মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দীন আহমদ ও যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা আতাউল্লাহ আমীনের যৌথ পরিচালনায় সকালের অধিবেশনে সারাদেশ থেকে প্রায় দুই হাজার তৃণমূল নেতা অংশগ্রহণ করেন। পরে একই স্থানে বিকেলে কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরার জরুরি অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়।

উভয় অধিবেশনে আগামী জাতীয় নির্বাচনে দলের অংশগ্রহণ প্রক্রিয়া বিষয়ে আলোচনা হয়। মজলিসে শুরার সদস্য এবং তৃণমূলের নেতারা মৌখিক ও লিখিতভাবে মতামত প্রদান করেন— সংগঠনটি এককভাবে, অপরাপর ইসলামী দলের সঙ্গে আসনভিত্তিক সমঝোতার মাধ্যমে, নাকি বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোটে থেকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে।

উদ্বোধনী বক্তব্যে মাওলানা মামুনুল হক ওই তিনটি প্রক্রিয়ার ইতিবাচক ও নেতিবাচক দিক বিশদভাবে ব্যাখ্যা করে বলেন, যেকোনো মতামত ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে আমাদের ইসলাম, দেশ ও সংগঠনের কল্যাণকে পর্যায়ক্রমে বিবেচনায় নিতে হবে।

তিনি বলেন, রাজনীতিতে কাউকেই চূড়ান্ত বন্ধু বা শত্রু মনে করা যায় না; বরং ভারসাম্যপূর্ণ সম্পর্ক তৈরি করতে হবে। মতামতের ভিত্তিতে যেই সিদ্ধান্তই গৃহীত হোক, সবাইকে তা মেনে নিতে হবে। সংগঠনের সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে সব পর্যায়ের নেতাকর্মীদের প্রতি মহান আল্লাহর দরবারে দোয়ার আহ্বান জানান মাওলানা মামুনুল হক।

তিনি সংগঠনের পক্ষ থেকে ঘোষিত প্রার্থীদের উদ্দেশে বলেন, নির্বাচনে বিজয়ী না হলেও আগামী পাঁচ বছর আপদ-বিপদে সর্বশক্তি নিয়ে সংশ্লিষ্ট এলাকার জনগণের পাশে থাকতে হবে।

এসব অধিবেশনে আরও বক্তব্য রাখেন সিনিয়র নায়েবে আমির মাওলানা ইউসুফ আশরাফ, অভিভাবক পরিষদের অন্যতম সদস্য মাওলানা আকরাম আলী, নায়েবে আমীর মাওলানা আফজালুর রহমান, মাওলানা রেজাউল করিম জালালী, মাওলানা আলী উসমান, মাওলানা মুহিউদ্দীন রব্বানী, মাওলানা শাহীনুর পাশা চৌধুরী, মাওলানা কোরবান আলী কাসেমী ও মাওলানা মাহবুবুল হক প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, আমরা যেই মতামতই দেই না কেন—আমিরের নেতৃত্বে সংগঠনের যেকোনো সিদ্ধান্তে আমাদের পূর্ণ আস্থা ও নিঃশর্ত সমর্থন রয়েছে।

এদিকে শুরা অধিবেশনে নয়টি প্রস্তাব গৃহীত হয়। সেগুলো হলো-সংবিধানে আল্লাহর ওপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস পুনঃস্থাপন; আল্লাহ, রাসূল (সা.) ও ইসলামের অবমাননার শাস্তি মৃত্যুদণ্ড নির্ধারণ; জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি প্রতিষ্ঠা ও গণভোটের দাবি; ফিলিস্তিন ও ভারতের মুসলিম নিধন বন্ধে আন্তর্জাতিক উদ্যোগ; কাদিয়ানীদের রাষ্ট্রীয়ভাবে অমুসলিম ঘোষণা; সীমান্ত হত্যা বন্ধে কূটনৈতিক উদ্যোগ জোরদার; ইসকনসহ সকল হিন্দুত্ববাদী আগ্রাসন মোকাবেলা; পশ্চিম তীরকে ইসরাইলের অন্তর্ভুক্তির প্রতিবাদ এবং খেলাফত প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে বিশ্ব মুসলিমের প্রতি আহ্বান।

আমার দেশের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত