আগে জুলাই সনদের আইনিভিত্তি চায় ইসলামী আন্দোলন ও খেলাফত মজলিস

নির্বাচনি রোডম্যাপকে বিভ্রান্তিমূলক বলল জামায়াত

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ : ২৮ আগস্ট ২০২৫, ২৩: ৩১
আপডেট : ২৮ আগস্ট ২০২৫, ২৩: ৩৮

নির্বাচন কমিশন (ইসি) ঘোষিত নির্বাচনি রোডম্যাপ নিয়ে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন ও খেলাফত মজলিস। বিষয়টিকে গতানুগতিক ও কিছুটা বিভ্রান্তিমূলক বলে দাবি করেছে জামায়াত। অন্যদিকে নির্বাচনি রোডম্যাপ বাস্তবায়নের আগে জুলাই সনদের আইনিভিত্তি এবং তা বাস্তবায়নের রোডম্যাপ চেয়েছে ইসলামী আন্দোলন ও খেলাফত মজলিস। বৃহস্পতিবার আলাদা বিবৃতিতে এ প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে।

জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, নির্বাচন কমিশন ঘোষিত রোডম্যাপ গতানুগতিক ও কিছুটা বিভ্রান্তিমূলক। জাতির প্রত্যাশা আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিতব্য জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য হবে। কিন্তু কোন পদ্ধতিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে তা এখনো ঠিক হয়নি। এমনকি জুলাই জাতীয় সনদের আইনি ভিত্তি এবং এর বাস্তবায়নের প্রক্রিয়াও চূড়ান্ত হয়নি। এমতাবস্থায় এই রোডম্যাপ ঘোষণা অপরিপক্ক ও আংশিক। এতে জনপ্রত্যাশার প্রতিফলন ঘটেনি।

বিজ্ঞাপন

গোলাম পরওয়ার আরো বলেন, জুলাই বিপ্লবের চেতনা ধারণ করে দেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার প্রয়োজনে জুলাই জাতীয় সনদের আইনিভিত্তি প্রদান এবং এর বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করে রোডম্যাপ ঘোষণা করা উচিত ছিল।

ইসলামী আন্দোলনের প্রতিক্রিয়া

পুরনো বন্দোবস্তে নির্বাচনি কর্মপরিকল্পনার আগে দেশবাসী সংস্কার ও জুলাই সনদ বাস্তবায়নের রোডম্যাপ দিতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন ইসলামী আন্দোলনের যুগ্মমহাসচিব ও দলীয় মুখপাত্র মাওলানা গাজী আতাউর রহমান।

দলের প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, আধুনিক জাতিরাষ্ট্রে নির্বাচন গুরুত্বপূর্ণ। আমরাও নির্বাচনের জন্য মুখিয়ে আছি। কিন্তু আজকের বাংলাদেশ রক্তস্নাত, এখানে বিশেষ পরিস্থিতি বিরাজ করছে। জুলাইয়ে ছাত্র-জনতা রক্ত ও জীবন উৎসর্গ করেছে ৫৪ বছরের জঞ্জাল দূর করার জন্য, দেশ থেকে স্বৈরতন্ত্র থেকে চিরস্থায়ী মুক্তির জন্য। সেই বিষয়ে কোনো রোডম্যাপ না দিয়ে পুরনো বন্দোবস্তের নির্বাচনি রোডম্যাপ জুলাইকে অস্বীকার করার নামান্তর।

তিনি বলেন, জাতি সংবিধান, রাজনৈতিক সংস্কৃতিসহ সামগ্রিক সংস্কারের জন্য অধির আগ্রহে অপেক্ষা করছে। সংস্কারের জন্য নানা কার্যক্রম হয়েছে, কিন্তু দুঃখজনক বাস্তবতা হলো, সংস্কারের সব চেষ্টাই এখন কাগুজে দলীলে পরিণত হয়েছে। মৌলিক সংস্কারের সামান্যতমও বাস্তবায়ন হয় নাই। তাই অন্য যে কোনো রোডম্যাপের আগে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের রোডম্যাপ দিতে হবে।

তিনি আরো বলেন, নির্বাচনের রোডম্যাপ দিয়েছেন, ভালো। এখন দ্রুততার সঙ্গে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের রোডম্যাপ ঘোষণা করতে হবে। অন্যাথায় জুলাই অভ্যুত্থানের মূল লক্ষ্যই ব্যর্থ হবে, আর ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ তা হতে দেবে না।

খেলাফত মজলিসের প্রতিক্রিয়া

খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ড. আহমদ আবদুল কাদের এক বিবৃতিতে বলেন, নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে যে রোডম্যাপ ঘোষণা দেওয়া হয়েছে তা কার্যকর হতে হবে জুলাই সনদের ভিত্তিতে। এর আগেই জাতীয় ঐক্যমতের আলোকে জুলাই সনদ ঘোষণা এবং রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশ জারির মাধ্যমে তার আইনি ভিত্তি দিতে হবে। তা না হলে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্ভব নয়। পেশীশক্তি ও কালো টাকার প্রভাবমুক্ত একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রত্যাশা নতুন বাংলাদেশে সবার। নির্বাচনের আগেই প্রয়োজনীয় সংস্কার জরুরি।

তিনি আরো বলেন, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে প্রশাসন এখনো কার্যকর ভূমিকা পালন করতে পারছে না। গণহত্যাকারী পতিত ফ্যাসিস্টদের বিচারে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতিও দৃশ্যমান নয়। গণ-অভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশকে নতুনভাবে বিনির্মাণে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রয়োজনীয় সংস্কারের পক্ষে জনরায় শুরু থেকেই আছে। সরকারকে জনরায়ের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হবে।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত