‘লীগ ধর, জেলে ভর’ স্লোগানে উত্তাল শাহবাগ

নিউইয়র্কে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) নেতা ও দলের সদস্যসচিব আখতার হোসেনের ওপর হামলার প্রতিবাদ এবং আওয়ামী লীগের বিচারের দাবিতে রাজধানীর শাহবাগে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি এনসিপি ঢাকা মহানগর।

মঙ্গলবার বিকেলে জাতীয় জাদুঘরের সামন থেকে শুরু হওয়া এ বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নেয় এনসিপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা। এসময় তারা “লীগ ধর, জেলে ভর”, “খুনি লীগের ঠিকানা—এই বাংলায় হবে না” ইত্যাদি স্লোগান দেন।

বিক্ষোভে অংশ নিয়ে এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলীয় সংগঠক আসাদ বীন রনি বলেন, উপদেষ্টা ইউনুস সাহেব রাজনৈতিক নেতাদের নিরাপত্তাহীন অবস্থায় রেখে নিজে নিরাপদে প্রস্থান করেছেন। এর মাধ্যমে তিনি প্রমাণ করেছেন যে বিপদের সময়ে তিনি সবার আগে সরে পড়েন। অথচ জনগণ তাকে গণঅভ্যুত্থানের পর নিরাপত্তা ও নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণের প্রত্যাশায় ক্ষমতায় বসিয়েছিল। আজকের এই পরিস্থিতির জন্য ইউনুস সাহেব ও তার উপদেষ্টা পরিষদ বহুলাংশে দায়ী।

তিনি আরও বলেন, “আখতার ভাইয়ের ওপর হামলা চালানো স্বৈরাচারীদের শাবকদের বহুগুণে মাশুল দিতে হবে। ইতিহাস সাক্ষী, আখতারদের হাতেই স্বৈরাচারের পূর্ণ বিনাশ হবে।

জাতীয় যুবশক্তির মুখ্য সংগঠক ইঞ্জিনিয়ার ফরহাদ সোহেল বলেন, একদিকে ছাত্রদলের শেখ তানভীর বারী হামিম আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে আপসহীন ঘোষণা দিচ্ছেন, আরেকদিকে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আওয়ামী লীগকে নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ করে দিতে চাইছেন। এটা শুধু প্রজন্মের পার্থক্য নয়, এটা হলো মেরুদণ্ড থাকা আর না থাকার পার্থক্য।

সমাবেশে বক্তারা আরও বলেন, আখতার হোসেন অতীতে খুনীচক্রের দমননীতির শিকার হয়েছেন। আজকের হামলার মাধ্যমে পরাজিত চক্র নিজেদের দেউলিয়াত্বই প্রকাশ করেছে। উপদেষ্টা পরিষদের নির্লিপ্ততা হামলাকারীদের প্রশ্রয় দিচ্ছে। অথচ একই পরিষদেরই সদস্য মাহফুজ ভাই একাধিকবার হামলার শিকার হলেও তারা নির্বিকার থেকেছে।


বক্তারা বলেন, গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রীয় সফরে সরকারি মহলের প্রত্যক্ষ সহযোগিতা ছাড়া হামলা সম্ভব নয়। এখনো সচিবালয় ও কূটনৈতিক মিশনের বহু কর্মকর্তা আওয়ামী লীগপন্থী থেকে যাচ্ছে।

তাদের অভিযোগ, ইন্টেরিম সরকারের ব্যর্থতার কারণে চিহ্নিত খুনীরা সহজেই বিদেশে পালাতে পারছে। ফলে আওয়ামী লীগের বিচার ও প্রশাসনিক সংস্কার ছাড়া বিপ্লবের লক্ষ্য পূর্ণাঙ্গ করা সম্ভব নয়।

স্থানীয় সময় সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) নিউইয়র্কের জন এফ কেনেডি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বের হওয়ার সময় আখতার হোসেনের ওপর ডিম নিক্ষেপ করা হয়। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক তাসনিম জারা। কাছেই অবস্থান করছিলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা হুমায়ুন কবির।