ছাত্র জমিয়ত বাংলাদেশের সভাপতি রিদওয়ান মাযহারী এবং সাধারণ সম্পাদক সাআদ বিন জাকির বলেছেন, সম্প্রতি জাতীয় পর্যায়ের দুটি গণমাধ্যমের কার্যালয়ে সংঘটিত হামলার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করে কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করেছে।
এ প্রেক্ষিতে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে প্রকাশিত এক প্রেস বার্তায় নাশকতার অভিযোগে গ্রেপ্তারকৃতদের পরিচয় উল্লেখ করতে গিয়ে দুঃখজনকভাবে শুধুমাত্র কওমি মাদরাসা শিক্ষার পরিচয় আলাদাভাবে তুলে ধরা হয়েছে। অথচ একই ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া অপর ৮ জনের কোনো প্রাতিষ্ঠানিক বা শিক্ষাগত পরিচয় সেখানে উল্লেখ করা হয়নি।
মঙ্গলবার গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে তারা বলেন, এভাবে একতরফাভাবে কোনো অপরাধীর সঙ্গে তার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিচয়কে মুখ্য করে তোলা কেবল দায়িত্বজ্ঞানহীনতাই নয়; বরং এটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে কওমি মাদরাসা শিক্ষাকে সামাজিকভাবে হেয় করার একটি সুপ্ত ও প্রচ্ছন্ন প্রয়াস বলেই আমাদের কাছে প্রতীয়মান হয়েছে। রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে থাকা কারও বক্তব্যে এমন পক্ষপাতদুষ্ট দৃষ্টিভঙ্গি গভীরভাবে উদ্বেগজনক।
তারা আরও বলেন, অপরাধের দায় অপরাধীর ব্যক্তিগত—তা কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, দলীয় পরিচয় কিংবা সামাজিক শ্রেণির ওপর আরোপ করা ন্যায়সংগত নয়। আমরা জোরালোভাবে দাবি জানাচ্ছি, নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত অপরাধী ও উসকানিদাতাদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক বিচার নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি ব্যক্তির অপরাধের দায়ে কোনো শ্রেণি বা শিক্ষাব্যবস্থাকে দায়ী করার অপচেষ্টা থেকে রাষ্ট্রকে বিরত থাকতে হবে এবং সহিংসতায় জড়িত নয় এমন নিরীহ শিক্ষার্থীদের ঢালাওভাবে হয়রানি বন্ধ করতে হবে।
বিবৃতিতে বলা হয়, রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় এ ধরনের সামাজিক শ্রেণিবৈষম্য নিঃসন্দেহে চরম অপেশাদারিত্ব ও গর্হিত আচরণের শামিল। আমরা অবিলম্বে সংশ্লিষ্ট প্রেস বার্তার ব্যাখ্যা, সংশোধন এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের দায়িত্বহীন বক্তব্য ও কর্মকাণ্ড পরিহারের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি।
এছাড়াও তারা গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, ফ্যাসিবাদী আমলের ন্যায় বাকস্বাধীনতা দমন করার যে দুঃসাহসিক প্রয়াস অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গ্রহণ করতে যাচ্ছে, তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। শুধুমাত্র সমালোচনার অজুহাতে কোনো ধরনের ওয়ারেন্ট ছাড়াই আলেমদের জিজ্ঞাসাবাদের নামে তুলে নেওয়ার প্রবণতা এ দেশে নতুন করে ফ্যাসিবাদের উত্থান ঘটাবে বলে তারা আশঙ্কা করেন।
আমার দেশের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

