প্রধান উপদেষ্টাকে ৮ দলের স্মারকলিপি

দাবি না মানলে ১১ নভেম্বর ‘ঢাকা চলো’ কর্মসূচির হুঁশিয়ারি

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ : ০৬ নভেম্বর ২০২৫, ১৩: ৫৫

জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের বলেন, আজ আমরা প্রধান উপদেষ্টাকে পাঁচ দফা দাবিতে স্মারকলিপি প্রদান করেছি। এতেও দাবি পূরণে কোনো উন্নতি না হলে আগামী ১১ নভেম্বর তারিখ ‘চলে চলো ঢাকা চলো’ কর্মসূচির ডাক দেয়া হবে।

তিনি বলেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি ও জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোট আয়োজন নিয়ে সময়ক্ষেপণের চালাকি বর্তমান সরকারকে বিপদে ফেলবে।

বিজ্ঞাপন

বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টায় রাজধানীর পল্টন মোড়ে জামায়াতসহ আট দল আয়োজিত যুগপৎ সংক্ষিপ্ত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

এর আগে রাজধানীর শান্তিনগর মোড়ে ঢাকা মহানগর উত্তর এবং মতিঝিল শাপলা চত্ত্বরে ঢাকা দক্ষিণ জামায়াতের সমাবেশ হয়। সেখান থেকে মিছিল নিয়ে পল্টন মোড়ে জমায়েত হন নেতাকর্মীরা। এছাড়া পল্টন মোড়ে আগে থেকেই জড়ো হয়ে সমাবেশ শুরু করেন ইসলামী আন্দোলন নেতাকর্মীরা। পর্যায়ক্রমে সেখানে খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, খেলাফত আন্দোলন, জাগপা, নেজামে ইসলাম পার্টি ও ডেভেলপমেন্ট পার্টির নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে জড়ো হন।

সমাবেশে ডা. তাহের বলেন, জুলাই বিপ্লবে রক্তের পর দেশে মানুষের অধিকার আদায়ে অল্প সময়ের মধ্যে আবার আমাদের রাস্তায় আসতে হয়েছে-এটা দুর্ভাগ্যজনক। প্রয়োজনে আবার রক্ত দেব, তবু জুলাইয়ের অর্জন ব্যর্থ হতে দেব না। জুলাই সনদকে আইনি ভিত্তির মাধ্যমে সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত হবেই ইনশাআল্লাহ।

ডা. তাহের বলেন, আমরা নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনে আছি। সোজা আঙ্গুলে ঘি না উঠলে আঙ্গুল বাকা করবো। ঘি আমাদের লাগবেই। গণভোট আগে দিতে হবে। ৫৪ বছরে কোনো সুষ্ঠু ভোট হয়নি। আরেকটি প্রহসনের নির্বাচন জাতি মেনে নেবে না।

তিনি সরকারের উদ্দেশ্যে বলেন, আলোচনার জন্য বললেই হবে না, সরকারকে রেফারির ভূমিকা নিতে হবে। একইসঙ্গে বিএনপিকে আলোচনায় বসার জন্য আহবান জানান তিনি।

সমাবেশে ইসলামী আন্দোলনের যুগ্ম মহাসচিব ও মুখপাত্র মাওলানা গাজী আতাউর রহমান বলেন, সরকার আমাদেরকে রাস্তায় নামতে বাধ্য করেছে। ১০ তারিখের মধ্যে আমাদের দাবি না মানা হলে ১১ তারিখে ঢাকা অচল করে দেয়া হবে। আগে গণভোট ছাড়া জাতীয় নিবার্চন হবে না। প্রয়োজনে এই নির্বাচন দুই মাস পরে হবে।

এ সময় নেজামে ইসলাম পার্টির মহাসচিব মুসা বিন ইযহার, জাগপা সহসভাপতি প্রকৌশলী রাশেদ প্রধান, বিডিপি সভাপতি আনোয়ারুল ইসলাম চান, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা তোফাজ্জল হোসেন মিয়াজী, খেলাফত আন্দোলনের মহাসচিব মাওলানা ইউসুফ সাদিক হাক্কানী, খেলাফত মজলিসের নায়েবে আমির মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী, জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ বক্তব্য রাখেন।

সমাবেশ শেষে দুপুর ১২টায় স্মারকলিপি দিতে আট দলের শীর্ষ নেতাদের নেতৃত্বে মিছিল নিয়ে জাতীয় প্রেসক্লাব-কদম ফোয়ারা হয়ে মৎস্য ভবন মোড়ে পৌঁছালে সেখানে ব্যারিকেড দিয়ে বাধা দেয় পুলিশ। পরে সেখান থেকে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ারের নেতৃত্বে আট দলের প্রতিনিধিরা প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনায় গিয়ে স্মারকলিপি জমা দেন।

স্মারকলিপি প্রদানের আগে গোলাম পরওয়ার সেটি সাংবাদিকদের সামনে পড়ে শোনান। এ সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা আলোচনা বসতে প্রস্তুত। আমরাই আগেই এ বিষয়ে প্রস্তাব দিয়েছি। আলোচনার মাধ্যমে সমাধানে আমরা আশাবাদী। আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আগে গণভোট না হলেই জাতীয় নির্বাচন নিয়ে সংকট হতে পারে।

পাঁচ দফা দাবি হলো– 

১. জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি এবং ওই আদেশের ওপর নভেম্বরের মধ্যেই গণভোট আয়োজন।

২. আগামী জাতীয় নির্বাচনে উভয় কক্ষে বা উচ্চকক্ষে পিআর (সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব) পদ্ধতি চালু।

৩. অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করা।

৪. বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের সব জুলুম নির্যাতন, গণহত্যা ও দুর্নীতির বিচার দৃশ্যমান করা।

৫. জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা।

আমার দেশের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত