আগের ৩ গণভোট কেমন ছিল, গণভোটে জনমতের প্রতিফলন ঘটে কতটা

আমার দেশ অনলাইন
প্রকাশ : ০৬ অক্টোবর ২০২৫, ২২: ০২
আপডেট : ০৬ অক্টোবর ২০২৫, ২২: ৪২

জুলাই সনদ বাস্তবায়নে জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত বা সম্মতি নেয়ার জন্য একটি গণভোট আয়োজনের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলো একমত হওয়ার কথা জানিয়েছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।

কয়েকমাস ধরে আলোচনার পর দলগুলো জুলাই সনদ বাস্তবায়ন নিয়ে গণভোটের বিষয়ে একমত হলেও শেষ পর্যন্ত সেটি কতটা জনমতের প্রতিফলন ঘটাতে পারবে এ নিয়েও নানা প্রশ্ন ও আলোচনা রয়েছে।

বিজ্ঞাপন

বিশ্লেষকরা বলছেন, বিশ্বের অনেক দেশেই কোনো সুনির্দিষ্ট বিষয়ে জনগণের মতামত নিতে গণভোট হয়েছে বা নেয়ার চর্চা আছে। তবে বাংলাদেশে যেগুলো হয়েছে তাতে জনগণ ভোট দিতে পেরেছে কতটা তা নিয়েই প্রশ্ন আছে।

তাদের মতে, এবার 'জুলাই সনদ' বাস্তবায়ন জনগণ চায় কি-না তা যাচাইয়ের জন্য যেভাবে রাজনৈতিক দলগুলো গণভোট চাইছে অর্থাৎ সংসদ নির্বাচনের সাথে একই দিনে কিংবা অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে গণভোট হলে তাতে জনমতের প্রতিফলন পাওয়া যেতে পারে।

তিন গণভোট কেমন ছিলো

বাংলাদেশে যে তিনটি গণভোট হয়েছে তার প্রথম দুটিকে বলা হয় প্রশাসনিক গণভোট আর তৃতীয়টিকে বলা হয় সাংবিধানিক গণভোট। প্রথম দুটি জিয়াউর রহমান ও হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ হ্যাঁ-না ভোট।

তবে ১৯৯১ সালের তৃতীয় গণভোট- যেটি সাংবিধানিক গণভোট হিসেবে পরিচিত, তা খুব একটা আলোচনায় আসেনি। কারণ গণভোটটি হয়েছিলো দ্বাদশ সংশোধনী বিল- যার ভিত্তিতে দেশ রাষ্ট্রপতি থেকে সংসদীয় ব্যবস্থায় ফিরেছে, তাতে রাষ্ট্রপতির সম্মতি দেয়া উচিত কি-না তা নিয়ে।

এই নির্বাচনেও ৮৪ শতাংশের বেশি ভোট পড়েছে বলে রেকর্ড আছে। ভোটের এই পরিসংখ্যান নিয়ে তখনই নানা অভিযোগ উঠেছিলো।

কীভাবে হবে গণভোট, দলগুলো কী বলেছে

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ রোববার বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে বৈঠকের পর বলেছেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে এবং গণভোট অনুষ্ঠানের বিষয়ে দলগুলোর মধ্যে মতৈক্য হয়েছে।

কমিশনের সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, যদি জাতীয় নির্বাচনের দিন গণভোট করা হয় তাহলে সংবিধান আদেশ বা সুপ্রিম কোর্টের মতামত নেওয়ার প্রয়োজন হবে না।

সভার পর ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়নে যাতে ম্যান্ডেটের অভাব না হয়, জনগণ এটা সমর্থন করে কি না, সে অনুমতির জন্য গণভোট হবে। জাতীয় নির্বাচনের দিনই আলাদা ব্যালটে জনগণের মত নেওয়া যায়। তাতে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন করা বাধ্যতামূলক হবে এবং কেউ আর হস্তক্ষেপ করতে পারবে না ।

অন্যদিকে জামায়াতে ইসলামী বলছে তারা সংসদ নির্বাচনের আগেই এই গণভোটের পক্ষে। জুলাই সনদ জনগণ অনুমোদন করে কি না, এটা নিয়ে হবে গণভোট। এটা হলে জুলাই সনদের শক্তিশালী আইনি ভিত্তি হবে। আগে গণভোট হয়ে যাক, ব্রিফিংয়ে বলেছেন দলটির সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ।

এনসিপি অবশ্য কমিশনের সভায় গণভোটের আগে জুলাই সনদকে একটি আইনি কাঠামোর মধ্যে আনার প্রস্তাব দিয়েছে।

আলী রীয়াজ অবশ্য আশা করেছেন, বুধবারই এ নিয়ে দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য হয়ে যাবে। আর যদি ঐকমত্য না হয় তাহলে তারা একাধিক পদ্ধতির সুপারিশ করবেন বলেও জানিয়েছেন।

সূত্র: বিবিসি

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত