‘শেখ হাসিনা কিছুই না, সে ভারতের দালাল-ভারতের চর’

জেলা প্রতিনিধি, মৌলভীবাজার
প্রকাশ : ০৬ আগস্ট ২০২৫, ২০: ৫৮

বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য সাবেক এমপি এম নাসের রহমান বলেছেন,শেখ হাসিনা কিছুই না, সে ভারতের দালাল-ভারতের চর।

বুধবার (৬ জুলাই) বিকেলে মৌলভীবাজার শহরের এসআর প্লাজার সামনে জেলা বিএনপি আয়োজিত জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের বর্ষপূর্তি ও ছাত্র-জনতার বিজয় উৎসবের শোভাযাত্রা শেষে সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

বিজ্ঞাপন

নাসের রহমান বলেন, এ দেশে আওয়ামী লীগের রাজনীতি আমরা ধীরে ধীরে শেষ করে দিব ইনশাআল্লাহ। কারণ একটা জিনিস মনে রাখতে হবে আওয়ামী লীগ যে একটা গুন্ডা পার্টি, একটা মাস্তান পার্টি। দেশের জনগণ এটা বুঝেছে। কেমন করে বুঝেছে, চৌদ্দশ মানুষ মরার পর আর বিশ হাজার মানুষ আহত হওয়ার পর এ দেশের মানুষ বুঝেছে আওয়ামী লীগ একটা গুণ্ডা-মাস্তান পার্টি। আর তাদের নেত্রী ছিল গুন্ডাদের হেডকোয়ার্টার। ৭৭ বছরের ‘গুণ্ডি’ এখন দিল্লিতে আশ্রয় নিয়েছে। আজকে সে দিল্লিতে কোথাও লুকিয়ে আছে। এই আওয়ামী লীগারদের মুখ দেখাবে কেমন করে। এই আওয়ামী লীগারা আবার তাদের দিকে যখন তাকাবে তখন মুখ দেখাবে কেমন করে? এই আওয়ামী লীগারা তারা যখন গর্ত থেকে বের হবে তখন তাদের চেহারা দেখাবে কি করে।

তিনি বলেন, ‘একটা বছর দেখতে দেখতে এই স্বৈরাচারী হাসিনার এক বছর পলায়নের দিন উদ্‌যাপন করছি আমরা। তার সাড়ে পনেরো বছরের শাসনামলে সবচেয়ে বেশি অত্যাচারিত হয়েছে একটা দল সেটা হচ্ছে- বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। বিএনপিকে নিশ্চিহ্ন করার জন্য এই শেখ হাসিনা কম চেষ্টা করে নাই। আমাদের অসংখ্য নেতাকর্মীদের গুম, খুন করেছে হত্যা করেছে জেলে ভরেছে। আল্লাহর বিচার-আল্লাহ তায়ালা দুনিয়াতে করে দেখিয়েছে তাকে।

তিনি বলেন, ছাত্র- জনতা এবং পেছনে বিএনপির সক্রিয় ভূমিকায় এই স্বৈরাচারীনিকে আমরা বিতাড়িত করতে সক্ষম হয়েছি। আজকে সে পলায়নের পর যে দেশ থেকে আসছিল, সে দেশে তাকে ফেরত পাঠানো হয়েছে। ভারতের দালাল হিসেবে সাড়ে পনেরো বছর এ দেশে রাম রাজত্ব কায়েম করেছিল সে। এ ধরনের রাম রাজত্বের সুযোগ শেখ হাসিনা তো দূরে থাক তার প্রেতাত্মাদেরও কোনোদিন সে সুযোগ দেয়া হবে না।

নাসের রহমান বলেন, ‘আজকে আওয়ামী লীগের মৌলভীবাজারের এই চার খলিফা কোথায়? নিজেরা বসে বসে উপজেলা চেয়ারম্যান, পৌরসভার মেয়র, নিজেরা বসে বসে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান হয়েছে। যে যেমনে চায় নিজে নিজে হতে চায়। কারণ দেশটাতো তাদের বাপের সম্পত্তি মনে করেছিল। দেশটা যে বাপের সম্পত্তি না, জনগণের দেশ এটা বাংলাদেশের জনগণ গতবছর বুঝিয়ে দিয়েছে। আজকের বর্ষ পূর্তিতে স্বৈরাচারীনিকে সরানোর জন্য যে চৌদ্দশ মানুষ যেভাবে মারা গেছে এর মধ্যে ১৩৩ টি শিশুবাচ্চা সহ বিশ থেকে পঁচিশ হাজার লোক আহত হয়েছে। পঙ্গু হয়েছে। তাদের প্রতি আমাদের গভীর শ্রদ্ধা- সমবেদনা ও রুহের মাগফেরাত কামনা করছি। যারা আহত হয়েছেন তাদেরকে আমাদের নেতা তারেক রহমান বিভিন্ন ভাবে সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছেন। ইনশাআল্লাহ, আগামী ফেব্রুয়ারিতে যদি বিএনপি ক্ষমতায় আসে তাহলে তাদের আরো বেশি সহযোগিতা করা হবে।

সংক্ষিপ্ত সমাবেশে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ফয়জুল করিম ময়ূন এর সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব আব্দুর রহিম রিপনের সঞ্চালনায় শোভাযাত্রা পরবর্তী সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, বিএনপি কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মুজিবুর রহমান চৌধুরী, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মিজানুর রহমান মিজান, আব্দুল মুকিতসহ জেলা বিএনপির সিনিয়র নেতারা ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতারা।

আনন্দ শোভাযাত্রার আগে বিকেল তিনটা থেকে মুষলধারে বৃষ্টির মাঝেও শোভাযাত্রায় খন্ড খন্ড মিছিল সহকারে অংশ নিতে জেলার সাতটি উপজেলা ও পাঁচটি পৌরসভা, জেলা যুবদল,ছাত্রদল,স্বেচ্ছাসেবক দল,মহিলাদল,কৃষকদল,শ্রমিকদল,মৎস্য জীবী দলসহ অন্যান্য সহযোগী সংগঠনের বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী তাদের ব্যানার, ফেস্টুনসহ অংশ নেন। শোভাযাত্রার অগ্রভাগে বেশকয়েকটি ভ্যানগাড়ীতে সাজিয়ে নজরকাড়া শোভা পায় বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান, বিএনপি চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, সাবেক অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রী এম সাইফুর রহমান ও এম নাসের রহমানের ছবি সস্বলিত বিশাল বিলবোর্ড। এছাড়াও শোভাযাত্রায় অংশ নেয়া নেতাকর্মীদের দৃষ্টি কাড়ে, জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে শহীদ হওয়া ৬ কোমলমতি শিশু আব্দুল আহাদ, সাফফাত সামির, রিয়া গোপ,জাবির ইব্রাহিম, রাকিব হাসান ও হোসেন মিয়ার ছবিসম্বলিত বিলবোর্ড। আনন্দ শোভাযাত্রাকে ঘিরে হাজার হাজার বিএনপির নেতাকর্মীদের সমাগম ঘটে। যা বিগত দেড় দশকের মধ্যে বিরল।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত