পবিত্র রবিউল আউয়াল উপলক্ষে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের পূর্ব প্রাঙ্গণে এবারও জমে উঠেছে ইসলামিক ফাউন্ডেশন আয়োজিত বইমেলা। নতুন বাংলাদেশে জাতীয় এই বইমেলা এবার হয়ে উঠেছে সাড়ম্বর আন্তর্জাতিক মেলা। মেলায় ১৪০টির মতো প্রকাশনী স্টল বরাদ্দ পেয়েছে। এর মধ্যে চারটি বিদেশি প্রকাশনা সংস্থা। বিদেশি প্রকাশনীগুলোর অংশগ্রহণের কারণেই এই আয়োজনকে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি দেওয়া যায়।
ইতিহাস খুব বেশি দিনের নয়, তবু গল্পময়। নব্বইয়ের শেষদিকে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের তত্ত্বাবধানে ইসলামি লেখক-প্রকাশকের হাত ধরেই এর প্রথম আয়োজন। ছোট আকারের সেই মেলাই ছিল সূচনা। কাগজের মাতাল করা ঘ্রাণ, কয়েকটি স্টল, হাতে গোনা পাঠকÑসেখান থেকেই যাত্রা। পরে একে একে যুক্ত হয় নতুন প্রজন্মের প্রকাশনা। জাতীয় মসজিদের পূর্ব প্রাঙ্গণে তা বড় হয়ে ওঠে। প্রতিবছরই যোগ হয় নতুন স্বপ্ন।
এবারের মেলা অন্য বছরের চেয়ে আলাদা। পূর্ব গেট থেকে দৈনিক বাংলার মোড় পর্যন্ত মেলা সম্প্রসারিত। শিশু চত্বর, নারী কর্নার, লেখক কর্নার, ফুড কর্নার, লিটলম্যাগ কর্নারÑসবই নতুন সংযোজন। লিটলম্যাগ কর্নারে কওমিপড়ুয়া তরুণদের সম্পাদিত সত্তরটিরও বেশি ছোট পত্রিকার প্রদর্শনী ও বিক্রয়। নাশিদ আড্ডায় মুখর তরুণরা।
নতুন বইয়ের গন্ধে ভরে আছে মেলা চত্বর। পাঠক ঘুরে বেড়াচ্ছেন এক স্টল থেকে আরেক স্টলে। খুঁজছেন তালিকায় থাকা প্রিয় বই। লেখক-প্রকাশকরা মেলাকে ঘিরেই এনেছেন নতুন নতুন গ্রন্থ। আগে এমন জমজমাট দৃশ্য দেখা যেত না।
পাঠকের আগ্রহ এবার জীবনী, ইতিহাস ও গল্প-উপন্যাসে। নবীজি (সা.)-এর জীবনীভিত্তিক বেশ কিছু নতুন বই এসেছে। মুহাম্মদ যাইনুল আবিদীনের ‘আমাদের নবীজি’, আবদুল্লাহ তামিমের ‘নবীজির প্রিয় ১০০’, তরুণ অনুবাদক হুসাইন আহমাদ খানের ‘সিরাতে রাসুলে কারিম’Ñসবই দৃষ্টি কাড়ছে পাঠকের।
এছাড়া পাঠক মুগ্ধ হয়ে দেখছেন আলেম-সাংবাদিক জহির উদ্দীন বাবরের ‘ইবনে বতুতার স্মৃতির খোঁজে’, আমিরুল ইসলাম ফুয়াদের ‘বর্গি এলো দেশে’, নাঈমুল হাসান তানজিমের ‘জুলাই বিপ্লব ও অন্যান্য গল্প’।
প্রিয় পড়ুয়া, বই কিনুন বা না কিনুন-মেলায় আসুন। বন্ধুদের সঙ্গে ঘুরুন। পছন্দের বই নেড়েচেড়ে দেখুন। ছড়িয়ে দিন বায়তুল মোকাররমের পূর্ব গেটে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের আয়োজিত এই আন্তর্জাতিক ইসলামি বইমেলার কথা। এ মেলা শুধু বইয়ের নয়, ইসলামি সংস্কৃতির ধারাবাহিকতারও গল্প।

