মাইফুল জামান ঝুমু
বর্তমানে আমাদের সমাজে সবচেয়ে প্রচলিত একটি অনুশীলন হচ্ছে কাউকে নিয়ে উপহাস করা কিংবা কথায় কথায় গালি দেওয়া। কাউকে নিয়ে ট্রল করা, কথায় কথায় গালি বা স্ল্যাং দেওয়া যেন এখনকার ট্রেন্ড হয়ে দাঁড়িয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম আর আধুনিকতার ছোঁয়ায় এসব শব্দ এখন এতটাই ছড়িয়ে পড়েছে, প্রাপ্তবয়স্ক থেকে শুরু করে নাবালক শিশুদের মুখেও এখন গালি বা স্ল্যাং একটা স্বাভাবিক বুলি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
আজকাল কাউকে নিয়ে ট্রল না করা কিংবা কথায় কথায় গালি না জানা লোকদের তো স্মার্ট হিসেবেই ধরা হয় না। আবার মেসেঞ্জার গ্রুপে তথাকথিত নিকনেম দেওয়ার নামে একে অন্যের গর্হিত নামগুলো এমনভাবে উপস্থাপন করা হচ্ছে, এগুলোই এখন আধুনিকতার অংশ হিসেবে ধরা হচ্ছে। অথচ ইসলাম কাউকে গালি কিংবা উপহাস না করতে মুমিনদের নির্দেশ দিয়েছে।
গালি আর উপহাস নিয়ে আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘হে মুমিনরা! কোনো পুরুষ যেন অন্য পুরুষকে উপহাস না করে। কেননা, হতে পারে যাকে উপহাস করা হচ্ছে, সে উপহাসকারী অপেক্ষা উত্তম। আর কোনো নারীও যেন অন্য কোনো নারীকে উপহাস না করে। কেননা যাকে উপহাস করা হচ্ছে, সে উপহাসকারিণী অপেক্ষা উত্তম হতে পারে।
তোমরা একে অন্যের প্রতি দোষারোপ করবে না এবং একে অন্যকে মন্দনামে ডাকবে না। আল্লাহর ওপর ঈমান আনার পর কাউকে মন্দনামে ডাকা গর্হিত কাজ। যারা এ ধরনের আচরণ থেকে নিবৃত্ত না হয়, তারাই জালিম।’ (সুরা হুজুরাত : ১১)
আমরা আমাদের প্রতিদিনের আড্ডায় হাসির ছলে জেনে-না জেনে বন্ধুদের কত গর্হিত নামে ডাকি। অথচ পবিত্র কোরআনে এ ধরনের আচরণের মানুষকে আল্লাহতায়ালা জালিম হিসেবে ঘোষণা দিয়েছেন। একজন মুসলমান কখনো অন্যকে অশ্লীল ভাষায় গালি দিতে পারে না। কিন্তু যুগের পরিবর্তে এখন পিতৃতুল্য বয়োজ্যেষ্ঠরাও বাদ পড়ছেন না আমাদের প্রতিদিনকার ব্যবহৃত গালি থেকে।
এ ব্যাপারে রাসুল (সা.)-এর একটি হাদিস রয়েছে। তিনি বলেছেন, ‘কবিরা গুনাহগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড় হলো নিজের বাবা-মাকে লানত করা।’ জিজ্ঞেস করা হলো, ‘হে আল্লাহর রাসুল (সা.)! আপন বাবা-মাকে কোনো লোক কীভাবে লানত করতে পারে?’ জবাবে তিনি বলেন, ‘সে অন্যের বাবাকে গালি দেয়, তখন সে তার নিজের বাবাকে গালি দেয়। সে অন্যের মাকে গালি দেয়, তখন সে তার মাকে গালি দেয়।’ (বোখারি : ৫৯৭৩)
এ কারণে কোনো মুসলিমকে কোনো কারণে গালি দেওয়া ঠিক না। পবিত্র কোরআনে উল্লেখ আছে, ‘যারা মুমিন পুরুষ ও মহিলাদের কোনো অপরাধ ছাড়াই কষ্ট দেয়, তারা অপবাদ ও সুস্পষ্ট গোনাহর বোঝা বহন করে।’ (সুরা আহজাব : ৫৮)
কিন্তু বর্তমানে বাংলাদেশের সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে এমন বিশৃঙ্খলা দেখা দিয়েছে, এসব পরিস্থিতি দেখে আমরা কেউ নিজেদের ভাষাকে সংযত করতে পারি না। বিশেষ করে যুবকদের মধ্যে এই স্ল্যাংয়ের প্রবণতাটা অনেক বেশি দেখা যায়। এমনকি তারা যেকোনো অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে গিয়েও গালমন্দকে তাদের হাতিয়ার বানিয়ে ফেলে। শান্তির ধর্ম ইসলামে নবীজি (সা.) শত্রুকেও গালমন্দ করতে নিষেধ করেছেন। ‘নবীজি (সা.)-এর প্রতিটি মুহূর্ত কেটেছে আবু জাহেলের জুলুম-নির্যাতন আর উৎকণ্ঠায়।
আবু জাহেলের ছেলে ইকরামাও নবীজি (সা.)-এর বিরুদ্ধে শত্রুতায় কোনো অংশে কম ছিল না। মক্কা বিজয়ের শুরুতে ইকরামা পালিয়ে যায়। নবী (সা.)-এর সাধারণ ক্ষমার ঘোষণায় আশার আলো দেখে ইকরামার স্ত্রী। সে নবীজি (সা.)-এর কাছে ইকরামার নিরাপত্তা প্রার্থনা করেন। রহমতের নবী তার জীবনের নিরাপত্তা দেন।
এবার ইকরামার স্ত্রী তার স্বামীকে খুঁজতে গিয়ে সমুদ্র নৌযানে তাকে পেয়ে যায়। নবীজির নিরাপত্তার অভয়বাণী শুনিয়ে তাকে মক্কায় ফেরত আনেন। নবীজি (সা.) ইকরামাকে আসতে দেখে সাহাবিদের বলে দিলেন, ‘ইকরামা ইবনে আবু জাহেল তোমাদের কাছে আসছে। অতএব, তোমরা তার বাবাকে গালি দিয়ো না। কেননা মৃতদের গালি দেওয়া জীবিতদের কষ্ট দেয়। অথচ মৃত ব্যক্তি পর্যন্ত তা পৌঁছায় না।’
ইসলাম যেখানে একজন কাফেরকে কিংবা শাস্তিপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে গালি দিতে নিষেধ করেছে, সেখানে আমরা দিনের পর দিন এক মুসলমান অন্য মুসলমানকে ঠাট্টার ছলেও গালি দিয়ে বেড়াচ্ছি। প্রতিপক্ষকে কুপোকাত করতে আমরা মরিয়া হয়ে যাই। অথচ পবিত্র কোরআনে স্পষ্ট বলা আছে, ‘রহমানের বান্দা তারাই যারা পৃথিবীতে নম্রভাবে চলাফেরা করে আর যখন মূর্খরা তাদের (অশালীন ভাষায়) সম্বোধন করতে আসে, তখন তাদের বলে সালাম।’ (সুরা ফুরকান : ৬৩)
লেখক : শিক্ষার্থী, ফ্রেঞ্চ ল্যাঙ্গুয়েজ অ্যান্ড কালচার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
বর্তমানে আমাদের সমাজে সবচেয়ে প্রচলিত একটি অনুশীলন হচ্ছে কাউকে নিয়ে উপহাস করা কিংবা কথায় কথায় গালি দেওয়া। কাউকে নিয়ে ট্রল করা, কথায় কথায় গালি বা স্ল্যাং দেওয়া যেন এখনকার ট্রেন্ড হয়ে দাঁড়িয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম আর আধুনিকতার ছোঁয়ায় এসব শব্দ এখন এতটাই ছড়িয়ে পড়েছে, প্রাপ্তবয়স্ক থেকে শুরু করে নাবালক শিশুদের মুখেও এখন গালি বা স্ল্যাং একটা স্বাভাবিক বুলি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
আজকাল কাউকে নিয়ে ট্রল না করা কিংবা কথায় কথায় গালি না জানা লোকদের তো স্মার্ট হিসেবেই ধরা হয় না। আবার মেসেঞ্জার গ্রুপে তথাকথিত নিকনেম দেওয়ার নামে একে অন্যের গর্হিত নামগুলো এমনভাবে উপস্থাপন করা হচ্ছে, এগুলোই এখন আধুনিকতার অংশ হিসেবে ধরা হচ্ছে। অথচ ইসলাম কাউকে গালি কিংবা উপহাস না করতে মুমিনদের নির্দেশ দিয়েছে।
গালি আর উপহাস নিয়ে আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘হে মুমিনরা! কোনো পুরুষ যেন অন্য পুরুষকে উপহাস না করে। কেননা, হতে পারে যাকে উপহাস করা হচ্ছে, সে উপহাসকারী অপেক্ষা উত্তম। আর কোনো নারীও যেন অন্য কোনো নারীকে উপহাস না করে। কেননা যাকে উপহাস করা হচ্ছে, সে উপহাসকারিণী অপেক্ষা উত্তম হতে পারে।
তোমরা একে অন্যের প্রতি দোষারোপ করবে না এবং একে অন্যকে মন্দনামে ডাকবে না। আল্লাহর ওপর ঈমান আনার পর কাউকে মন্দনামে ডাকা গর্হিত কাজ। যারা এ ধরনের আচরণ থেকে নিবৃত্ত না হয়, তারাই জালিম।’ (সুরা হুজুরাত : ১১)
আমরা আমাদের প্রতিদিনের আড্ডায় হাসির ছলে জেনে-না জেনে বন্ধুদের কত গর্হিত নামে ডাকি। অথচ পবিত্র কোরআনে এ ধরনের আচরণের মানুষকে আল্লাহতায়ালা জালিম হিসেবে ঘোষণা দিয়েছেন। একজন মুসলমান কখনো অন্যকে অশ্লীল ভাষায় গালি দিতে পারে না। কিন্তু যুগের পরিবর্তে এখন পিতৃতুল্য বয়োজ্যেষ্ঠরাও বাদ পড়ছেন না আমাদের প্রতিদিনকার ব্যবহৃত গালি থেকে।
এ ব্যাপারে রাসুল (সা.)-এর একটি হাদিস রয়েছে। তিনি বলেছেন, ‘কবিরা গুনাহগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড় হলো নিজের বাবা-মাকে লানত করা।’ জিজ্ঞেস করা হলো, ‘হে আল্লাহর রাসুল (সা.)! আপন বাবা-মাকে কোনো লোক কীভাবে লানত করতে পারে?’ জবাবে তিনি বলেন, ‘সে অন্যের বাবাকে গালি দেয়, তখন সে তার নিজের বাবাকে গালি দেয়। সে অন্যের মাকে গালি দেয়, তখন সে তার মাকে গালি দেয়।’ (বোখারি : ৫৯৭৩)
এ কারণে কোনো মুসলিমকে কোনো কারণে গালি দেওয়া ঠিক না। পবিত্র কোরআনে উল্লেখ আছে, ‘যারা মুমিন পুরুষ ও মহিলাদের কোনো অপরাধ ছাড়াই কষ্ট দেয়, তারা অপবাদ ও সুস্পষ্ট গোনাহর বোঝা বহন করে।’ (সুরা আহজাব : ৫৮)
কিন্তু বর্তমানে বাংলাদেশের সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে এমন বিশৃঙ্খলা দেখা দিয়েছে, এসব পরিস্থিতি দেখে আমরা কেউ নিজেদের ভাষাকে সংযত করতে পারি না। বিশেষ করে যুবকদের মধ্যে এই স্ল্যাংয়ের প্রবণতাটা অনেক বেশি দেখা যায়। এমনকি তারা যেকোনো অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে গিয়েও গালমন্দকে তাদের হাতিয়ার বানিয়ে ফেলে। শান্তির ধর্ম ইসলামে নবীজি (সা.) শত্রুকেও গালমন্দ করতে নিষেধ করেছেন। ‘নবীজি (সা.)-এর প্রতিটি মুহূর্ত কেটেছে আবু জাহেলের জুলুম-নির্যাতন আর উৎকণ্ঠায়।
আবু জাহেলের ছেলে ইকরামাও নবীজি (সা.)-এর বিরুদ্ধে শত্রুতায় কোনো অংশে কম ছিল না। মক্কা বিজয়ের শুরুতে ইকরামা পালিয়ে যায়। নবী (সা.)-এর সাধারণ ক্ষমার ঘোষণায় আশার আলো দেখে ইকরামার স্ত্রী। সে নবীজি (সা.)-এর কাছে ইকরামার নিরাপত্তা প্রার্থনা করেন। রহমতের নবী তার জীবনের নিরাপত্তা দেন।
এবার ইকরামার স্ত্রী তার স্বামীকে খুঁজতে গিয়ে সমুদ্র নৌযানে তাকে পেয়ে যায়। নবীজির নিরাপত্তার অভয়বাণী শুনিয়ে তাকে মক্কায় ফেরত আনেন। নবীজি (সা.) ইকরামাকে আসতে দেখে সাহাবিদের বলে দিলেন, ‘ইকরামা ইবনে আবু জাহেল তোমাদের কাছে আসছে। অতএব, তোমরা তার বাবাকে গালি দিয়ো না। কেননা মৃতদের গালি দেওয়া জীবিতদের কষ্ট দেয়। অথচ মৃত ব্যক্তি পর্যন্ত তা পৌঁছায় না।’
ইসলাম যেখানে একজন কাফেরকে কিংবা শাস্তিপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে গালি দিতে নিষেধ করেছে, সেখানে আমরা দিনের পর দিন এক মুসলমান অন্য মুসলমানকে ঠাট্টার ছলেও গালি দিয়ে বেড়াচ্ছি। প্রতিপক্ষকে কুপোকাত করতে আমরা মরিয়া হয়ে যাই। অথচ পবিত্র কোরআনে স্পষ্ট বলা আছে, ‘রহমানের বান্দা তারাই যারা পৃথিবীতে নম্রভাবে চলাফেরা করে আর যখন মূর্খরা তাদের (অশালীন ভাষায়) সম্বোধন করতে আসে, তখন তাদের বলে সালাম।’ (সুরা ফুরকান : ৬৩)
লেখক : শিক্ষার্থী, ফ্রেঞ্চ ল্যাঙ্গুয়েজ অ্যান্ড কালচার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
মক্কার মসজিদুল হারামের অন্যতম পবিত্র স্থান হাতিম। কাবার মূল কাঠামোর অংশ হিসেবে বিবেচিত এ স্থানটি মুসল্লিদের জন্য অত্যন্ত সম্মানিত ও নামাজ আদায়ের আকাঙ্ক্ষিত জায়গা। এখানে শৃঙ্খলাপূর্ণ উপায়ে ইবাদত নিশ্চিত করতে পুরুষ ও নারী উভয়ের জন্য আলাদা সময় নির্ধারণ করেছে কর্তৃপক্ষ।
১ দিন আগেখাদ্যগ্রহণ যেমন ক্ষুধা মেটানোর জন্য অপরিহার্য, প্রাত্যহিক জীবনের অংশ হিসেবে খাদ্যগ্রহণের ক্ষেত্রে উত্তম সংস্কৃতি ও শিষ্টাচার অনুসরণ করাও গুরুত্বপূর্ণ। মানুষ যা খায়, যেভাবে খায়—তা তার চরিত্র, নীতি ও রুচির পরিচয় বহন করে। তাই ইসলাম আমাদের খাওয়ার উত্তম সংস্কৃতি ও শিষ্টাচার শিখিয়েছে।
২ দিন আগেসম্প্রতি ইসলামি আলোচক আমীর হামজা আল্লাহর রাসুল (সা.)–কে ‘সাংবাদিক’ বলেছেন। তিনি যুক্তি দিয়েছেন, যেহেতু নবী (সা.) ছিলেন আল্লাহর বার্তাবাহক, তাই রূপক অর্থে তাঁকে সাংবাদিক বলা যেতে পারে। কিন্তু বাস্তবে এই তুলনা ইসলামি দৃষ্টিকোণ থেকে বিভ্রান্তিকর এবং রাসুলের মর্যাদার পরিপন্থী।
৬ দিন আগেআমাদের সমাজে বেশ পরিচিত দুটি শব্দ হলো অলি-আওলিয়া। বাঙালি মুসলমান সমাজে সাধারণত মুসলমানদের একটি বিশেষ শ্রেণিকে অলি-আওলিয়া মনে করা হয়। অলি-আওলিয়াদের বিশেষ মর্যাদা ও ক্ষমতা আছে এমন বিশ্বাসও সাধারণ মুসলমানদের রয়েছে।
৬ দিন আগে