২০২৬ বিশ্বকাপ কড়া নাড়ছে দরজায়। আর মাস ছয়েক বাকি। এরই মধ্যে নিশ্চিত হয়ে গেছে দলগুলোর প্রতিপক্ষ এবং মাঠের লড়াইয়ের সময়সূচি। কেউ পড়েছে সহজ গ্রুপে, কেউ মুখোমুখি হতে যাচ্ছে কঠিন পরীক্ষার, কারো সামনে অনিশ্চিতের দোলাচলও আছে। সব মিলিয়ে কেমন হলো বিশ্বকাপের ১২টি গ্রুপ? এই প্রশ্নের উত্তর মেলাতে আমার দেশ-এর ধারাবাহিক পর্বে আজ থাকছে গ্রুপ ‘আই’, যেখানে আছে ফ্রান্স, সেনেগাল, নরওয়ে ও ফিফা প্লে-অফ ২ জয়ী দল—ইরাক, বলিভিয়া অথবা সুরিনামের যেকোনো এক দল।
বিশ্বকাপের ড্র অনুষ্ঠান থেকেই ‘আই’ গ্রুপকে নিয়ে আলোচনা শুরু। এর কারণ সময়ের সেরা দুই তারকা ফ্রান্সের কিলিয়ান এমবাপ্পে ও নরওয়ের আর্লিং হালান্ড। দুই তারকার মুখোমুখি লড়াই দেখতে মুখিয়ে দুই দেশের ভক্ত সমর্থক থেকে শুরু করে ফুটবল সমর্থকরা। অন্যদিকে, এই গ্রুপ থেকে শুধু ফ্রান্স ও নরওয়ের দিকে চোখ রাখলে সেটা হবে ভুল। কেননা, গেল বিশ্বকাপে চমক দেখিয়েছে আফ্রিকার দেশ সেনেগাল। শেষ ষোলোর টিকিট কেটেছিল তারা। যদিও ইংল্যান্ডের কাছে হেরে কোয়ার্টার ফাইনালে খেলা হয়নি তাদের। এবারের আসরেও ‘আফ্রিকার সিংহ’দের হিসেবে ধরতে হচ্ছে।
‘আই’ গ্রুপের দলগুলোর মধ্যে সবার চেয়ে যোজন যোজন এগিয়ে ফ্রান্স। ২০২২ বিশ্বকাপের ফাইনালিস্ট তারা। এর আগে ২০১৮ বিশ্বকাপে শিরোপা উঁচিয়ে ধরেছিল কিলিয়ান এমবাপ্পের দল। এবারও হট ফেভারিট হয়েই মাঠে নামবে বর্তমানে র্যাংকিংয়ের তিনে থাকা ফ্রান্স। দলের বড় তারকা কিলিয়ান এমবাপ্পে। এছাড়া উসমান দেম্বেলে, র্যান্ডাল কোলো মুয়ানি, মাইকেল ওলিসে, এদুয়ার্ড কামাভিঙ্গাদের নিয়ে দুর্দান্ত দল তারা। বাছাইয়ে ৬ ম্যাচে ৫ জয়ের সঙ্গে ১ ড্র নিয়ে শীর্ষ দল হিসেবেই বিশ্বকাপের টিকিট নিশ্চিত করেছে এমবাপ্পের দল।
ফ্রান্সের কঠিন প্রতিপক্ষ হতে পারে নরওয়ে। ইউরোপিয়ান অঞ্চলের বাছাইয়ে গ্রুপের শীর্ষ দল হিসেবে টিকিট কাটা নরওয়ে ২৮ বছর পর পা রেখেছে বিশ্বকাপে। সবশেষ খেলেছিল ১৯৯৮ সালে। ৮ ম্যাচের সবকটি জিতে পূর্ণ ২৪ পয়েন্ট নিয়েই কানাডা, মেক্সিকো ও যুক্তরাষ্ট্রে যাচ্ছে তারা। নরওয়েকে বিশ্বকাপে তোলার নায়ক হালান্ড। ৮ ম্যাচে সব মিলিয়ে ৩৭টি গোল করেছে নরওয়ে, এর মধ্যে হালান্ডের ১৬টি। দল আরো আছেন আলেক্সান্ডার সরলথ, লার্সেনের মতো খেলোয়াড়। হালান্ডের দল ইতালির মতো দলকে পেছনে ফেলে বিশ্বকাপের টিকিট নিশ্চিত করেছে সুতরাং মূল মঞ্চেও তাদের সমীহ করতেই হবে।
সেনেগাল আফ্রিকা অঞ্চল থেকে ১০ ম্যাচে ২৪ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষ দল হিসেবেই টিকিট কেটেছে। লড়াকু আর অদম্য মানসিকতার জন্য সেনেগালের পরিচিতি আছে। যা গেল আসরে দেখা গেছে। এবারও তারা প্রস্তুত। দলটির সেরা তারকা সাদিও মানে। সৌদি প্রো লিগে রোনালদোর সঙ্গে একদলে খেলা এই ফরোয়ার্ড খেলেছেন লিভারপুল, বায়ার্নের মতো দলে। এবারও তার দিকেই তাকিয়ে দল। এদিকে, প্লে অফের লড়াই পেরিয়ে ইরাক কিংবা বলিভিয়া এলেও তারাও ঘটিয়ে দিতে পারে অঘটন।
‘আই’ গ্রুপের প্রথম ম্যাচে ১৬ জুন মাঠে নামবে ফ্রান্স-সেনেগাল। পরের দিন মুখোমুখি হবে নরওয়ে ও ফিফা প্লে অফ টূতে বিজয়ী দল। ২২ জুন মাঠে নামবে ফ্রান্স ও ফিফা প্লে অফ টুতে বিজয়ী দল। ২৩ জুন লড়বে নরওয়ে-সেনেগাল। ২৬ জুন একই সঙ্গে মাঠে নামবে নরওয়ে-ফ্রান্স ও সেনেগাল বনাম ফিফা প্লে অফ টুতে বিজয়ী দল।

