আমার দেশ জনপ্রিয় বাংলা নিউজ পেপার

টি-টোয়েন্টি ব্যাটিং পারে না এই দল

স্পোর্টস রিপোর্টার

টি-টোয়েন্টি ব্যাটিং পারে না এই দল

পাকিস্তানের বিপক্ষে লক্ষ্য ছিল ১২০ বলে ১৩৬; খানিকটা দেখেশুনে ব্যাটিং করলে জয় পাওয়াটা অসম্ভব ছিল না বাংলাদেশের জন্য। তবে সেই পথে হাঁটতে পারেনি বাংলাদেশ। নির্ধারিত ২০ ওভারে ১২৪ রানে থেমেছে লাল-সবুজের প্রতিনিধিদের। ১১ রানের এই হারে ধূলিসাৎ হয়েছে এশিয়া কাপের ফাইনালে খেলার স্বপ্নও। পাকিস্তানের বিপক্ষে ছোট লক্ষ্যে বাংলাদেশি ব্যাটাররা খেলতে চেয়েছেন আক্রমণাত্মক ভঙ্গিমায়। তাতেই কুপোকাত হয়ে ফাইনালের স্বপ্ন মাটিচাপা দিতে হয়েছে জাকের আলী-তাওহিদ হৃদয়দের।

বিজ্ঞাপন


আক্রমণাত্মক ভঙ্গিমায় খেলা শুরু করা বাংলাদেশকে জয়ের জন্য এতটাও আগ্রাসী হওয়ার প্রয়োজন ছিল না। ছোট লক্ষ্যে দেখেশুনে খেলে নিশ্চিত করতে পারত জয়। এই আগ্রাসী খেলার সমালোচনার আগে একাদশ বাছাই নিয়ে তোলা যায় প্রশ্ন। ইনফর্ম ওপেনার তানজিদ তামিমকে বসিয়ে এই দিন রানখরায় ভোগা পারভেজ হোসেন ইমনকে খেলায় বাংলাদেশ টিম ম্যানেজমেন্ট। এছাড়া ছিলেন অফ ফর্মে থাকা তাওহিদ হৃদয়। এবারের এশিয়া কাপের সুপার ফোরে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৫৮ রানের ইনিংস ছাড়া বলার মতো আর কোনো ইনিংস নেই তার।

পাশাপাশি চারে নামানো হয় শেখ মাহেদিকে। জাকের আলী-নুরুল হাসান সোহানরা ছিলেন মিডল অর্ডারে। ব্যাটিং অর্ডারের এমন ছন্নছাড়া পরিস্থিতিও হারের অন্যতম কারণ। হারের জন্য অবশ্য ব্যাটিং অর্ডারকে দায় দিচ্ছেন না কোচ ফিল সিমন্স। তার কথায়, ‘ব্যাটিং অর্ডার বলে না আমি ভালো না খারাপ ব্যাটিং করেছি। আজকে (গত পরশু) আমরা বাজে সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’


পাকিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশ দলের ১২৪ রানের ইনিংসে ছিল ৭ ছক্কা ও ৬ চার। ছোট এই পরিসংখ্যানেই স্পষ্ট বাংলাদেশ দল কতটা আগ্রাসী হয়ে খেলতে চেয়েছিল। যুক্তিটা আরো শক্ত-সামর্থ্য হবে- ব্যাটারদের আউটের ধরন বিশ্লেষণ করলে। শেখ মাহেদি, তাওহিদ হৃদয়, জাকের আলী ও নুরুল হাসান সোহান- অর্থাৎ মিডল অর্ডারের দায়িত্বে থাকা চার ব্যাটারই আউট হয়েছেন বড় শট খেলতে গিয়ে। উইকেটে থিতু হয়ে যেখানে ধীরে-সুস্থে এগোলেই জয় পাওয়া সম্ভব ছিল। এ নিয়ে কোচ ফিল সিমন্স বলেন, ‘সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারেননি ব্যাটাররা। সব দলকেই কোনো না কোনো সময় এমন দিনের মুখোমুখি হতে হয়। আজ (গত পরশু) আমাদের তেমন দিন গেল; আমাদের সিদ্ধান্ত আর শট নির্বাচন ভালো হয়নি।’


পাশাপাশি ছক্কা হাঁকিয়ে ম্যাচ দ্রুত শেষ করার প্রবণতা যে ভুল ছিল সেটা স্বীকার করে কোচ ফিল সিমন্সের ভাষ্য ছিল, ‘আমার মনে হয় না, আমাদের দ্রুত রান করার সামর্থ্য আছে। আমাদের উচিত ছিল জুটি গড়ার দিকে মনোযোগ দেওয়া এবং আরো লম্বা সময় ব্যাটিং করা।’ ব্যাটিং ব্যর্থতা স্বীকার করে নেওয়া ফিল সিমন্স ফিল্ডিংয়ে ক্যাচ মিসের জন্য দাঁড় করিয়েছে অজুহাত। পাকিস্তানের বিপক্ষে গুরুত্বপূর্ণ সময়ে তিন-তিনটি ক্যাচ ফেলেছে বাংলাদেশি ফিল্ডাররা। এ নিয়ে তিনি বলেন, ‘কিছু ক্যাচে লাইট একটা কারণ হতে পারে। আগের ম্যাচগুলোর সঙ্গে লাইটের সম্পর্ক ছিল না মনে হয়। ম্যাচের ব্যাপারে বললে শাহিনের (শাহিন শাহ আফ্রিদি) ক্যাচ ছাড়ার পর সে দুটি ছক্কা মেরেছে। (মোহাম্মদ) নওয়াজের ক্যাচও ড্রপ হয়েছে। ফলে এখানেই ম্যাচ বের হয়ে গেছে। এর আগ পর্যন্ত আমাদের নিয়ন্ত্রণেই ছিল।’


এদিকে এশিয়া কাপের শেষ দুই ম্যাচে অধিনায়কত্ব করা জাকের আলী ছিলেন না ছন্দে। এর মধ্যেই তার ওপরে দেওয়া হয় অধিনায়কত্বের দায়িত্বভার। নেতৃত্বের দায়িত্বভার বাড়তি চাপ হয়েছিল কি না- এই প্রশ্নের জবাবে জাকের আলী বলেন, ‘খানিকটা কঠিন। আমি চেষ্টা করেছি সুযোগগুলো নেওয়ার এবং খেলা আমাদের নিয়ন্ত্রণে রাখার। অধিনায়কত্বের সঙ্গে মানিয়ে নিয়ে উপভোগের চেষ্টা করেছি।’ উপভোগের চেষ্টা করলেও জাকের যে ঠিকঠাক উপভোগ করতে পারেননি তার প্রমাণ- স্কোরবোর্ডে তার রান। এমন পারফরম্যান্সে যেখানে তার দল থেকেই বাদ পড়ার কথা, সেখানে এশিয়া কাপের মতো বড় মঞ্চে অধিনায়কত্ব করেছেন তিনি।

Google News Icon

আমার দেশের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

এলাকার খবর

খুঁজুন