রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে নিয়ে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে তরুণীকে ধর্ষণের অভিযোগে ক্রিকেটার তোফায়েল আহমেদ রায়হানের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দিয়েছে পুলিশ। এতে বিয়ের প্রলোভনে ভুক্তভোগী ওই তরুণীকে রায়হান একাধিবার ধর্ষণের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে।
বৃহস্পতিবার মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও গুলশান থানার উপপরিদর্শক মো. সামিউল ইসলাম এ তথ্য জানান।
পেস বোলিং অলরাউন্ডার রায়হান বাংলাদেশ ‘এ’ দলের খেলোয়াড়। এ বিষয়ে তদন্তকারী কর্মকর্তা বলেন, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯(১) ধারায় আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, ধর্ষণের ঘটনাটি মামলার ছয় মাস আগে হয়েছে বিধায় কোনো আলামত জব্দ করা সম্ভব হয়নি। মামলার বাদী নিজেও কোনো আলামত উপস্থাপন করতে পারেননি। হোটেলে রক্ষিত রেজিস্ট্রার বুকের গেস্ট বুকিং সংক্রান্ত রেজিস্ট্রেশন স্লিপ, তরুণী ও আসামির পাসপোর্ট কপি জব্দ করা হয়। ডিএনএ রিপোর্টে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। সার্বিক তদন্তে প্রথম দিনের ঘটনা, হোটেল বুকিং কপি, ধর্ষণের মেডিকেল রিপোর্টসহ অন্যান্য বিষয় পর্যালোচনায় আসামি তোফায়েলের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রাথমিকভাবে সত্য বলে প্রমাণিত হয়।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী তরুণী বলেন, বিয়ে করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে শারীরিক সম্পর্কে স্থাপন করে। বিষয়টি সমাধানে তার পরিবারের কাছে গিয়েও ফল পায়নি। ঘটনার এক পর্যায় বিসিবি প্রেসিডেন্টকে লিখিত অভিযোগ দিই। তিনি আশ্বাস দিয়েও কথা রাখেননি। এইভাবে প্রতিনিয়ত পদে পদে অনেকভাবে সম্মানহানি হেয় প্রতিপন্ন ও হেনস্তার শিকার হচ্ছি। আমি আদালতে ন্যায় বিচার চাই।
মামলার সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের জানুয়ারিতে আসামি তোফায়েলের সঙ্গে ভুক্তভোগী তরুণীর ফেসবুকে পরিচয় হয়। এরপর থেকে তারা ফেসবুক মেসেঞ্জারে নিজেরা কথা বলতেন। এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক হলে আসামি তোফায়েল ওই তরুণীকে প্রেমের প্রস্তাব দেয়। তবে তরুণী রাজি না হলেও তাকে বিয়ের প্রলোভনে দেখিয়ে প্রেমের প্রস্তাবে রাজি করেন। চলতি বছরের ৩১ জানুয়ারি তাকে স্ত্রী পরিচয়ে গুলশানের একটি হোটেলে নিয়ে ধর্ষণ করেন রায়হান। পরে তাকে একাধিকবার ধর্ষণ করেন সে। এরপর থেকে ওই তরুণী বিয়ের কথা বললে রায়হান বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানান। এ ঘটনায় গত ১ আগস্ট ওই তরুণী বাদী হয়ে গুলশান থানায় ধর্ষণ মামলা করেন। মামলার পর গত ২৪ সেপ্টেম্বর আসামি তোফায়েলকে ছয় সপ্তাহের আগাম জামিন দেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে তাকে এই জামিন শেষ হওয়ার আগেই ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে আত্মসমর্পণ নির্দেশ দেওয়া হয়। তবে আগাম জামিনের মেয়াদ শেষ হলেও তিনি ট্রাইব্যুনালে আত্মসমর্পণ করেননি।

