আমার দেশ জনপ্রিয় বাংলা নিউজ পেপার

ভারতে ভোটার তালিকা সংশোধনে হুমকিতে গণতন্ত্র ও মুসলিমরা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

ভারতে ভোটার তালিকা সংশোধনে হুমকিতে গণতন্ত্র ও মুসলিমরা
ছবি: সংগৃহীত

ভারতে সাম্প্রতিক ভোটার তালিকা সংশোধনের বিতর্কিত পদক্ষেপের ফলে দেশটির গণতন্ত্র হুমকিতে পড়েছে বলে সতর্ক করেছে বিরোধী দল। তাদের মতে, এটি ভারতের সংখ্যালঘুদের ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত করবে এবং ক্ষমতাসীন নরেন্দ্র মোদি সরকারের ক্ষমতাকে আরো শক্তিশালী করবে।

ভারতের ৯টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত তিনটি অঞ্চলের ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন (এসআইআর) নিয়ে গত সপ্তাহে সংসদে অনেক বিতর্ক হয়।

বিজ্ঞাপন

বিজেপি প্রকাশ্যে হিন্দু জাতীয়তাবাদী মতাদর্শ গ্রহণ করে ভারতকে হিন্দু জাতিরাষ্ট্রে রূপান্তর করার চেষ্টা করছে। দলটি ১১ বছর ধরে তাদের নীতি এবং বক্তব্যে ধর্মের ভিত্তিতে দেশকে তীব্রভাবে মেরূকরণ করেছে, যা মুসলিমবিরোধী বৈরিতা তীব্রতর করেছে।

আপাতদৃষ্টিতে এসআইআর ভোটার তালিকা হালনাগাদের প্রচেষ্টা মনে হলেও বিরোধীদলীয় নেতাদের অভিযোগ, এটি বিজেপির একটি সূক্ষ্ম কৌশল। তাদের দাবি, এটি দরিদ্র ও সংখ্যালঘু, বিশেষ করে মুসলিমদের ‘অবৈধ অভিবাসী’ আখ্যা দিয়ে তাদের ভোটাধিকার হরণের কৌশল। এছাড়া এটি মোদি সরকারকে সুবিধা দিতে ভোটার তালিকা নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যবহার করা হচ্ছে।

বিরোধী নেতাদের অভিযোগ, এসআইআরকে গোপন জাতীয় নাগরিক নিবন্ধন (এনআরসি) হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে, যা কয়েক বছর আগে আসাম রাজ্যে ঘটেছিল। সেখানে এনআরসির ফলে লাখ লাখ মুসলিমকে আটক কিংবা নাগরিকত্ব ট্রাইব্যুনালের মুখোমুখি করা হয়েছিল। এছাড়া অনেককে বাংলাদেশে নির্বাসিত করা হয়।

তাদের অভিযোগ, এসআইআরের ফলে পশ্চিমবঙ্গের মতো রাজ্যে মূলত মুসলমানরা ভোটাধিকারবঞ্চিত ও নির্বাসিত হওয়ার হুমকির সম্মুখীন হচ্ছে। অন্যদিকে ভারতে অবৈধভাবে বসবাসকারী বাংলাদেশি হিন্দুরা বলছেন, তাদের নাগরিকত্ব নিশ্চিত করা হচ্ছে।

কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী গত সপ্তাহে সংসদে ভাষণ দেওয়ার সময় অভিযোগ করেন, এসআইআর বিজেপির ভোট চুরি এবং ভারতের গণতান্ত্রিক নির্বাচনের দীর্ঘস্থায়ী ধারাবাহিকতা ধ্বংসে বৃহত্তর পরিকল্পনার অংশ। তার অভিযোগ, নির্বাচন কমিশন বিজেপি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত এবং ‘ক্ষমতায় থাকা ব্যক্তিদের সঙ্গে যোগসাজশ করে নির্বাচন নিয়ন্ত্রণ করছে’।

এদিকে, এসআইআর প্রক্রিয়ায় কোনো অনিয়মের কথা অস্বীকার করে এটিকে ‘অনুপ্রবেশকারীদের’ ভোটার তালিকা ‘পরিষ্কার’ করার প্রশাসনিক প্রচেষ্টা বলে জানিয়েছে বিজেপি। দলটি সাধারণত বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ থেকে আগত মুসলমানদের বোঝাতে ‘অনুপ্রবেশকারী’ শব্দটি ব্যবহার করে।

সংসদে রাহুল গান্ধীর অভিযোগের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেন, বিজেপি ‘শনাক্ত, মুছে ফেলা ও নির্বাসন’ নীতির মাধ্যমে ভারতের গণতন্ত্রকে রক্ষা করছে। তিনি আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী ও মুখ্যমন্ত্রী যখন অবৈধ অভিবাসীদের দ্বারা নির্ধারিত হয়, তখন কি কোনো দেশের গণতন্ত্র নিরাপদ থাকতে পারে?

Google News Icon

আমার দেশের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ

এলাকার খবর

খুঁজুন